মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে - ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, মেথি কিডনির ক্ষতি করে? এ বিষয়টি নিয়ে আপনারা অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। আপনাদের জন্য আমরা মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সেই সাথে ডায়াবেটিসে মেথির খাওয়ার নিয়ম আলোচনা করা হবে। আপনি যদি জানতে চান মেথি কিডনির ক্ষতি করে কিনা তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মেথি
মেথি খাওয়ার সময় আমরা অনেক অনেক চিন্তা করে থাকি যে, মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে? আপনাদের এই দোটানা চিন্তা দূর করার জন্য আমাদের আজকের আয়োজন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ভূমিকা

মেথি সাধারণত খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ বৃদ্ধিতে কাজ করে। শুধুমাত্র স্বাদ এবং গন্ধই নয় এটি আমাদের স্বাস্থ্যের উপরেও নজর রাখে। মেথিতে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার, আয়রন, নিয়াসিন ইত্যাদি বিদ্যমান। মেথি প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 

মেথি বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়। যেমন ঋতুস্রাবের সময় পেটে ব্যথা, খুশকি, ব্লাড সুগার, চুল ও ত্বকের সমস্যা, ব্রণ, পেটের সমস্যা, হার্টের সমস্যা, বাতের ব্যথা ইত্যাদি। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

সেই সাথে সাথে ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে মেথি খাওয়ার উপকারিতা, মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা, মেথি কি প্রতিদিন চুলে দেওয়া যাবে, চুল লম্বা করতে মেথির ব্যবহার এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে

প্রাচীনকাল থেকে রান্নায় মেথির ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধুমাত্র খাবারের স্বাদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নয় আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে মেথি দারুন ভূমিকা রাখে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাতেও মেথির ব্যবহার হয়ে আসছে। মেথিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

মেথির বীজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টিইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সাথে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিগুণ রয়েছে মেথিতে। বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসেবে মেথি ব্যবহৃত হয়। যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, ওজন কমায়, এমন কি কিডনির সমস্যা ও দূর করতে পারে। যারা এই প্রশ্নটি করেন যে মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে? তাদের জন্য বলি, মেথি ভেজানো পানি যদি আপনি নিয়মিত খান তাহলে আপনার কিডনির পাথর নিরাময় হবে। 

মেথি বীজ কিডনির স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উত্তর আফ্রিকায় মেথির বীজ কিডনির পাথর প্রতিরোধে এবং চিকিৎসায় বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে মেথি বীজে থাকা পুষ্টি উপাদান কিডনিতে বিদ্যমান ক্যালসিফিকেশন হ্রাস করতে পারে। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে না। 

তাই আপনার মনে যদি এই প্রশ্ন থেকে থাকে যে মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে তাহলে জেনে রাখুন মেথি তো কিডনির ক্ষতি করেই না বর মেথি ভেজানো পানি খাওয়া আপনার কিডনির জন্য অত্যন্ত উপকারী।

ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে এ বিষয়টি জানতে চাওয়ার পাশাপাশি এটিও জানতে চান যে ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম কি? মেথি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। দিন দিন আমাদের দেশে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ও নিয়মিত খাওয়া দাওয়া মানুষের এমন কিছু সাধারন কারণে ত্রিশের কোঠা না পেরুতে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। 

ডায়াবেটিসের সূত্র ধরে আমাদের শরীরে আরো নানা রোগ বাসা বাধে। যেমন- কোলেস্টেরল, থাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা সহজ নয়। এর জন্য অনেকটা কাঠ খর পোড়াতে হয়। খাওয়া দাওয়ার নিয়ম মেনে চলতে হয়। এছাড়াও স্বাভাবিক জীবন যাপনেও কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে হয়। সেই সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও চলতে হয়। 

তবে আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা ঘরোয়া কিছু উপায়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মেথি বীজের উপরে সম্পূর্ণরূপে ভরসা করতে পারেন। মেথিতে ফলিক অ্যাসিড, থায়ামিন, আরাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন ইত্যাদি উপাদান বিদ্যমান। এছাড়াও জিংক, মেঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম বিদ্যমান। যা রক্তের শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। 

সেজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথি একটি মহা ঔষধ। তবে মেথি খাওয়ার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। ভালো উপকার পেতে হলে আপনাকে প্রতিদিন মেথি ভেজানো পানি পান করতে হবে। এতে করে খুব ভালো উপকার পাবেন। আবার আপনি মেথি চা খেতে পারেন। মেথি চা বানানোর নিয়ম হয়তো অনেকেই জানেন না‌। চলুন বলেই দিই। প্রথমে একটি পাত্রে গরম পানি বসান। 

পানি ফুটে উঠলে তাতে মেথি গুঁড়া মেশান। এর সাথে তুলসী পাতা, কালোজিরা এগুলো মেশাতে পারেন। সবগুলো উপকরণ একসাথে নিয়ে পাঁচ মিনিট ফোটাতে হবে। তারপরে নামিয়ে নিয়ে ছেঁকে ফেলুন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ উপকারি মেথি চা। নিয়মিত মেথি চা খান, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

খালি পেটে মেথি খাওয়ার উপকারিতা

আদি কাল থেকে বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে মেথি ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে নানা ধরনের সমস্যা ম্যাজিকের মতো দূর হয়ে যায়। মেথিতে রয়েছে ভিটামিন কে, থায়ামিন, ফলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন এ, বি ৬, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। খালি পেটে মেথি খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। চলুন জেনে নিন খালি পেটে মেথি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়: আমরা অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে থাকি। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে চাইলে আপনি মেথি খেতে পারেন। মেথিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। যা হজম শক্তি বাড়ায়। মেথি ভিজিয়ে রেখে বেটে খেলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। রোদে শুকিয়ে খেতে পারেন।

ওজন কমাতে সহায়তা করে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি খেলে অথবা মেথি ভিজানো পানি খেলে শরীরের ফাইবারের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুধা কম লাগে। এতে করে ওজন আস্তে আস্তে কমতে থাকে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: মেথি দানা ক্যান্সারের মতো রোগের সাথে লড়াই করতেও পারে। মেথি ক্যান্সারের টিস্যুগুলো সহজে বাড়তে দেয় না। তবে ভালো উপকার পেতে হলে নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি সকাল বেলায় খেতে হবে।

কালো দাগ দূর করে: খালি পেটে মেথি খেলে শরীরের কালো দাগ দূর হয়। অর্থাৎ ত্বক সুন্দর ও দাগ মুক্ত রাখতে মেথির কোন জুড়ি নেই।

চুলের যত্নে: স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুলের জন্য মেথির ব্যবহার অন্যতম। মেথি চুল পড়া কমাতে পারে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

কিভাবে খাবেন মেথি

এক গ্লাস পানিতে সারারাত মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেই পানি পান করুন। সাথে সাথে খাওয়ার জন্য গরম পানিতে মেথি ভিজিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও পানির সঙ্গে মেথির গুড়া মিশিয়েও খাওয়া যায়। যেভাবে খান আপনি খুব ভালো ফলাফল পাবেন আশা করা যায়।

মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা

মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা অনেক। মেথি খাওয়া মেয়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু আপনি কি জানেন মেথি খেলে মেয়েদের শরীরে কি কি উপকার হয়। অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকেন মেথি কি কিডনির কিডনির ক্ষতি করে। সেই সম্পর্কে তো আমরা জেনেছি। চলুন এবার জেনে নেই মেয়েদের জন্য মেথির উপকারিতা গুলো কি কি।
  • মনোপজের সময় মহিলারা প্রায় সময়ই ব্যথাতে ছটফট করতে থাকেন। এই সময় এমন ব্যথা হয় যে ব্যথা, জ্বলন এবং অস্থিরতার মত সমস্যার মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেথির গুড়ার সাহায্যে এই সমস্যাগুলো থেকে মেয়েরা মুক্তি পেতে পারে। মেথিতে উপস্থিত এন্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের ব্যথা এবং ফোলা কমাতে সহায়তা করে।
  • সন্তান জন্মদানের পরে অনেক মেয়েদের স্তন দুধের অভাব দেখা দেয়। এই সময় মেথি গুঁড়ো খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। মেথি শরীরে ইস্ট্রোজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে বুকের দুধ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
  • পিরিয়ডের সময় নারীদের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। ওই সময় তলপেটে ব্যথা, জ্বালাপোড়া এবং স্রাবের কারণে এগুলো থেকে মুক্তি পেতে মেথি গুঁড়া খেতে পারেন।
  • মেথি মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। নিয়মিত মেথি গুঁড়া খেলে মেয়েদের ফার্টিলিটি বা প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার যদি সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা থাকে তাহলে নিয়মিত মেথি খান।
  • মহিলারা অনেক সময় ওজন বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। এ সময় নানা রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সেই বাড়তি ওজন কমাতে মেথি বীজ ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন সকালে পানির সঙ্গে মেথি গুঁড়া খেলে তা চর্বি কাটাতে এবং পেশির বিকাশ হতে সহায়তা করে।
  • এখনকার মানুষজন ত্বক সম্পর্কে একটু বেশি সচেতন। মেথি বীজ ব্যবহারের ফলে মেয়েরা ব্রণ, দাগ সহ মুখের বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। আন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বক সংক্রান্ত সমস্যার জন্য খুবই উপকারী।
  • ইনসুলিন বাড়াতে মেথি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। মেথি লিপিড মেটাবলিজম ঠিক রাখতে পারে। তাই টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথি অত্যন্ত উপকারী।

মেথি কি প্রতিদিন চুলে দেওয়া যাবে

আমরা অনেকেই google এ এসে সার্চ করে থাকি মেথি কি প্রতিদিন চুলে দেওয়া যাবে। এ বিষয়টি নিয়ে এই পর্বে আমরা আপনি কি প্রতিদিন চুলে যাওয়া যাবে এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চুল সাধারণত আভিজাত্য, সামাজিক অবস্থান এবং সৌখিনতার একটি প্রতীক। 

চুলের নানা রকম সমস্যা রয়েছে যেমন চুল পড়া, খুশকি, চুলের অকালপক্কতা, মাথার ছত্রাকের সমস্যা এবং আরো অনেক কিছু। সঠিকভাবে চুলের সমস্যা চিহ্নিত করে উপযুক্ত সমাধান দিতে পারলে এই সমস্যাযুক্ত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। চলুন জেনে নেই চুলের সমস্যার সমাধানে মেথির ব্যবহার।

চুল পড়া রোধে: চুল পড়া খুবই বিরক্তকর একটি সমস্যা। নানা রকম কারণে চুল পড়তে পারে। দৈনিক ৫০ থেকে ১০০ টি পর্যন্ত চুল পড়লে সেটি স্বাভাবিক থাকে। তবে এর বেশি চুল পড়া শুরু হলে তা অস্বাভাবিক চুল পড়া বলে ধরে নেওয়া হয়। চুল পড়া সমস্যার সমাধানের মেথি একটি অত্যন্ত কার্যকারী উপাদান। ৫০ গ্রাম মেথি ২০০ মিলি পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সকালে খালি পেটে পান করুন। 

মেথিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং নিকটেকনিক অ্যাসিড রয়েছে যা চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং মজবুত করে তোলে। মেথি পানি প্রতিদিন পান করলে পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়, দেহের অতিরিক্ত ওজন কমে। মেথি ভেজানো পানি একটি স্প্রে বোতলের নিয়ে মাথার ত্বকে এবং চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত স্প্রে করুন। এবার আঙ্গুলের সাহায্যে মাথায় পাঁচ সাত মিনিট মাসাজ করুন। এক ঘন্টা পরে চুল ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে সারারাত এটি মাথায় লাগিয়ে রাখতে পারেন।

খুশকি দূর করতে: খুশকি সাধারণত শুষ্ক ত্বক এবং ছত্রাক সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। মেথি মাথাতে পুষ্টি যোগায় এবং ছত্রাক রোধ করে। এজন্য দুই তিন চামচ মেথি এক কাপ পানিতে ১০-১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। মেথি সহ কিছুটা পানি বেটে একটি পেস্ট বানিয়ে নিয়ে তাতে কিছুটা টক দই মিশাতে হবে। এরপর এই প্যাকটি মাথার ত্বকে খুব ভালোভাবে লাগাতে হবে। ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে চুল ভালভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। খুশকির সমস্যা খুব বেশি হলে সপ্তাহে একদিন এভাবে ব্যবহার করুন।

চুলের অকালপক্কতা রোধ: অল্প বয়সের অনেকের চুল পেকে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপুষ্টি এবং অযত্নের কারণে চুলের অকালপক্কতা দেখা দেয়। শরীরে আয়োডিন এবং ভিটামিনের অভাবে চুলের যে স্তরে রংয়ের কোষ তৈরি হয় সেই স্তরের রঞ্জক কোষ তৈরি বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল আস্তে আস্তে সাদা হতে থাকে। 

এই সমস্যার সমাধান পেতে হলে নারিকেল তেলের দুই তিন দিন মেথি ডুবিয়ে রাখুন। এবার সেই তেল কুসুম গরম করে মাথার ত্বকে ভালোভাবে মাসাজ করুন। এটি চুলে টনিকের মতো কাজ করে এবং চুলের হারানোর রং ফিরিয়ে আনে। চুলকে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পুষ্টি যোগায় এবং অকালপক্কতা রোধ করে।

চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে: মেথিতে রয়েছে লেসিথিন নামক একটি উপাদান। যা চুলের বৃদ্ধিতে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। এক চামচ মেথি এবং এক চামচ সরিষা দানা একসঙ্গে গুড়ো করে নিন। দুই তিন টেবিল চামচ পানিতে এই গুঁড়ো এক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। এতে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল যোগ করে একটি পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। 

পেস্ট দিয়ে ভালোভাবে মাথার ত্বকের লাগিয়ে 10-15 মিনিট অপেক্ষা করার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়। সরিষাতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে তাই এটি চুলের বৃদ্ধিতে উদ্দীপকের কাজ করে।

চুল ময়শ্চারাইজ করে: পানিতে সারারাত মেথি ভিজিয়ে রাখার পরে সকালে শ্যাম্পু করার পরে সেই মেথি ভেজানো পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে চুল মশ্চারাইজ হয় এবং সিল্কি করতে সাহায্য করে। এভাবে মেথি চুলকে সুন্দর রাখতে স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা রাখে।

চুল লম্বা করতে মেথির ব্যবহার

অনেক সময় আমাদের চুলের বৃদ্ধি একেবারেই থমকে যাই। মনে হয় চুল একেবারেই বড় হচ্ছে না। এক্ষেত্রে মেথি আপনাকে সমাধান দিতে পারে। মেথি গুড়া আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। টাক পড়ার মতো সমস্যা ও দূর করতে পারে। এই মেথিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, এবং ভিটামিন সি রয়েছে। 

এছাড়াও ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং প্রোটিন বিদ্যমান। যা চুলের বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী। চুলের বৃদ্ধির জন্য মেথি পাউডার ব্যবহার করতে পারেন অথবা মেথির গুড়া ও ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনার চুলের জন্য খুবই ভাল। মেথিতে প্রচুর পরিমাণ এবং নিকোটনিক এসিড বিদ্যমান। 

এক চামচ মেথি অল্প পরিমান পানিতে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে পারেন। নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং সম্পূর্ণ চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে রেখে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। আবার নারকেল তেলের মধ্যে তিন চার চামচ মেথি রেখে দিয়ে দুই তিন দিন পরে সেই তেল কুসুম গরম করে চুলের গোড়াতে ভালোভাবে মেসেজ করে লাগাতে হবে। 

এক দেড় ঘন্টা রাখার পরে চুল সুন্দরভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে চুল লম্বা ও ঘন হবে। মেথি ও অলিভ অয়েল একসাথে লাগাতে পারেন। অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ধরে রাখতে পারে। এছাড়াও মেথির বীজ চুলের গোড়া থেকে পুষ্টিযোগায় এবং চুল মজবুত করে। মেথি চুলের ফলিকল ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই চুল লম্বা করতে মেথির কোন জুড়ি নেই।

মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি হয়তো এর আগে অনেক জায়গায় মেথি কি কিডনির ক্ষতি করে এ বিষয়টি নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি। আমরা চেষ্টা করেছি সবগুলো সঠিক তথ্য এক জায়গায় উপস্থাপন করার জন্য। 

আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি পেয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।সেই সাথে সাথে আমরা ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার যদি আমাদের লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আমাদের লেখা সম্পর্কে কোন মতামত জানানোর থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url