গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন - সহবাসের সময় মাথা ব্যথা হয় কেন
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি জানতে চান গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। সেই সাথে আমরা সহবাসের সময় মাথা ব্যথা কেন হয় তা নিয়েও আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। তবে গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন সে বিষয়টি আজকে আপনাদের জানাতে চলেছি। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
ভূমিকা
মাথা ব্যথার সমস্যায় আমরা সবাই কম বেশি ভুগে থাকি। কিন্তু গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা একটু বেশিই হয়। কিন্তু কেন হয় এই গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা? গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন এই সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন আজকের আর্টিকেলে। গর্ভাবস্থায় যদিও মাথা ব্যথা তেমন জটিল কোন সমস্যা নয়। তারপরেও এটি একেবারেই হেলাই উড়িয়ে দেওয়ার মতো কিছু নাই।
বিষয়টি অবশ্যই সতর্কতার সাথে দেখা উচিত। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন, সহবাসের সময় মাথা ব্যথা হয় কেন, গর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যথায় করণীয়, মাথা ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা। এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। সবগুলো তথ্য জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন
গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। এটি গর্ভকালীন প্রথম দিকে গর্ভবতী মাকে একটু বেশি কষ্ট দিয়ে থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে মাথা ব্যথা সেরে যায়। প্রথম এবং তৃতীয় মাসের মাথা ব্যথা খুবই সাধারণ একটি বিষয় যতক্ষণ না পর্যন্ত অন্যান্য উপসর্গগুলি মাথাব্যথার সাথে যোগ হয়। উপসর্গগুলি নিম্নে তুলে ধরা হলো।
- মাথা ব্যাথার পাশাপাশি জ্বর ও বমি হলে।
- যদি মাথা ব্যাথার কিছু সময় পরে ব্যথা না কমে আরো বেড়ে যায় তাহলে।
- মাথা ব্যথার জন্য যদি চোখে ঝাপসা দেখে এবং বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
- চোখ অথবা নাক দিয়ে রক্তপাত হলে।
গর্ভাবস্থায় সাধারণত মাথা ব্যাথা হলে কপালের দুই পাশ, মাথার পিছন অথবা চোখের পিছনে টিমটিম করে ব্যথা হতে পারে। মাইগ্রেনের কারণে যে মাথা ব্যাথা হয় তার তীব্র ব্যাথা হতে পারে এবং কখনো কখনো এটি ঘাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা করতে পারে। এই সময় হরমোনাল পরিবর্তন হতে থাকে যা মাথাব্যথা বাড়াতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে মাথা ব্যাথা খুবই সাধারণ কারণ এই সময়ে প্রজেক্টেরঅন জরায়ুর পেশি গুলোকে এবং মস্তিষ্কের রক্ত নালীগুলোকে শিথিল করে ফেলে। এই কারণে রক্ত শিরার মাধ্যমে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ফলে বারবার মাথাব্যথা হয়। গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন এর কিছু বিশেষ কারণ নিম্নে আলোকপাত করা হলো।
রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলেঃ গর্ভাবস্থায় শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির হয়। যার ফলে সাইনাসের উপরে চাপ পড়ে। সাইনাস থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলেঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমালে মাথাব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
পানি শূন্যতা দেখা দিলেঃ গর্ভাবস্থায় যেহেতু বমি বমি ভাব হয় তাই গর্ভবতী মা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে চান না। এর ফলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং তা থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে।
অনেক সময় না খেয়ে থাকলেঃ গর্ভবতী মা যদি অনেকটা সময় না খেয়ে থাকে এবং ক্ষুধা লাগে তাহলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে যায় যা থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে।
হরমনের তারতম্যের কারণেঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনের ওঠানামা চলতেই থাকে। আর হরমোনের উঠানামার কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে।
দুশ্চিন্তার ফলেঃ গর্ভাবস্থায় নানা রকমের দুশ্চিন্তা হতে পারে। তা থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি এবং শারীরিক পরিবর্তনঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের ওজন আনুপাতিক হারে অনেকটাই বেড়ে যায়। ওজন বৃদ্ধি এবং শারীরিক পরিবর্তন কাধ এবং ঘাড়ের উপরে চাপ বাড়ায় ফলে মাথা ব্যাথা হয়।
উচ্চ রক্তচাপের ফলেঃ উচ্চ রক্তচাপ মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। এ ধরনের মাথাব্যথা গর্ভধারণ 22 সপ্তাহ পরে দেখা দেয়। আপনি যদি এই সময় হঠাৎ করে ব্যথা অনুভব করেন যা আগে কখনো হয়নি তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সহবাসের সময় মাথা ব্যথা হয় কেন
আমাদের মধ্যে অনেকেই গুগলে এসে সার্চ করে থাকেন যে সহবাসের সময় মাথা ব্যথা কেন হয়। মাথাব্যথা তো প্রায়ই সবারই রয়েছে। কিন্তু তাই বলে সহবাসের সময় মাথাব্যথা? বিষয়টা একটু কেমন তাই না! হ্যাঁ, সহবাসের সময় মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে এটা তেমন কোন দুরারোগ্য অসুখ নয়। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সেক্সচুয়াল হেডেক বলা হয়।
অন্য কথায় প্রাইমারি কটাল হেডেক নামে পরিচিত। একে অর্গাজম হেডেক ও বলা হয়ে থাকে। এ ধরনের মাথাব্যথা সহবাসের পর পরই হয়ে থাকে। এর সাথে মাইগ্রেনের কিছু সম্পর্ক রয়েছে। মস্তিষ্কের স্নায়ুর উদ্দীপনায় মস্তিষ্কের রক্ত বাহিকা গুলো ফুলে ওঠে ফলে মাথা ব্যথা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাথার দিকে এবং এক তৃতীয়াংশ জুড়ে মাথা ব্যথা হয়।
অনেকটাই আধকপালের মত। যৌন উত্তেজনার হেডেকের ক্ষেত্রে উদ্দীপনার কাজ করে। আর তাতেই মাথাব্যথা শুরু হয়। প্রথম প্রথম অর্গাজমের পরে হয়। আর যখন এটি ডালপালা মেলতে থাকে তখন তা সহবাসের শুরুতেই শুরু হয় এবং সহবাসের শেষেও তা মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়। যৌন উত্তেজনার সময় হৃৎস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি অসম্ভব বেড়ে যায়। সঙ্গে রক্তচাপ ও বেড়ে যায়।
প্রায় দ্বিগুণ হয়ে পড়ে। তখনই মাথার ভেতর থাকার রক্ত বাহিকা গুলো ফুলে ওঠে। যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। অনেকের এই ব্যথাটা মাথার পিছন দিক দিয়ে ঘাড়ের দিকে হয়। মাথার নিচে শুধু ঘরের দিকেও হতে পারে। এর সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হলো সহবাসের পজিশন চেঞ্জ করে নেওয়া। এতে করে ব্যথা অনেকটাই কমে। এই মাথাব্যথা কমানোর জন্য যথাযথ রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত জরুরি।
মাথাব্যথা কারণ যে মস্তিষ্কের কোন টিউমার বা রক্তবাহিকার অস্বাভাবিক ফুলে ওঠা কিংবা সাব আরাকনয়েড হেমারেজ নয় এবং এমআরআই করে নিশ্চিত করতে হবে। যদি কয়টাল হেডেক ধরা পড়ে তাহলে ওষুধ খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। অবশ্য কারো কারো ক্ষেত্রে বিনা চিকিৎসায় সেরে উঠে। মাথা ব্যথা যদি বেশি হয় তাহলে ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট সহ্য না করাই বিচক্ষণতা।
গর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যথায় করণীয়
প্রিয় পাঠক, আপনারা আগেই জানতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন। আমরা এ পর্যায়ে আলোচনা করব গর্ভবতী মায়ের মাথাব্যথায় করণীয় কি। গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথার সাধারণ চিকিৎসা হিসেবে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। এগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে ওষুধ ছাড়ায় মাথা ব্যথা সেরে উঠবে।
তাহলে ওষুধ খেতে পারেন তবে তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথা মোকাবেলার প্রধান উপায় হচ্ছে মাথাব্যথার কারণ গুলো এড়িয়ে চলা। চলুন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় ঘরোয়া ভাবে মাথাব্যথা কমাতে কি কি করবেন।
মাথায় ঠান্ডা সেক দিনঃ হালকা মাথাব্যথা হলে মাথায় ঠান্ডা শেক দিলে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। এজন্য বরফের টুকরা একটি তোয়ালে বা গামছার মধ্যে পেঁচিয়ে নিয়ে বিছানায় শুয়ে সেটি কপালের উপরে রাখুন। অথবা ফার্মেসি থেকে কল্ড প্যাক কিনে সেটিও কপালে দিয়ে রাখতে পারেন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খানঃ অতিরিক্ত গরম কিংবা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে গিয়ে পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার না খেলেও পানি শূন্যতা হতে পারে। এ থেকে মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।
তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এবং তরল খাবার খাওয়া উচিত। একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি খাওয়া উচিত এবং গ্লাসের হিসেবে মোট আট থেকে ১২ ক্লাস পানি খেতে হবে।
অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকবেন নাঃ একটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে মাথা ব্যথা শুরু হয়। তাই রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়মিত পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খাওয়া জরুরী।
পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিনঃ গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য একজন গর্ভবতী মায়ের পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। রাতে অন্ততপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ভালোভাবে ঘুমাতে হবে। প্রয়োজনে দিনের বেলাতেও এক দুই ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে। এছাড়াও যদি মাথা ব্যথা হয় তাহলে অন্ধকার এবং কোলাহলমুক্ত জায়গায় শুয়ে থাকুন এবং কাজ করতে থাকলে কিছুক্ষণের জন্য চোখ বন্ধ করে রাখুন। এতে মাথা ব্যথা অনেকটাই কমে।
ক্যাফেইনযুক্ত খাবার এবং পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুনঃ অতিরিক্ত চা-কফি এবং ক্যাফেইনযুক্ত খাবার খেলে মাথা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তবে আপনার যদি আগে থেকেই ক্যাফিনযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে হুট করেই তা বন্ধ করে না দিয়ে আস্তে আস্তে কমিয়ে আনার অভ্যাস করুন।
দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুনঃ গর্ভাবস্থায় দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করুন। কারণ এড়িয়ে চলতে পারলে মাথা ব্যথা দূরে রাখা যায়। এজন্য চেষ্টা করবেন যদি মাথার মধ্যে কোন কিছু ঘুরপাক খেতে থাকে তাহলে আপনার পছন্দমত যে কোন কাজে মনোযোগ দেন। পরিবার কারো সাথে দুশ্চিন্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। গর্ভাবস্থায় কিছু যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশনের সাহায্যে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের রাখতে পারেন।
আলো বাতাস পূর্ণ খোলামেলা ঘরে থাকুনঃ জানালা বিহীন এবং অতিরিক্ত গরম ঘরে থাকলে মাথাব্যথা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো বাতাস পূর্ণ এবং খোলামেলা বাসায় থাকার চেষ্টা করুন। সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত প্রতিদিন আশেপাশের খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
মাথাব্যথা হতে পারে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুনঃ আপনি যদি জানতে পারেন যে কিছু নির্দিষ্ট জিনিস থেকে আপনার মাথা ব্যথা হচ্ছে তাহলে সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি অনেক ক্ষেত্রেই মাথা ব্যাথা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারেন।
ঔষধঃ গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথা চিকিৎসায় প্রধান ওষুধ হল প্যারাসিটামল। এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ওষুধ। যা ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী খাওয়া যায়। এছাড়া যদি প্যারাসিটামলে কাজ না হয় তাহলে অন্য কোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কান্না করলে মাথা ব্যথা করে কেন
কান্না খুবই স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক একটি ঘটনা কান্না আপনার আবেগ বাইরে বের করে নিয়ে আসার একটি প্রাকৃতিক উপায়। বিভিন্ন কারনে মানুষ কান্না করতে পারে। যেমন আবেগের বশবর্তী হয়ে, কেউ সিনেমা দেখে আবার কেউ খুশিতেও কেঁদে ফেলে। তবে চোখের পানি বের হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি লক্ষণ প্রকাশ পায়।
যেমন চোখ লাল হয়ে যাওয়া, সর্দিতে নাক বন্ধ হওয়া, মুখ লাল হয়ে যাওয়া এবং তীব্র মাথাব্যথা হওয়া। অনেকেই জানতে চায়ে থাকেন কান্না করলে মাথা ব্যথা করে কেন। বিজ্ঞানীরা বলেন কান্না করলে মস্তিষ্কে চাপ এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। কান্না করলে দেহে করোটিসল হরমোন নিঃসরণ হয় যা মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার কে উদ্দীপিত করতে পারে।
এর ফলেই কান্না করার পর মাথা ব্যথা করে। আর এক গবেষণা থেকে জানা যায় পেঁয়াজ কাটার পরে কিংবা কোন আনন্দের সংবাদ শুনে কাঁদলে তখন মাথা ব্যাথা হয় না। তবে আপনি যদি রাগ প্রকাশ করেন তখন মাথা ব্যথা হয়। তবে অতিরিক্ত কান্না করার পর মাথা ব্যথা বেশ অস্বস্তিতেই ফেলে দেয়।
তাৎক্ষণিকভাবে এই মাথা ব্যথা কমানোর জন্য আপনি ঘাড়ে এবং চোখে গরম কিংবা ঠান্ডা সেদ দিতে পারেন, আদা চা খেতে পারেন, বেশি করে পানি খেলে মাথা ব্যথা কমে, ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন- বাদাম, ডার্ক চকলেট কিংবা কলা খেতে পারেন।
মাথা ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা
মাথা ব্যথার নির্দিষ্ট কোন কারণ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং মানসিক চাপের ফলে মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া ল্যাপটপ এর সামনে বসে কাজ করলে মাথা ব্যথা হয়। কোন শারীরিক সমস্যা নিয়ে কাজ করা খুব একটা সহজ কথা নয়। মাথা ব্যথা হলে ল্যাপটপ, কম্পিউটারের দিকে তাকাতে ইচ্ছা করে না। ফোনে কথা বলতে ইচ্ছা করে না।
কোন কিছুই ভালো লাগে না। অনেকে মাঝে মাঝে ঔষধ খান, কেউ ঘন ঘন চা খান। তবে এগুলো কোন অভ্যাসে কিন্তু শরীরের জন্য ভালো নই বরং কিছু ঘরোয়া টোটকা অবলম্বন করে আপনি মাথা ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পারেন। যেমন-
- শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই সবসময় নিজেকে হাইড্রেট রাখুন। প্রতিদিন নিয়ম করে আট গ্লাস পানি খান। এছাড়াও ডাবের পানি, জুস এগুলো খেতে পারেন। চা-কফি যত কম খাবেন ততই ভালো।
- শরীর সুস্থ রাখার জন্য খনিজ এবং ভিটামিন এর গুরুত্ব অনেক। তাই সবসময় চেষ্টা করেন সুষম খাবার খেতে। অনেক সময় অপুষ্টি থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই অনেক সময় না খেয়ে থাকা যাবে না। এতে করে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় এবং মাথাব্যথা হয়।
- প্রতিদিন নিয়ম মেনে ঘুমানো উচিত। রাতে অন্তত ৭- ৮ ঘণ্টা ঘুমান। ঠিকমতো না ঘুমালে কোন সমস্যার সমাধান হয় না। এতে সমস্যা বাড়তে থাকে। মানসিক চাপ শরীরের উপরে বিভিন্ন রকম প্রভাব পড়ে। অতিরিক্ত উত্তেজনা এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলা উচিত।
- প্রতিদিন যদি মাথা ব্যথার সমস্যা হয় তাহলে মাথা মেসেজ করুন। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয় স্নায়ুর চাপ কমে এবং মেসেজের সময় রিলাক্সিং কোন মিউজিক শুনতে পারেন। সঙ্গে ঘরের আলো কমিয়ে রাখুন। সবার সাথে মন খুলে কথা বলুন। এতে মানসিক চাপ কমবে এবং মন ভালো থাকবে। ফলে মাথা ব্যথা অনেকটা কমে আসবে।
- রান্নাঘরের কিছু মসলা ও আপনার মাথা ব্যথা কমাতে পারে। যেমন আদা, লবঙ্গ, দারুচিনি ইত্যাদি। দারুচিনি র গন্ধ স্নায়ুর ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। আদতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরে বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
মন্তব্য
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা করে কেন বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি হয়তো আর্টিকেলটি পড়ে এ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। পাশাপাশি আমরা সহবাসের সময় মাথা ব্যথা কেন হয়, গর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যথায় করণীয়, মাথা ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা। এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আমাদের লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের লেখা সম্পর্কে কোন মতামত জানানোর থাকলে কমেন্ট করে জানান। এরকম আরো তথ্যবহুল পোস্ট নিয়মিত করার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url