প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত

 আমলকি কাঁচা অথবা রস করে বা সেদ্ধ করেও খাওয়া যায়।প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত তা আমাদের জানা উচিত। আমলকির নানা রকমের উপকারিতা রয়েছে তেমনি আমলকির ক্ষতিকর দিক রয়েছে।এটি চুলের যত্নে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এমনকি কিডনির সমস্যা থাকলে সে ক্ষেত্রেও কাজে লাগে।  আমলকির ছবিআজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমলকি খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।সুতরাং আমলকি নিয়ে যত প্রশ্ন সবগুলোর সমাধান পেতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ভূমিকা

আমলকি সেদ্ধ করে অথবা রস করে কিংবা কাঁচা ও খাওয়া যায়। আমলকি শুধু স্বাস্থ্যের জন্য নয় বিভিন্ন রকম চুলের সমস্যার সমাধানেও কাজে লাগে।আমরা কি জানি প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত অথবা আমলকির ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি। সকালবেলায় খালি পেটে আমলকি খেলে সব থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়।প্রতিদিন অন্তত এক থেকে দুইটি আমলকি আমাদের সবারই খাওয়া উচিত। শুকনো আমলকিতেও অনেক রকম পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান ,যেগুলো আমাদের জন্য খুবই উপকারই।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা  

আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে একটি মাঝারী কমলার থেকে আমলকিতে বেশি ভিটামিন সি থাকে এমনকি ডালিমের থেকে বেশি পুষ্টিগুণ থাকে। সেজন্য সবার আগে এটি জানা প্রয়োজন, প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত।খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি। এটি হজম শক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। খালি পেটে আমলকি খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

খালি পেটে আমলকি খেলে এর ডিটফিক্সেশন এর বৈশিষ্ট্য গুলো খুব ভালোভাবে কাজ কি।এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে যা শরীরের বিষাক্ত পদার্থ গুলোকে খুব দক্ষ ভাবে নির্মূল করে ।ক্ষতিকারক যে সকল ফ্রিরেডিকেল রয়েছে সেগুলো দূর করতে আমলকির উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী সাহায্য করে। খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা অনেক যেমন বিভিন্ন প্রকার রোগ মুক্তি। খালি পেটে আমলকি খেলে বিভিন্ন প্রকার রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেমন-
  • সর্দি কাশি প্রতিরোধ করে
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়া
  • মেদ কমায়
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • চুল সুন্দর করে
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
  • কোলেস্টেরল দূর করে
  • ব্যাথা থেকে মুক্তি দেয়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক আমলকির আরো কি কি উপকারে দিক রয়েছে এবং প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত।

* আমলকির রস ও কর্পূর একসাথে মিশিয়ে মাড়িতে লাগালে দাঁতের ব্যথা ও ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । আমলকির রস পান করলে জ্বরও কমে যায়।

* আমলকি খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। আমলকির পাউডার ও মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে চোখের ছানির সমস্যা দূর করা সম্ভব।

* বমি হলে অথবা হেচঁকি উঠলে আমলকি রস এবং মিশ্রি একসাথে মিশিয়ে খেলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমলকির রস খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে।

* আমলকির রস নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আমলকিতে বিদ্যমান এমন এসিড ও এন্টি অক্সিডেন্টের কারণে হার্টের কার্যক্রম ঠিক থাকে।

* শ্বাস প্রশ্বাস সংক্রান্ত সকল সমস্যা নিরাময়ে আমলকি অবদান রাখে এমনকি হজম শক্তি বাড়াতে আমলকি অনেকটাই উপযোগী

* নিয়মিত আমলকি খেলে লিভার সুস্থ থাকে। যার ফলে শরীরের সকল বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

* আমলকিতে বিদ্যমান অ্যামিনো এসিড ও প্রোটিন চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের গোড়া মজবুত রাখে। অর্থাৎ আমলকি চুলের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

খালি পেটে আমলকি খাওয়ার অপকারিতা 

আমলকির কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। তার মধ্যে খালি পেটে আমলকি খাওয়ার অপকারিতা একটু বেশি। আমলকি একটি ক্ষারীয় প্রকৃতির ফল। যাদের পেটে একটু সমস্যা রয়েছে তারা যদি আমলকির রস খায় তাহলে অস্বস্তি অনুভব করতে পারে। এজন্য যাদের এসিড বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি সমস্যা হতে পারে।এই ক্ষেত্রে তাদের আমলকি খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আমলকি অনেকটাই তীব্র ও টক স্বাদ যুক্ত একটাদ। এর স্বাদের তীব্রতা কমানোর জন্য আমলকি রসের সাথে পানি মিশিয়ে পাতলা করে নেওয়া যায়। এর সঙ্গে মধু মিশিয়েও খাওয়া যায়।এতে করে এর ক্ষতিকর দিক অনেকটাই কমে যয়। আমলকিতে রক্তের শর্করা রাশকারি প্রভাবক বিদ্যমান।

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে আমলকি খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নেয়া উচিত। কারণ, আমলকি একটি হাইপোগ্লাইসেমিক ফল।খালি পেটে আমলকি খেলে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা ওঠা নামা করাতে পারে।

প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত

আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। এতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একাধিক রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত আমলকি খেলে বিভিন্ন রকম ক্ষতিও হতে পারে। তাই প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত তা আমাদের জানতে হবে। প্রতিদিন ১-২টি আমলকি খাওয়া উচিত। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকার কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। স্তনদানকারী মায়েদেরও আমলকি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত আমলকি খাওয়া হার্টের জন্য ক্ষতিকর।

আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম

আমলকি খাওয়ার সঠিক নিয়ম বলতে প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত এবং কিভাবে খাওয়া উচিত এটাই বোঝায়।সকাল বেলা খালি পেটে ১ থেকে ২ টি আমলকি খাওয়া সব থেকে বেশি উপকারী। তবে তিনি যেকোনো সময় আমরা কি খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর পরিমাণের দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। কাঁচা আমলকির রস খেলে সব থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আমলকির স্বাদ কিছুটা টক ও তেতো হওয়ার জন্য অনেকেই খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে পানির সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায় ।

আমলকি কেটে ছোট ছোট টুকরো করে লবন মিশিয়ে রোদে শুকিয়ে রেখে দেওয়া যায়।এটি ভালোভাবে শুকানোর পরে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

শুকনো আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকিতে অনেক ধরনের পুষ্টিউপাদান পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।শুকনো আমলকি খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করার নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আমলকি রোদে শুকিয়ে খেলে তা অনেক রোগের ঝুঁকি কমায়। আমলকিতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে তাই এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
যাদের এসিডিটি, বুক জ্বালা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদহজমের সমস্যা আছে তারা শুকনা আমলকি জলে ফুটিয়ে ফুটিয়ে খেলে পেটের সব সমস্যার সমাধান পাবে। শুকনো আমলকি রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায়। শুকনা আমলকি চিবিয়ে খেলে এটিএম মাউথ ফ্রেশনার হিসেবেও কাজ করে ।

চুলের জন্য আমলকির উপকারিতা

চুলের জন্য আমলকির উপকারিতা অপরিসীম। আমরা অনেকেই জানিনা যে, চুলের জন্য আমলকির উপকারিতা গুলো কি কি। ফলে আমরা এর ব্যবহারও তেমন করি না। আমলকি কে চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার বলা হয়। এতে বিদ্যমান নিউট্রিয়েন্টস মাথার রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে চুল তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়। হরমোনের তারতম্যের জন্য যে ধরনের চুল পড়ে সেটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। আমলকিতে রয়েছে কোলাজেন যা চুলের ফলিকলে পুষ্টি যোগায় ফলে মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে।

আমলকির ক্ষতিকর দিক

আমরা সবাই এটা জানি যে আমলকি খুবই উপকারী একটা ফল। কিন্তু আমরা এটা জানি না যে, আমলকির ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। বিশেষ করে কিছু কিছু রোগী আছে যাদের আমলকি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আমলকি আর আদা একসাথে খেলে লিভারের সমস্যা হয়। খালি পেটে আমলকি খেলে আইসিডিটির সমস্যা হয়। এই ফল শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় তাই সর্দি কাশি হতে পারে। সেজন্য প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত তা আমাদের ভালোভাবে জানতে হবে। আমলকির ক্ষতিকর দিক গুলো মাথায় রেখে আমাদের আমলকি খাওয়া উচিত। মেয়েদের ধারে

লেখক এর বক্তব্য

সম্পূর্ণ আলোচনার শেষে আমার এটা মনে হয় যে আমলকি অনেক উপকারী একটি ফল কিন্তু কোন ভাবেই এটি অতিরিক্ত পরিমান খাওয়া উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। আশা করছি আপনারা আমার লেখাটি পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন।

যদি আমার লেখাটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি আপনার পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করে দিবেন ।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url