কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আপনি যদি জানতে চান যে কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শরীরের রোগ ব্যাধি প্রতিরোধ করতে সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। তাহলে চলুন জেনে নেই কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সঙ্গেই থাকুন।
ভূমিকা
সুস্থ থাকার জন্য সুষম খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। আমরা না বুঝেই অনেকে খাবার কমবেশি খেয়ে শরীর অসুস্থ করে ফেলি। শরীরে নানারকম রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধে। সঠিকভাবে খাবার না খেলে শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করি, ঘুম ভালো হয় না, শরীর অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে, মেজাজ খিটখিটে হয়। এর প্রভাব পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনে পড়ে।
শরীরের রোগ ব্যাধি প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের সঠিক খাবার খাওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আজকে আমরা কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সেই সাথে সাথে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ঔষধ, কোন গ্রুপের রক্তের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চলুন সবগুলো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ছোট বড় যেকোনো বয়সী মানুষেরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। এজন্য অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। যেগুলো থেকে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও প্রোটিন সহ অন্যান্য পুষ্টিগুণ হবে সেসব জিনিস বেশি করে খেতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা কোন ধরনের খাবার খাওয়ার জন্য বলেন।
আমলকি: আমলকি ভেষজ গুনে পরিপূর্ণ একটি ফল। বিভিন্ন রোগের ঔষধি ছাড়াও আমলকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাতে আমলকির ভেষজ গুণের জন্য এর নির্যাস ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিদ্যমান। বিশেষজ্ঞরা জানান একটি আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে পর্যায়ক্রমে তিন গুণ ও দশগুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
কমলালেবুর চেয়ে ২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ, আমের চেয়ে 24 গুন এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। গরম পানির সঙ্গে অথবা খালি পেটেও খাওয়া যায়। আমলকির রসও খেতে পারেন। আমলকি এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আদা: প্রতিদিন আদা চা খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। আদা আমাদের সুস্থতার জন্য বিভিন্ন ভাবে কাজ করে। আদাতে আন্টি অক্সিডেন্ট এবং এন্টি ইনফ্লামেশন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আদা আমাদের প্রায়ই সবার রান্না ঘরেই পাওয়া যায়। আদা গলা ব্যথা এবং বুকে জমা কফ থেকে মুক্তি দেয়।
গুড়: গুড় শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে। গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতায় ভীষণভাবে কার্যকরী। শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে গেলে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। যার ফলে বেশি শীত লাগে। গুড় খেলে আমাদের ফুসফুস পরিষ্কার থাকে। এটি শীতের সময় বেশি উপযোগী। শীতের নিয়মিত গুড় খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
নিম পাতা: নিম পাতার গুণাবলী সম্পর্কে আমরা কে না জানি। খালি পেটে নিম পাতা বেটে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এছাড়াও ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া রোধ করতে পারে। যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুনে বেড়ে যায়।
রসুন: প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রসুন ব্যবহার হয়ে আসছে। রসুন ক্যালসিয়াম, কপার, ফসফরাস, আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি, বি ১, রসুন, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন যা প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণ রোধ করতে পারে। এছাড়াও রসুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, হার্ট ও ফুসফুস ভালো রাখতে সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে রসুন খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
মধু: সকল ধরনের রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে মধুর গুণ অপরিসীম। মধুর প্রধান উপাদান হলো সুগার বা চিনি যা আমরা সরাসরি অনেকেই এড়িয়ে চলি। কিন্তু মধুতে গ্লুকোজ এবং ফ্রুটজ সরাসরি মেটাবলাইস্ট হয়ে যায় এবং চর্বি হিসেবে জমা হয় না। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অংশেই বেড়ে যায়।
লেবু: লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিদ্যমান। ভিটামিন সি শরীরকে সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এটি ওজন কমাতে সহায়ক। লেবু এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। আমাদেরকে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
হলুদ: আদিকাল থেকে হলুদ জীবাণু নাশক এবং রোগ প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাঁচা হলুদ এবং শুকনা হলুদের কারকিউমিন যৌগ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। কাঁচা হলুদের ভিটামিন সি রয়েছে। সুতরাং নিয়ম করে যদি কাঁচা হলুদ খাওয়া যায় এবং রান্নায় ব্যবহার করা যায় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, পনির এ জাতীয় খাদ্যদ্রব্যে ভিটামিন এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। এগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। কম চর্বিযুক্ত খাবার প্রবায়োটিক প্রোটিন এবং ভিটামিন সরবরাহ করে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়মিত খাওয়া উচিত।
মসলা জাতীয় খাবার: কিছু কিছু মসলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। যেমন হলুদ, লবঙ্গ, দারুচিনি, কালো মরিচ ইত্যাদি।
সবুজ শাকসবজি: সবুজ শাকসবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, সি, ই, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। এ সকল পুষ্টি উপাদান গুলো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আশা করছি কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেই সম্পর্কে আপনি মোটামুটি একটি ধারণা পেয়েছেন। আপনি যদি নিয়ম মেনে এই সকল খাবারগুলো খান তাহলে আশা করি আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কেন
আর্টিকেলের এই পর্বে আলোচনা করা হবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কেন তা নিয়ে। আপনি যদি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান তারপরেও আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন রকম ভাইরাসের আক্রমণে ঠান্ডা লেগে আপনার মাঝে অবস্থা হয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কেন।
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এর কারনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। স্ট্রেসের কারণে শরীরে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ অনেকটা বেড়ে যায়। যা শরীরে শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে ফেলে। ফলে আস্তে আস্তে শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। মন মেজাজ যদি ফুরফুরে থাকে তাহলেও বিভিন্ন রকম রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।
- বিভিন্ন রকমের প্রসেস ফুড শরীরের ভালো ব্যাকটেরিয়াকে আক্রান্ত করে নষ্ট করে ফেলে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। আপনার যদি প্রসেস ফুড খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে এখন এটা পরিহার করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একজন মানুষের প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টা নিয়ম করে ঘুমানো উচিত।
- ধূমপান বা মদ্যপান এর ফলে ও শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে।
আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কমে যায় তাহলে কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেগুলা জেনে নিয়ে সেই খাবারগুলো নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ খেতে থাকুন। তাহলে আস্তে আস্তে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়তে থাকবে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ঔষধ
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মানুষ নানা রকমের খাবার গ্রহণে এখন আগ্রহী হচ্ছে। কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেগুলো জেনে সেই খাবারগুলো যদি খাওয়া হয় তাহলে খুব সহজেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। তার পরেও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট ও সিরাপ রয়েছে যেগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
এই ধরনের ওষুধ খেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি ও মাল্টিভিটামিন খাওয়া যেতে পারে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট জাতীয় খাবার সামঞ্জস্য রেখে খেতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে শরীরে যেন প্রোটিন থাকে। শাকসবজি ও ভারসাম্য বজায় রেখে খেতে হবে।
তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি অনেকটাই কমে যায় তাহলে মাল্টিভিটামিন ওষুধের বিকল্প নেই। দিনের খাবার তালিকায় শাক-সবজি, ফলমূল, করলা, বাঁধাকপি, গাজর, টমেটো, ক্যাপসিকাম, মাশরুম ইত্যাদি রাখতে হবে। ফলের মধ্যে কমলালেবু, পেঁপে, কলা, আঙ্গুর, আম, তরমুজ ইত্যাদি খেতে হবে।
তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খাবার গ্রহণের পাশাপাশি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট ও সিরাপ খেতে পারেন। মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট ও সিরাপ একমাত্র ঔষধ।
কোন গ্রুপের রক্তের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি
আগে মানুষ রক্তের গ্রুপ পজেটিভ নাকি নেগেটিভ তা নিয়েই বেশি মাথা ঘামাতো। কিন্তু এখন কোন গ্রুপের রক্তের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তা নিয়ে মানুষ বেশি চিন্তা করছে। যাদের ও নেগেটিভ রক্ত তারা বড় ধরনের অসুখে আক্রান্ত হতে পারে।
তাই ও নেগেটিভ গ্রুপের মানুষকে আগে থেকে অতিরিক্ত সচেতন থাকতে হয়। কারণ ও নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম। শুধু নেগেটিভ বা পজেটিভ না এবি ও এবং এ, বি গ্রুপের উপর নির্ভর করে নানা রকম রোগ এবং রোগের প্রবণতা। চলুন জেনে নেই কোন গ্রুপের রক্তের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
- যাদের রক্তের গ্রুপ এবি বা বি তাদের হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে। আর যাদের রক্তের গ্রুপ ও তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
- যাদের রক্তের গ্রুপ ও তাদের আলসারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
- এ ও বি গ্রুপের ৩০% রক্ত জমাট বাধার সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর যাদের রক্তের গ্রুপ ও তাদের রক্ত জমার বাধা ঝুঁকে অনেকটাই কম। এবি রক্তের গ্রুপের রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি ২০%। রক্ত জমাট বাধার সমস্যা থেকে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
- ও গ্রুপের গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে। কিন্তু অন্যান্য রক্তের গ্রুপের বিশেষ করে এ গ্রুপের গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারে ঝুঁকি অনেক বেশি।
- ও গ্রুপের অগ্নাশয় এর ক্যান্সারের ঝুঁকি কম। অন্যদিকে এ গ্রুপের অগ্নাশয়ের ক্যান্সার এর ঝুঁকি ৩২ পার্সেন্ট এবং এবি গ্রুপের ক্যান্সারের সম্ভাবনা ৫১% ।
- এবি গ্রুপের শেষ বয়সে গিয়ে স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
- এ গ্রুপের মানসিক চাপ মোকাবেলার ক্ষমতা অনেক কম। এ গ্রুপের দেহে কলটিসোল হরমোন বেশি নিঃসৃত হয়। ও গ্রুপের দেহের কলটিসোল নিঃসরণ হয় কম। কিন্তু মানসিক চাপের সময় তাদের দেহে এড্রেনালিন নিঃসরিত হয়। যার জন্য তারা সিস্টেমে থাকা কোন পার্টিশন পরিষ্কার করতে পারে না। ফলে মানসিক চাপও মোকাবেলা করতে পারে না।
- যাদের রক্তের গ্রুপ বি তাদের দেহে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলো সবগুলোই উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী রাখে এবং বিপদজনক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। বি গ্রুপের দেহে ও গ্রুপের চেয়ে ৫০ হাজার গুণ বেশি ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। অর্থাৎ বি গ্রুপের হজম শক্তি বেশি হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক শক্তিশালী হয়।
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
বড়দের তুলনায় শিশুদের অসুখ বিসুখ প্রায়ই লেগেই থাকে। আজকের পর্বে আমরা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যেহেতু বাচ্চাদের অসুস্থতা সব সময় লেগেই থাকে। তাই তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অত্যন্ত জরুরী।
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সে সম্পর্কে আপনার পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। চলুন জেনে নেই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় কি।
বাচ্চা যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখন মায়ের শরীর থেকে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এর ফলে বাচ্চা জন্মানোর পরে কিছুদিন পর্যন্ত নানারকম রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা পায়। শিশু যে ধরনের অ্যান্টিবডি গ্রহণ করে তা মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে নির্ভর করে। তবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
তাই এক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে অনেক অভিভাবক প্রায় চিন্তায় থাকে। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি যত্ন সহকারে খেয়াল রাখতে হবে।
স্তন পান করান: শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তাকে স্তন পান করাতে হবে। মায়ের দুধে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন, ফ্যাট, শর্করা, অ্যান্টিবডি, প্রবায়োটিক্স রয়েছে। যা স্তন পানের সাহায্যে শিশুর শরীরে সরবরাহ হয়।
ভ্যাকসিন: নানা রকম রোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য শিশুকে অবশ্যই ভ্যাকসিন দিতে হবে। জন্মের পর থেকে শিশুদেরকে নানা রকম প্রতিষেধক দেওয়া হয়। যা তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি গড়ে তোলে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন: আপনার বাসায় যদি ছোট বাচ্চা থাকে তাহলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে সজাগ থাকুন। কারণ বাচ্চারা যে কোন জিনিস মুখে তুলে দেয় এবং সেগুলোর সঙ্গে খেলা করে। তাই ঘর দোর, বাচ্চার খেলনা, বিছানা, বালিশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। এছাড়া বাচ্চা একটু বড় হলে তাদের কোন কিছু খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করে তুলুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম: পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে শরীরে সাইটোকিন্স নামক প্রোটিন উৎপাদন কমে যায়। সাইটোকিন সংক্রমনের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করতে পারে। বাচ্চাদের দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুম তো জরুরী।
খাদ্য অভ্যাস ঠিক রাখুন: বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারে বারে পরিবর্তন হতে থাকে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। পুষ্টিকর উপাদানের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। যার ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। খাবার এবং পুষ্টিকর উপাদান বাচ্চাদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কোন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তা নিয়ে বিস্তারিত করেছি। আমাদের শরীরের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরী। এমন কিছু খাবারের কথা ওখানে উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খবরগুলো নিয়মিত খেতে পারেন।
আমরা সেই সাথে সাথে আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। লেখা সম্পর্কে কোন মতামত জানানোর থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানান। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url