নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় - নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে

প্রিয় পাঠক, আজকের মূল বিষয় হলো নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয়। আজকের আর্টিকেলে আপনাদেরকে নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিব। এছাড়াও নগদে হাজারে কত টাকা কাটে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয়।
ছবি
বাংলাদেশের ডাক বিভাগের অন্যতম একটি মোবাইল ব্যাংকিং হলো নগদ। আর নগদ একাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন করার মাধ্যম হচ্ছে নগদ এজেন্ট। চলুন জেনে নেই নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয়।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে অনেকেই তার মূল ব্যবসার পাশাপাশি নগদ এজেন্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। অনেকে তো শুধু নগদ এজেন্ট এবং বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। 

আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সেই সাথে সাথে নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে, নগদ এজেন্ট কমিশন কত, নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন শুরু করা যাক।

নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয়

প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা জানতে চান। আপনাদের জন্য আমরা সঠিক তথ্যগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নগদ এজেন্ট হওয়ার সহজ উপায় হলো আপনার এলাকা বা থানার মধ্যে একটি দোকান থাকতে হবে। 

যেকোনো দোকান বা এজেন্ট পয়েন্ট থেকে DSO বা SR এর ফোন নাম্বার জোগাড় করুন। এরপরে DSO এর সাথে সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করুন। আপনার দোকানের ঠিকানা টি তাকে জানান এবং আপনি যদি তাদের এরিয়ার মধ্যে থাকেন তাহলে আপনাকে নগদ এজেন্ট সিম দিবে। আর যদি এরিয়ার মধ্যে না থাকেন তাহলে সম্ভব না। 

নগদ এজেন্ট একাউন্ট আপনি সরাসরি খুলতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে এরিয়ার DSO নগদ এজেন্ট একাউন্ট খুলে দিবে। নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কিছু কাগজপত্র দরকার এগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এর দুটি ফটোকপি।
  • ভোটার আইডি কার্ডের ফটো কপি দুইটি।
  • একটি ফ্রেশ সিম। যেটাতে কখনো নগদ একাউন্ট খোলা হয়নি। এটি আপনার নগদ এজেন্ট নাম্বার হবে।
  • আপনার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
নগদ এজেন্ট এর একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। যে অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি লেনদেন করবেন। তখন আপনার সিমে নগদ এজেন্ট একাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। তখন আপনি এই অ্যাপ এর সাহায্যে লেনদেন করতে পারবেন এবং লগইন করতে পারবেন। এই অ্যাপ এ সরাসরি অ্যাকাউন্ট করা যায় না। 

নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলার সময় আপনার সকল তথ্য দিয়ে একটি রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে হবে। এটি আপনাকে নিজে করতে হবে না। DSO বা SR নিজে পূরণ করবে। আপনাকে শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো জমা দিতে হবে। আপনি অনলাইনে নগদ এজেন্ট একাউন্ট কিভাবে নিতে হয় তা জানতে চান? তাহলে বাকি লেখা টুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

অনলাইনে নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে ১৬১৬৭ নাম্বারের ফোন করে কাস্টমার কেয়ারে কথা বলতে হবে। কাস্টমার কেয়ার থেকে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কথা বলবে। এরপর তাদের যদি মনে হয় আপনাকে এজেন্ট দিবে তাহলে তারা DSO সাথে যোগাযোগ করতে বলবে। 

তার থেকে আপনি সরাসরি আগে DSO এর সাথে যোগাযোগ করে নেওয়ায় বেশি ভালো। কারণ সরাসরি কথা বলে আপনার নগদে এজেন্ট অ্যাকাউন্ট করে সহজ হয়ে যাবে। মূল কথা হলো বর্তমানে নগদ এজেন্ট অনেক বেশি হয়ে গেছে যার কারণে তারা খুব একটা ফোকাস করে না। নগদ একাউন্ট করতে কত টাকা লাগবে তা নির্দিষ্ট কোন এমাউন্ট নেই। DSO এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি যা বলবেন তাই করতে হবে। 

আশা করছি নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় সেই সম্পর্কে আপনি পুরোপুরি ধারণা পেয়ে গেছেন।

নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে

অনেকেই জানতে চান নগদে হাজারের কত টাকা চার্জ কাটে? এবারে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। যে নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে। নগদে ক্যাশ আউট চার্জ প্রতি হাজারে মাত্র ৯.৯৯ টাকা। এটি বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। কত টাকা চার্জ কাটা হবে তা নির্ভর করে আপনি কিভাবে এবং কত টাকা উঠাবেন তার উপরে। 

এবং আপনার অ্যাকাউন্টের রেগুলার নাকি ইসলামিক তার উপরে। রেগুলার একাউন্টে নগদ কোড এবং অ্যাপ দিয়ে ক্যাশ আউট করা যায়। নগদ ডাক বাংলা বিভাগের একটি ডিজিটাল লেনদেন মাধ্যম। রকেট, বিকাশ, নগদ, উপায় এগুলোর সাথে আরো যত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে নগদ। 

জনপ্রিয়তার পিছনে নগদের ক্যাশ আউট চার্জ কম হওয়া একটি অন্যতম কারণ। বিকাশের খরচের তুলনামূলক নগদের ক্যাশ আউট খরচ অনেক কম। আপনার যদি নগদ একাউন্ট খোলা থাকে তাহলে চলুন জেনে নেই নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে সে বিষয়ে। নগদে সাধারণত দুইভাবে ক্যাশ আউট করা যায়।
  • নগদ কোড দিয়ে
  • নগদ অ্যাপ দিয়ে
*167#কোড দিয়ে নগদের খরচ: নগদ এজেন্ট পয়েন্টে যদি নগদ কোড দিয়ে ক্যাশ আউট করা হয় তাহলে হাজারে ১৩.০৪ টাকা(এটি ভ্যাট ছাড়া) ভ্যাট সহ হাজারে ১৫ টাকা খরচ হবে। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০০ টাকা উঠাতে চান তাহলে আপনার একাউন্ট থেকে ১০১৫ টাকা কাটা হবে।

অ্যাপ দিয়ে নগদের খরচ: সকল মোবাইল ব্যাংকিং এ অ্যাপ এ একটি সুবিধা থাকে। তেমন নগদের ও অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। এই সুবিধা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কম খরচে ক্যাশ আউট। নগদ অ্যাপ দিয়ে ক্যাশ আউট করলে হাজারে ৯.৯৯ টাকা ( ভ্যাট ছাড়া) খরচ হয় এবং ভ্যাট সহ ১১.৪৯ টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ নগদ অ্যাপ দিয়ে ১০০০ টাকা ক্যাশ আউট করলে ১০১১.৪৯ টাকা আপনার একাউন্ট থেকে কাটা হবে।

নগদ ইসলামী একাউন্টের খরচ: নগদ ইসলামী একাউন্টের খরচ রেগুলার একাউন্ট এর চেয়ে একটু বেশি। ইসলামী একাউন্টে ১০০৯ টাকা ক্যাশ আউট করলে ১৩.০৫ টাকা কাটা হয়। ভ্যাট সহ তা ১৫ টাকা হয়। অর্থাৎ নগদ ইসলামী অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০০ টাকা উঠালে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১৫ টাকা কাটা হবে।

আশা করছি নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে তা আপনি বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন।নগদ কোড এর চেয়ে নগদ অ্যাপ দিয়ে টাকা উঠানোর খরচ ৩.৫১ টাকা কম। আপনার যদি একটি স্মার্ট ফোন থেকে থাকে তাহলে নগদ অ্যাপ ডাউনলোড করে অ্যাপ এর মাধ্যমে লেনদেন করুন।

নগদ এজেন্ট কমিশন কত

সকলে আগেই জানতে চাই নগদ এজেন্ট নিলে কেমন লাভ হবে বা নগদ এজেন্ট কমিশন কত। নগদ এজেন্ট থেকে ১০০০ টাকা ক্যাশ ইন করার হয় তাহলে হাজারো ৪.১০ টাকা কমিশন দেয় এবং কেউ যদি ১০০০ টাকা ক্যাশ আউট করে তাহলেও ৪.১০ টাকা কমিশন দেওয়া হয়।

নগদ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম

আমাদের বিভিন্ন কারণে নগদ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে। এই পর্বে আমরা নগদ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। নগদ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য আপনি যেই নতুন সিমে নগদ একাউন্ট খুলতে চান সেই সিমের মালিক এবং নগদ একাউন্ট এর মালিক একজনই হতে হবে। 

*১৬৮# এ ডায়াল করে নতুন একাউন্ট তৈরি করতে হবে। দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সাথে নগদের চুক্তি থাকার দরুন সরাসরি ওই সিম কোম্পানির কাছ থেকে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ইনফর্মেশন কালেক্ট করে নিতে পারবে। এতে করে নগদ একাউন্ট খোলার সময় আর জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতে হবে না। 

নগদ একাউন্ট খোলার পরে নগদ অ্যাপ ইন্সটল করে সেখানে মাই নগদ অপশনে যেতে হবে। KYC আপডেট করতে হবে। KYC আপডেট করা হয়ে গেলে আগের নগদ একাউন্ট কর্তৃপক্ষ ব্লক করে দিবে। যার ফলে পুরাতন অ্যাকাউন্ট আর কাজ করবে না। 

নগদ একাউন্ট এর নাম্বার পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে একাউন্টের সকল টাকা খরচ করতে হবে। অর্থাৎ অ্যাকাউন্ট 0 করে দিতে হবে। তা না হলে ওই টাকা পরবর্তীতে আর কখনো খরচ করাও যাবে না। মোবাইল ব্যাংকিং গুলোতে নাম্বার পরিবর্তন করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। সেই ক্ষেত্রে নগদ খুব সহজে নাম্বার পরিবর্তন করার সুযোগ দেয়।

নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম

বর্তমানে সময় অনেকের নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা চিন্তা করেন। তাদের কথা ভেবে আমরা এবার নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আমরা জানবো নগদে কিভাবে বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। নগদ অ্যাপের সাহায্যে খুব সহজেই বিদ্যুৎ বিল দেওয়া যায়। 

এজন্য প্রথমে হোম স্ক্রিন থেকে বিল পে অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। তারপরে ইলেকট্রিসিটি সিলেক্ট করে বিআরবি সিলেক্ট করতে হবে। এরপর মিটার নাম্বার দিতে হবে। তারপর বিলের পরিমাণ লিখতে হবে যে কত টাকা। লিখা হয়ে গেলে নগদের পিন নাম্বার দিয়ে ট্যাপ করে ধরে রাখতে হবে। তাহলেই খুব সহজে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ হয়ে যাবে। 

অন্যদিকে নগদের কোড ব্যবহার করেও বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করা যায়। এর জন্য প্রথমে *১৬৭# ডায়াল করতে হবে। তারপর মেনু থেকে ৫ চেপে বিল পেয়ে সিলেক্ট করে নিতে হবে। তারপর ইলেক্ট্রিসিটি সিলেক্ট করে বিআরবি নির্বাচন করতে হবে। এরপর মিটার নাম্বার দিয়ে বিলের পরিমাণ নিতে হবে এবং নগদের পিন নাম্বার দিয়ে বিল পরিশোধ করতে হবে। 

বিল পরিশোধ হলে আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস পাবেন। এতে একটি টোকেন নাম্বার দেওয়া থাকে। সেই টোকেন নাম্বার টি গ্রাহক তার ডিজিটাল মিটারে ম্যানুয়ালি প্রবেশ করে রিচার্জ সম্পন্ন করে। নগদে প্রিপেইড বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে একজন 50 টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ যে কোন এমাউন্টের বিল পেমেন্ট করতে পারবে। 

নগদে পোস্ট পেইড বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে কোন প্রকার চার্জ প্রযোজ্য হয় না। এক্ষেত্রে মানুষের আর্থিক সুবিধা অনেকটাই বেড়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য কাউকে এখন আর লাইনে দাঁড়িয়ে বিল পরিশোধ করতে হয় না।

মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আমরা এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে নগদ এজেন্ট কিভাবে নিতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি নগদ এজেন্ট নিতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সমস্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। নগদে হাজারে কত টাকা চার্জ কাটে তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। 

নগদ আমাদের জীবনযাপনকে অনেকটাই সহজ বানিয়ে দিয়েছে। মানুষ ঘরে বসেই নগদের সাহায্যে বিভিন্ন রকম সেবা গ্রহণ করে থাকে। যেমন বাচ্চাদের উপবৃত্তির টাকা, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং আরো নানারকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। আমাদের লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

আমাদের লেখা সম্পর্কে কোন মতামত জানানোর থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আপনি আমাদের ওয়েবসাইট টা নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করে থাকি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url