সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় বিস্তারিত জানুন
সিজার এই শব্দটির সাথে আমরা প্রায় সকলেই পরিচিত। কিন্তু সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় এ বিষয়ে কি আপনি অবহিত? অনেক সময় আমরা এ বিষয়টি সম্পর্কে না জেনে বাচ্চা নেই। যাতে করে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। সিজার করলে সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এই সম্পর্কেও আলোচনা করব।
সিজার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। সিজার সম্পর্কিত সকল তথ্যগুলো এখানে ক্রমানুসারে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন শুরু করা যাক।
ভূমিকা
সিজার কে ইংরেজিতে সি সেকশন বা সিজারিয়ান সেকশন বলা হয়। এটি এক ধরনের অপারেশন যা সন্তান জন্মদানের জন্য মায়ের পেট এবং জরায়ুতেকরা হয়ে থাকে। সাধারণত যখন নরমাল ডেলিভারি হয় না কিংবা নরমাল ডেলিভারি করতে গেলে মা এবং শিশু ঝুঁকির মুখে থাকে ঠিক তখনই সিজারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু ইদানিং অনেক মায়েরাই নরমাল ডেলিভারি হওয়ার মত অবস্থায় থাকলেও সিজার করার জন্য বলে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে যে, কোন দেশের সিজারের মাধ্যমে শিশুর জন্মের হার যেন ১৫%এর চেয়ে বেশি না হয়। সিজার করানোর আগে আমাদের জানা উচিত সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায়। কারণ সিজার করানোর ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই জানা জরুরি যে সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায়।
এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের জানা উচিত। যেমন বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায় কিংবা নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয়, সিজারের কতদিন পরে জার্নি করা যায়। এই সকল বিষয়গুলো নিয়েই আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি। আজকে আমরা এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায়
কিছু বছর আগেও সিজার এর মাধ্যমে ডেলিভারি নিয়ে মানুষ আতকে উঠতো। এটা একটা ভুল ধারণা ছিল। এখন তা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় বা একাধিক সিজার করলে কি কি ক্ষতি হতে পারে এই সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায়। এই বিষয়টি জানা সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যদি প্রাকৃতিক নিয়মে ডেলিভারি না হয় এবং নরমাল ডেলিভারিতে ঝুঁকি থাকে তাহলে কেবলমাত্র সিজার করার প্রয়োজন হয়। সিজার এখন একটি খুব সাধারণ বিষয়। সাধারণ বিষয় হলেও সিজার একটি বড় অপারেশন। তাই অপারেশনের কিছু ঝুঁকি তো থাকেই। বেশ কিছু জটিলতা থাকলে চিকিৎসকরা নরমাল ডেলিভারির পরিবর্তে সিজারিয়ান ডেলিভারি করাতে বলেন। চলুন জেনে নেই সেই জটিলতা গুলো কি কি-
- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রসব ব্যথা শুরু না হলে
- যেকোনো কারণেই শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষতি হলে
- প্রসব ব্যথা যদি ৮-১২ ঘণ্টার বেশি হয়ে যায় এবং ব্যথা আর না বাড়ে
- গর্ভফুল যদি জরায়ুর মুখে চলে আসে
- রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে
- শিশুর অবস্থার যদি অস্বাভাবিক হয়
- প্রথমের একটি বা দুটি শিশু যদি সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি হয়ে থাকে
আপনার একটা বা দুইটা বাচ্চা আছে, এটাই যথেষ্ট এর বেশি সিজার করা নিরাপদ নয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি আগের বাচ্চাগুলোর কোন সমস্যা থেকে থাকে কিংবা আপনার এটা দ্বিতীয় বিয়ে হয় সে ক্ষেত্রে আপনি তিন নম্বর সিজার করাতে পারেন। কিন্তু এতে ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে। কারণ যতবার সিজার করানো হয় প্রত্যেকবার ঝুঁকি বাড়তেই থাকে।
গর্ভবতীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যা অনেক নারী জানেন না। এবং না জেনেই একটার পর একটা বাচ্চা তারা নিতেই থাকে। তৃতীয় সন্তানের পরে চতুর্থ সন্তান যদি সিজারের মাধ্যমে নিতে চান তাহলে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেয়। যেমন জরায়ু ফেটে যায়, বাচ্চা জরায়ুর মধ্যে আটকে পড়তে পারে, জরায়ু বা প্রস্রাবের রাস্তা ছিড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানা যাক। সাধারণত সিজার করলে কি হয়, মায়ের পেটের একটা অংশ কাটা হয়, কেটে সেখান থেকে বাচ্চা বের করে নিয়ে আসা হয়। দ্বিতীয়বার যখন সেই মা গর্ভবতী হয় তখন জরায়ু বড় হতে থাকে। তখন কাটা জায়গাটাতে টান পড়তে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বেশি সমস্যা হলে জরায়ু ফেটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাচ্চার জীবন তো যায়, মায়ের জীবনেও ঝুঁকিতে পড়ে।
সিজারের ক্ষেত্রে মায়ের রক্ত দিতে হয়। বিশেষ করে গর্ভফুল নিয়ে হয় বড় বিপদ। বাচ্চা জরায়ুর মুখের দিকে থাকে এবং ফুল জরায়ুতে আটকে থাকে। যখন সিজার করা হয় তখন ফুলটা কাটা জায়গাটাই বসে যায়। এক মুহূর্তের মধ্যে অনেক রক্ত বের হয় তখন মাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় মাকে আইসিউতে নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। কেউ কেউ ফেরেন কেউ কেউ ফেরেন না সেখান থেকে। তাই বাচ্চা যদি সুস্থ থাকে তাহলে দুইটা সিজারি যথেষ্ট এর বেশি বাচ্চা না নেওয়ায় ভালো।
সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়
সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় সেই ব্যাপারে তো আমরা জানলাম। চলুন এবার জেনে নেই সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়। যারা সিজার করিয়েছেন কিংবা সিজার করানোর কথা ভাবছেন সকলেরই জানা উচিত সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়। আমাদের অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করার প্রয়োজন পড়ে।
আপনি যদি একজন সিজারিয়ান মা হন এবং এ বিষয়ে না জানেন তাহলে জার্নি করার পরে আপনি বিভিন্ন রকম ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এ বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করবে আপনি সিজারের পর ঠিক কতটা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পেরেছেন। যদি আপনার ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সেরে যায় সেক্ষেত্রে আপনি দেড় দুই মাসের মধ্যে ছোটখাটো জার্নিগুলো করতেই পারেন।
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তাররা অন্তত তিন মাস কোন প্রকার জার্নি করা থেকে বিরত থা্কার পরামর্শ দেন। সেলাইয়ের জায়গাটা যদি ভালোভাবে না শুকায় এবং আপনি জার্নি করেন তাহলে অনেক সময় গাড়ির ঝাকুনিতে পেটে অতিরিক্ত ব্যথা হতে পারে।
সেজন্য সিজারের পর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ৩ মাস কোন প্রকার জার্নি না করাই ভালো। এতে আপনি এবং আপনার সন্তান দুজনেই সুস্থ থাকবেন। আশা করছি সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় সে বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন
সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায়
একজন মা যখন সিজার করাতে চান তখন অবশ্যই তার জানা উচিত সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায়। কারণ সিজার করাতে দেরি হয়ে গেলে বাচ্চা নানা রকম ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমার আগে সিজার করালে বাচ্চা পরিপূর্ণ হতে পারে না। চলুন জেনে নেই সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায়।
একজন গর্ভবতী মায়ের পেটে অস্ত্রপ্রচার করার মাধ্যমে যখন একটি বাচ্চার প্রসব হয় তখন তাকে সিজারিয়ান ডেলিভারি বা সিজার বলে। অনেকেই এ বিষয়ে জানেনা যে সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায় বা কেন করতে হয়। গর্ভাবস্থার যদি ৩৭ সপ্তাহ শেষ হয় তাহলে সিজার করা যেতে পারে। কারণ ৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়ার শিশু কে অপরিপক্ক শিশু বলে।
এ ধরনের শিশুর বেঁচে থাকা নির্ভর করে সে কতটুকু পরিপক্ক হয়েছে তার উপর। বাচ্চা ৩৭ সপ্তাহের কাছাকাছি সময়ে জন্ম নিলে সে সম্পূর্ণ পরিপক্ক শিশু হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যদি উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকে তাহলে ২৮ সপ্তাহের শিশুকেও বাঁচানো সম্ভব হয়।( যদিও জন্ম মৃত্যু আল্লাহর হাতে) অপরিপক্ক শিশু জন্ম নিলে কিছু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি রয়ে যায়। যেমন-
- শারীরিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো দুর্বল থাকে
- শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হয়
- বিভিন্ন রকম সংক্রমণে আক্রান্ত হয়
তাই সিজারের ব্যাপার নিয়ে অহেতুক তাড়াহুড়া করার কিছু নেই। আশা করছি সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায় সেই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায়
বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায় এই প্রশ্নটি অনেকেরই থাকে। এটি আসলে একটি অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। কারণ বাচ্চার ওজন তখনই ম্যাটার করে যখন নরমাল ডেলিভারির প্রয়োজন হয়। বাচ্চার ওজনের সাথে অন্ততপক্ষে সিজারের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ বাচ্চার ওজন যাই হোক না কেন তা তো সিজারের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়।
বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায় এর থেকে বেশি জরুরী হলো সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় এই ব্যাপারে জানা। অনেকেই মনে করেন বাচ্চার ওজন যদি আড়াই থেকে তিন কেজি হয় সে ক্ষেত্রে সিজার করানো প্রয়োজন। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে গর্ভবতী মায়ের উপরে। মায়ের উচ্চতা যদি বেশি হয় তাহলে নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভব।
যদি বাচ্চার ওজন আড়াই থেকে তিন কেজি হয় তাহলে সিজার ঝুঁকিমুক্ত হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছুটা বিধি নিষেধ রয়েছে। বাচ্চার ওজনের জন্য সিজার হয় না। গর্ভবতী সিজার করানোর আরো অন্যান্য কারণ রয়েছে। যেগুলোর জন্য সিজার করা হয়। যেমন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকস, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। আরেকটি কারণ হচ্ছে নারীর।
বয়স একজন মায়ের বয়স যদি ৩৫ বছরের বেশি কিংবা ১৬ বছরের কম হয় তাহলে সিজার করানো হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভবতী মায়ের যোনী পথ যদি ছোট হয় তাহলে সিজার করার প্রয়োজন পড়ে। কিংবা বাচ্চা যদি ঘুরে থাকে অর্থাৎ বাচ্চার মাথা নিচের দিকে না থেকে যদি উপরের দিকে ঘুরে থাকে তাহলে সিজার করাতে হয়।
উপরিউক্ত সমস্যাগুলো যদি একজন গর্ভবতী মায়ের হয়ে থাকে তাহলে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা না করে সরাসরি সিজার করানোর মাধ্যমে ডেলিভারি করানো উত্তম। এতে মা এবং শিশু দুজনেই সুস্থ থাকে।
সিজারের কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যায়
অনেকের মনে এই প্রশ্নগুলো থাকে যে, সিজারের কতদিন বাচ্চা নেওয়া যায়? সিজারে কয়টা বাচ্চা নেয়া যায়? এগুলো জানাও অত্যন্ত জরুরী। কারণ এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে জানা না থাকলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে নানা রকম ঝকির মধ্যে পড়তে হয়। চলুন জেনে নেই সিজারের কত দিন পর বাচ্চা নেওয়া যায় সেই ব্যাপারে।
আবেগের বসে ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভেবে চিন্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। সিজার আমাদের মধ্যে এখন খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। প্রসব বেদনার ভয়ে গর্ভবতী মায়েরা এখন নরমাল ডেলিভারির বদলে সিজার করাতে চাই। তারপরে এখন মেয়েদের এত বয়সে বিয়ে হয় যে হাই প্রেসার, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ্যাত্ব এগুলা লেগেই থাকে।
সে ক্ষেত্রে সিজার ছাড়া কোন গতি থাকে না। ফলে অনেকেই আর দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার কথা চিন্তা করেন না। তবে অনেকেই একটা সন্তানে ভরসা পান না সেজন্য আবার সন্তান নেওয়ার চিন্তা করে। প্রথম সিজার থেকে বাচ্চা নেওয়ার মাঝে অন্ততপক্ষে দুই বছরের বিরতি প্রয়োজন। তারপর সবকিছু চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ভাবছেন বাচ্চা নেওয়ার জন্য এতটা কিসের বিধি নিষেধ? সিজার কোন সাধারণ অপারেশন নয়। চামড়া, চর্বি কেটে ভেতরে ঢুকে জরায়ুর নিচের অংশ কেটে তারপর বাচ্চা বের করা হয়। এবার বিভিন্ন অংশ জোড়া লাগাতে লাগাতে বের হয়ে আসা হয়। তাই সিজার কে যতটা সহজ ভাবা হয় আসলে ততটা সহজ কিন্তু নয়।
প্রথমে কাটা অংশে রক্ত জমাট বাঁধে, পেটে ব্যথা শুরু হয়, কোলেজেন তৈরি হয, টিস্যু হাইড্রোসিস হয়, তারপর সম্পূর্ণ অংশ জোড়া লাগে। ভালোভাবে শক্ত হয়ে আবার আগের জায়গায় ফিরে যাই। এই প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ হওয়ার আগে গর্ভে যদি আবার বাচ্চা আসে তাহলে বিপদের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
সিজারের কতদিন পর মিলন করা যায়
আপনার যদি সবেমাত্র সিজার হয়ে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই এটা ভাবতে পারেন যে, সিজারের কতদিন পর মিলন করা যায়। অর্থাৎ আপনি কিভাবে পুনরায় যৌন জীবন শুরু করতে পারেন। আপনি এটা ভাবতে পারেন যে, আপনি যেহেতু সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন সেহেতু মিলনে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। একদমই সঠিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে ভ্যাজাইনাল ও সিজার উভয় ক্ষেত্রেই সন্তান জন্মদানের পরে নারীর প্রথম তিন মাসের মধ্যে যৌন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যৌন মিলনের কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা চার থেকে ছয় সপ্তাহ অপেক্ষা করে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কিছু চেক আপ করিয়ে নেওয়া উচিত। যাতে আপনার সেলাইয়ের জায়গা শুকিয়েছে কিনাএবং ব্লিডিং বন্ধ হয়েছে কিনা এবং আপনি সিজারের পরে যৌন মিলনের কোনো প্রকার ব্যথা অনুভব করবেন কিনা সেটা জানা যাবে।
বেশিরভাগ মহিলারা মনে করে থাকেন যে তারা যেহেতু সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছে তাই যৌনসঙ্গম করলে সমস্যা হবে না। তারা এটা ভাবেন যে এই পদ্ধতির তে বাচ্চা প্রসব হলে রক্তপাত হয় না। জরায়ুর ভিতরে পুনরঘটিত হতে এবং সার্ভিব বন্ধ হতে অন্ততপক্ষে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে। এই কারণে প্রসোবোত্তর ৬ সপ্তাহ পর চেকআপ না করিয়ে কোন প্রকারের টেম্পল ব্যবহার এবং যৌন মিলন এড়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
দ্বিতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়
যাদের প্রথম বাচ্চা সিজারে হয় তাদের দ্বিতীয় বাচ্চার বেলাতেও সাধারণত সিজার করার প্রয়োজন পড়ে। কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় এ ব্যাপারে তো আমরা জেনেছি। এক্ষেত্রে অনেকেই প্রশ্ন করেন দ্বিতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়? সিজার করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হল বাচ্চা কত সপ্তাহে পরিপক্কতা অর্জন করে।
গর্ভের মধ্যে একটি বাচ্চার পরিপক্কতা অর্জন করতে সর্বনিম্ন ৩৭ সপ্তাহ সময় লেগে থাকে। ৩৭ সপ্তাহ হয়ে গেলে একটি বাচ্চা সম্পন্ন পপরিপক্কতা লাভ করে। ৩৮ সপ্তাহ শেষ হয়ে গেলে সাধারণত দ্বিতীয় সিজার করা যায়। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে যেমন মা এবং বাচ্চার যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে ৩৮ সপ্তাহের আগে সিজার করা যাবে কিনা ডাক্তাররা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অর্থাৎ
মূল কথা হলো দ্বিতীয় সিজার করার ক্ষেত্রে অন্ততপক্ষে ৩৮ সপ্তাহের সময় দিতে হয়। এতে বাচ্চা ও মা দুজনেই সুস্থ থাকে।
তৃতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়
সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় এ বিষয়ে তো আমরা জানি। সাধারণত সিজারের মাধ্যমে দুইটি বাচ্চা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে চিকিৎসকরা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মায়েরা তৃতীয়বারের মতো গর্ভধারণ করে ফেলেন এবং তৃতীয়বার সিজার করার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে তাদের প্রশ্ন থাকে তৃতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়? তৃতীয় সিজার অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ।
কারণ প্রত্যেকবার সিজারের সাথে সাথে ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। তৃতীয় সিজার করা সর্বোত্তম সময় হলো ৩৮ সপ্তাহ সম্পন্ন হওয়ার পর। ৩৮ সপ্তাহ সম্পন্ন হওয়ার পর সিজার করা সব থেকে ভালো। কিন্তু এর মধ্যে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে তো অবশ্যই আগে সিজার করতে হবে। কিন্তু যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে তাহলে অবশ্যই ৩৮ সপ্তাহ পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।
তৃতীয় সিজার এর ঝুঁকি কতটুকু
সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায় সে ব্যাপারে তো আমরা জেনেছি। বাচ্চা যদি সুস্থ থাকে তাহলে দুইটাই যথেষ্ট। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তিনটা বাচ্চা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে যায়। তখন তিন নাম্বার সিজার করাতে হয়। তিন নাম্বার সিজার করা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে।
সিজারের ক্ষেত্রে একটি জায়গা হয় কেটে বাচ্চা বের করে নিয়ে আসা হয়। তৃতীয়বার গর্ভধারণ করলে জরায়ু বড় হতে থাকে এবং কাটা জায়গাতে টান লাগে। গর্ভফুল জরায়ুর নিচের দিকে চলে আসে। বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে থাকে। এ সকল জটিলতা গুলো থেকে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি সেটা হল সিজার। সিজারে কয়টা বাচ্চা নেওয়া যায়, কত দিন পরে বাচ্চা নেওয়া যায়, সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আলোচনা থেকে আমরা এটা বুঝতে পারি যে সিজারের মাধ্যমে যদি বাচ্চা নেওয়া হয় তাহলে দুইটা সন্তানের যথেষ্ট।
তৃতীয় সিজার করাতে গেলে অনেকটা ঝুঁকে সম্মুখীন হতে হয়। সে ক্ষেত্রে একজন গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই বিশেষ সমস্যা ছাড়া তৃতীয় সিজার না করানোই ভালো। আশা করছি আজকের এই লেখাটি থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় মূল্যবান তথ্যটি জানতে পেরেছেন।
যদি আমাদের লেখাটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এরকম আরো প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপনার ব্যবহৃত সোশ্যাল মাধ্যম গুলোতে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url