অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি - ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার উপায় জেনে নিন
অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আপনি যদি জানতে চান অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা আলোচনা করব অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি এবং ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার উপায় গুলো কি কি।
সাধারণত শীতকালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়াও আরো অন্যান্য কারণে ঠোঁট ফাঁটতে পারে চলুন তাহলে জেনে নেই অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি। চলুন শুরু করা যাক।
ভূমিকা
আমাদের প্রায় সকলেরই শীতকালে ঠোঁট ফাটে। কিন্তু অনেকেরই গরমকালেও ঠোঁট ফাটে। আমরা কি জানি অতিরিক্ত ঠোঁটের ফাটার কারণ কি? বিভিন্ন কারণে ঠোঁট ফাটতে পারে। যেমন পানি শূন্যতা, ঠোঁটের যত্ন না নেওয়া, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া। অনেকেই ঠোঁট ফেটে গেলে জিব্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর চেষ্টা করেন।
কিন্তু সেলাইভা শুকানোর পরে ঠোঁট আরো বেশি ফেটে যায়। উচ্চ রক্তচাপের কারনেও ঠোঁট ফাটতে পারে। এরকম আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর কারণে ঠোঁট ফাটা সমস্যা দেখা দেয়। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি, ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার উপায়।
এছাড়াও আরো আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি ঠোঁটের সকল সমস্যার সমাধান পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি
ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি? কেন ঠোটের চামড়া অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়? এখন আমি আপনাদের সাথে এই সমস্ত বিষয়গুলো আলোচনা করতে চলেছি। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি। শীতকালে সাধারণত আবহাওয়া আদ্র থাকে সেজন্য ঠোঁটের চামড়া শুষ্ক হয়ে যায় এবং ঠোঁট ফেটে যায়।
কিন্তু শীতকাল ছাড়াও অনেকের ঠোঁট ফেটে থাকে। আমরা অনেকেই ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন রকম লিপবাম ব্যবহার করে থাকি। অনেক সময় এই লিপবাম উপকারের বদলে ক্ষতি করে বেশি। লিপবাম ছাড়াও অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি চলুন সেগুলো জেনে নেই।
লিপবাম: আপনি যদি আমাকে অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি জিজ্ঞেস করেন তাহলে আমি প্রথমেই বলব ঠোঁটফাটা প্রতিরোধ করার জন্য যে সকল প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের লিপবাম। লিপবাম এ বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যেমন ফেনোল, থ্যালেটস, সুগন্ধ এবং লানলিন। এগুলো ঠোঁটের জন্য মোটেই উপকারী নয়।
এগুলো ঠোটের আদ্রতার বদলে শুষ্কতা নিয়ে আসে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দের মতে লিপবাম এ হিউম্যাটার্নস নামক একটি উপাদান থাকে যা ঠোঁটে লাগানোর সাথে সাথে আদ্রতা নিয়ে আসে কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবার ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।হাইলোরনিক এসিড এবং গ্লিসারিন ঠোঁটের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
কিন্তু পেট্রোলিয়াম, শিয়া বাসার, নারিকেল তেল, স্কোয়েলিন এই ধরনের আদ্রতা আটকে রাখা উপাদান যদি লিপবামে না থাকে তাহলে ঠোঁট তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায়। সেজন্য বারবার ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। তাই লিপবাম কেনার সময় অবশ্যই এর উপাদানের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি কোন লিপবাম বার বার ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে তা ব্যবহার না করাই ভালো।
পানি শূন্যতা: ত্বকের শুষ্কতার সাথে ঠোঁট ফাটার কোন সম্পর্ক নেই। ঠোঁট ফাটার অন্যতম কারণ হিসেবে আমরা শরীরে পানির অভাবের কথা বলতে পারি। শরীরে যদি পানি শূন্যতা দেখা দেয় তাহলে ঠোঁটের চামড়া তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। কিন্তু যত তাড়াতাড়ি চামড়া শুকনো হয়ে যায় তত তাড়াতাড়ি নতুন চামড়া গজাতে পারে না। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে।
পুষ্টির অভাব: পুষ্টির অভাবেও অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটতে পারে। অতএব অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি এর মধ্যে পুষ্টির অভাব ও অন্যতম। কালিফোর্ণিয়ার পুষ্টিবীদ আমানদ্বীপ কালশি এক প্রতিবেদনে বলেন, শক্তির মাত্রা, মস্তিষ্কের ক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দৃষ্টি শক্তি, হজম প্রক্রিয়া, নাড়ির কার্যকলাপ ও হরমোন উৎপাদন, পেশির টানটান ভাব ও হৃদ যন্ত্রের স্বাস্থ্য এসবের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন বি।
ভিটামিন বি এর অভাবে ঠোঁটের চামড়া শুষ্ক হয়ে যায় ফলে অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটে। মানুষের শরীর ভিটামিন বি সব সময় ধরে রাখতে পারেনা। তাই প্রতিদিন ভিটামিন বি যুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
অতিরিক্ত সূর্যের আলো: অতিরিক্ত রোদ যদি ঠোঁটে লাগে তাহলেও ঠোঁট ফাটতে পারে। দেহের অন্যান্য অংশের তুলনায় মুখে একটু বেশি রোদ লাগে। সূর্যের আলোতে যে অতিবেগুনি রশ্মি রয়েছে তা যদি ঠোঁটে লাগে তাহলে ঠোঁটের চামড়া উঠা, রং পরিবর্তন হাওয়া ইত্যাদি নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই তাপমাত্রা যদি ৩০ এর অধিক হয় তাহলে স্পেসিফিক কিছু লিপাম ব্যবহার করা উচিত।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ: যদি ঘুমের মধ্যে লালা ঝরে কিংবা নিচের চোয়াল সামনের দিকে এগিয়ে থাকে তাহলে ঠোঁটে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে জিব্বায় সাদাটে ভাব এবং ঠোঁটের কোনায় ফাটল দেখা দেয়। এ সকল লক্ষণ গুলো যদি দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে
শীতকালে সাধারণত বাতাসের আদ্রতা কম হওয়ার কারণে ঠোঁট ফাটে। ঠোঁটের চামড়া পাতলা হওয়ার কারণের শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে এর উত্তরে জানা যায়, ভিটামিন বি এর অভাবে ঠোঁট ফাটে।
এছাড়াও নানা রকম ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফাটতে পারে যেমন ভিটামিন বি২ ভিটামিন বি৯ ভিটামিন বি১২ ভিটামিন বি৬ ইত্যাদি ভিটামিন গুলোর অভাব হলেও ঠোঁটের শুষ্কতা বেড়ে যায় এবং ঠোঁটের উপরের চামড়া ফাটতে শুরু করে।
গরমে ঠোঁট ফাটা দূর করার উপায়
শীতকালে ঠোঁট ফাটা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু গরমকালে ঠোঁট ফাটা নিয়ে আমরা বেশ চিন্তায় থাকি। আপনারা যদি গরমকালে ঠোঁট ফাটার মতো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে জেনে নিন গরমে ঠোঁট ফাটা দূর করার উপায় সমূহ কি কি।
শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে সেজন্য ঠোঁট ফাটে এবং আদ্রতা হারিয়ে ফেলে। গরমকালে সূর্যের তাপ ঠোঁটে লাগলেও তা ফেটে যেতে পারে। আবার শরীরে যদি পানির ঘাটতি পড়ে তাহলে একই সমস্যা দেখা দেয়। চলুন জেনে নেই গরমে ঠোঁট ফাটা দূর করার উপায় গুলো-
লিপবাম এর ব্যবহার: সূর্যের অতিবেগুনি রশির হাত থেকে বাঁচতে বাইরে বেরোনোর সময় ঠোঁটে লিপবাম লাগিয়ে বের হওয়া উচিত। আদ্রতা বজায় রাখার উপাদান আছে এমন লিপবাম কিনুন এগুলো ঠোঁটকে নরম রাখতে সহায়তা করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া: ঠোটের আদ্রতা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। গরমে শরীর ঘামতে থাকে এবং শরীরের পানি বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে পড়ে এবং ঠোঁট ফাটার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই গরমে ঠোঁট ফাটা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
ঠোট চাটা পরিহার: আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই বদ অভ্যাস রয়েছে যে ঠোঁট শুকিয়ে গেলে আমরা জিব্বা দিয়ে ঠোঁট চাটি। এতে করে ঠোঁট বেশি ফেটে যায় ঠোঁট শুকিয়ে গেলে ঠোঁট না চেটে ঠোঁটে লিপবাম ব্যবহার করুন।
টুপি বা ছাতা ব্যবহার করুন: গরমের দিনে বাইরে প্রচুর রোদ থাকে। তাই বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই সঙ্গে ছাতা অথবা টুপি রাখা উচিত। এতে করে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি মুখে পড়বে না এবং ক্ষতি কম হবে।
কিছু খাবার পরিহার করুন: অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং টক জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার: গরমের সময় আমরা অনেকেই এসির বাতাসে থাকতে পছন্দ করি। কিন্তু এই বাতাস এ আদ্রতা কম থাকে সেজন্য ঠোঁট মুখ টানটান হয়ে যায় এবং ঠোঁট ফাটে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে হিউমিডিফায়ার যন্ত্র ব্যবহার করুন। এটা বাতাসের আদ্রতা ঠিক রাখে এবং ঠোঁট ফাটা রোধ করে।
ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায়
কালো ঠোঁটের সমস্যায় আমরা প্রায় সকলেই ভুগি। এজন্য হরহামেশা নানারকম রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত নানারকম লিপজেল বা ক্যামিকেল এর ব্যবহার করেও এর সমাধান মিলেনা। আজকে আমরা ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় গুলো কি কি।
প্রতিদিনের ধূলা-ময়লা, যানবাহনের ধোঁয়া এবং ঠোঁটে জমে থাকা ময়লা থেকেই আস্তে আস্তে ঠোঁট কালো হতে থাকে। অনেকে রোজ বাইরে যাওয়ার সময় ঠোটে লিপিস্টিক ব্যবহার করে থাকেন। লিপিস্টিক এ থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণেই ঠোট আস্তে আস্তে কালো হতে থাকে। তবে ঘরে থাকা কিছু উপাদান দিয়েই আমরা এই ঠোঁটের কালো দাগ দূর করতে পারি। চলুন জেনে নেই ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় গুলো-
অ্যাপেলসিড এর ভিনেগার: একটি কটন বলে অ্যাপেলসিড এর ভিনেগার কিছুক্ষণ ভিজিয়ে তারপর ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনি দিনে দুই থেকে তিনবার লাগাতে পারেন। এটি ঠোঁটের কাল ভাব দূর করে ঠোঁটকে করে তোলে গোলাপি এবং ঠোঁটের নানা রকম সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
লেবু ও মধুর মিশ্রণ: কয়েক ফোটা লেবুর রস এবং অল্প একটু মধু একসাথে মিশিয়ে ঠোঁটে ভালোভাবে লাগান। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপরে ধুয়ে ফেলুন।এটি দিনে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।
বিটরুট: এক টুকরো বিটরুট কেটে কয়েক মিনিটের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজ থেকে বের করে বিটরুটের টুকরোটি আস্তে আস্তে ঠোঁটে ঘোসুন। এর রস পাঁচ মিনিট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়ম করে প্রতিদিন ঠোঁটে লাগান খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাবেন।
চিনি ও মাখন: চিনি এবং মাখন একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিয়ে তা সপ্তাহে দু একদিন ঠোঁটে স্ক্রাব করে লাগালে ভালো ভালো ফল পাওয়া যায়।
বরফ: যে কোন দাগের উপর বরফ ঘষলে সে দাগ অনেকটা হালকা হয়ে যায়। এ বরফের গুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। ঠোঁটের কালো ভাব দূর করার জন্য ঠোঁটে প্রতিদিন বরফ ঘষতে পা্রেন।
দুধের স্বর: দুধের সর এবং মধু একসাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ঠোঁটে লাগাতে পারেন। এতে আপনার ঠোঁটের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে পারেন।
অনেক সময় সকল ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করার ফলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তবে যত যায় কিছুই করা হোক না কেন এটা মাথায় রাখতে হবে যে, কোন কিছুতেই রাতারাতি ফলাফল পাওয়া যায় না। সবকিছুতেই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়।
ঠোঁট ফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায়
শীতকাল শুরু হলেই ঠোঁট ফাটা শুরু। এটি শুধু সৌন্দর্য নষ্ট করে না বরং আমাদের একটি অস্বস্তিকর অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেয়। তাই ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করা অত্যন্ত জরুরি। ঠোট ফাটা কমাতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি। কারণ ঠোঁট ফাটার কারণগুলো যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে আমরা খুব সহজেই জেনে নিতে পারবো।
এলোভেরাঃ এলোভেরার রস ঠোঁটে লাগালে শুষ্ক ঠোঁট খুব সহজেই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এলোভেরাতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ঠোঁটের মরা কোষ কে দূর করে ত্বকে ঠান্ডা ভাব বজায় রাখে। এলোভেরার পাতার ভিতরে থাকা জেল বের করে রাতে ঘুমানোর আগে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।
মধু: মধুতে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন এবং ভেসলিন ত্বক কোমল রাখতে সাহায্য করে। তাই মধু এবং ভেসলিন একসাথে মিলিয়ে ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা সমাধান হয়। এই দুটি উপাদানই প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। মধু এবং ভেসলিন একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে তা ঠোঁটে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। টিস্যু বা পাতলা কাপড় দিয়ে তা তুলতে হবে। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একবার করে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
নারিকেল তেল: প্রাচীনকাল থেকে ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে নারিকেল তেল ব্যবহার হয়ে আসছে। নারিকেল তেলে থাকা ফ্যাটি এসিড ঠোঁটে শুষ্কতা দূর করে। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল এগুলো প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। নারিকেল তেলের সাথে এগুলো সাথে যোগ করা যায়।
ঘি: ঘি সবচেয়ে সহজ এবং কম সময়ে ফাটা রোধ করে। প্রতিদিন চার ঘন্টা পর পর ঠোঁটে ঘি ব্যবহার করে দেখুন। অবিশ্বাস্য ফলাফল মিলবে। ঘি তে রয়েছে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে। যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।
চিনি: মধু এবং চিনি একসাথে মিশিয়ে লেবুর খোসার সাহায্যে স্ক্রাব করলে ঠোঁটের মরা চামড়া উঠে যায় এবং ঠোঁট ফাটা কমে।
শশা:-ফাটা ঠোঁটের জন্য শসা একটি প্রাকৃতিক ঔষধ। শসার রস করে ঠোঁটে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখলে ভালো ভালো ফল পাওয়া যায়। শসার রস না লাগালে শসার প্যাক তৈরি করা যায়। দিনে অন্তত একবার এটি অ্যাপ্লাই করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হবে।
গ্রিন টি: আন্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর গ্রিন টি। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং ঠোঁটের ফাটা কমাতে গ্রিন টি অত্যন্ত উপকারী। এক কাপ গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ওই ব্যাগটি সরাসরি ফাটার উপরে লাগাতে হবে। কয়েক মিনিট পর তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিদিন এটি একবার করে এপ্লাই করতে হবে।
দুধ: দুধ ময়শ্চারাইজার এর কাজ খুব ভালোমতো করে। প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে দুধ লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিদিন একবার করে লাগালে ঠোঁট নরম এবং উজ্জ্বল হয়। এছাড়াও গোলাপের পাপড়ি এবং দুধ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঠোঁটে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি, ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার উপায় কি এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটার কারণ কি এটা নিয়ে আপনার আর কোন তথ্য জানার কমতি নেই। আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরের আর্দ্রতা কমে যাওইয়া।
তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। সাথে সাথে অন্যান্য নিয়ম কানুন গুলো মেনে চলা। তাহলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকে আমরা নিজেকে বাঁচাতে পারব। উপরোক্ত নিয়মগুলো যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে আশা করছি আপনার ঠোঁটফাটা নিয়ে আর কোন সমস্যা থাকবে না।
আমরা সম্পূর্ণরূপে চেষ্টা করেছি সকল তথ্যগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য। আমাদের লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। কারণ এখানে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করা হয়। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url