গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্এটিকেলের মূল বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি। গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। তবে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি তা আপনাদের জানতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করার জন্য লিগামেন্ট নরম এবং ঢিলাঢালা হয়ে যায়। ফলে কোমরে ব্যথা হয়। আজকে আপনারা জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে কি কি করতে হবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ভূমিকা

একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হল মা হওয়া। সে যদি জানতে পারে যে সে মা হতে চলেছে তাহলে তার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হয় না। কিন্তু এ সময়ে একজন গর্ভবতী নারীর অনেক রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। তার মধ্যে কোমরে ব্যথা অন্যতম। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে কোমর ব্যথা বেশি হয়। 

আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি এ বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করব। গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি বিষয়টি বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন।

গর্ভাবস্থায় বুকে পিঠে ব্যথা

গর্ভবতী মহিলারা পিঠের নিচের ভাগে সব সময় ব্যাথা অনুভব করেন। আবার কিছু কিছু মহিলা পিঠের উপরে ব্যথা অনুভব করে। এমনকি হাড় কিংবা কাঁধে অথবা দুই জায়গাতে ব্যথা হতে পারে। ডাক্তাররা বলেন গর্ভবতী মায়েরা এ অবস্থায় নিস্তেজ শক্তিহীন থাকে যা আস্তে আস্তে তার কর্ম ক্ষমতা কে কমিয়ে দিতে পারে। 

যেসব মেয়েরা সারাদিন দাঁড়িয়ে কাজকর্ম করে থাকে তাদের ক্ষেত্রেই ব্যথা দিন দিন বাড়তেই থাকে। গর্ভাবস্থায় বুকে পিঠে ব্যথা যে কোন সময় বাড়তে পারে। তবে এটি সাধারণত গর্ভাবস্থায় প্রথম থেকে তৃতীয় মাসে বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ সময়ই পিঠের উপরে দিকে ব্যথা অনুভব করে থাকেন। ব্যথার প্রথম কারণ হচ্ছে হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং দ্বিতীয় কারন তীব্রতর মানসিক চাপ। এ সময় স্তনের আকার অনেকটা বৃদ্ধি পায় এবং গর্ভবতী শরীরের সেন্টার অফ গ্রাভিটি পাল্টে যায়। এই কারণেই গর্ভাবস্থায় পিঠের উপরের দিকে এবং বুকে ব্যথা হয়।
গর্ব অবস্থায় পিঠের ব্যথার অনেকগুলি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি কারণ হচ্ছে হরমোনের পরিবর্তন এবং মানসিক চাপ। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে রিলাক্সিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা গর্ভবতীর শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শারীরিক ব্যথা এবং যন্ত্রণা হতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের জন্য লিগামেন্ট এবং পেশী শিথিল হয়ে যায়। যার ফলে অতিরিক্ত ব্যথা হয়। কিছু কিছু ব্যথা স্তনের ও বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য হয়। স্তনের প্রস্থ বৃদ্ধি বুকের ওজন বাড়িয়ে দেয়। শারীরিক ভঙ্গি পরিবর্তন করে এবং পিঠের উপরের দিকে পেশির কার্যকলাপ এবং ক্লান্তি অনেকটাই বেড়ে যায়। 

আবার জরায়ুর পরিবর্তন, ওজন বৃদ্ধি এগুলো কারণে ও গর্ভাবস্থায় পিঠে এবং বুকে ব্যথা হতে পারে এবং খিচুনি দিতে পারে। জরায়ু যেহেতু ভেতরের দিকে এবং বাইরের দিকে প্রসারিত হয় ফলে শরীরে সেন্টার ওব গ্রাভিটিভ অনেকটাই পাল্টে যায়। এ কারণেই গর্ভাবস্থায় বুকে পিঠে ব্যথা হয়।

গর্ভাবস্থায় বুকের নিচে ব্যথা

গর্ভাবস্থায় বুকের নিচে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। গর্ভাবস্থায় বুকের নিচে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। কারণ গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে বুকের ব্যথা শরীর সংগঠিত পরিবর্তন গুলির সঙ্গে প্রকাশ করে। চলুন গর্ভাবস্থায় বুকের নিচে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক।

বদ হজমঃ যখন একজন গর্ভবতীর তৃতীয় মাস চলে বা গর্ভাবস্থার ২৭ তম সপ্তাহ চলে তখন বুকে ব্যথা সর্বাধিক হয়। এর কারণ সম্ভবত বদ হজমের সমস্যা গুলি গ্যাস যখন পেট এবং বুকের মধ্যে জমে থাকে তখন হয়।

বুক জ্বালাঃ আর সাধারণত প্রোজেস্টেরন হরমোনের জন্য বুক জ্বালা হতে পারে। এই হরমোনটি ইসোফেগাল স্পিকটার শিথিল করে পেটের এসিড গুলি উপরে উঠে যায়। ফলে প্রচন্ড বুক জ্বলা এবং বুকে ব্যথা হয়।

পেশীর ব্যথাঃ পেটের মধ্যে যেহেতু শিশু আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে এ কারণে বুকের দিকে পেশি এবং লিগামেন্ট গুলির ওপর চাপ বাড়তে থাকে। ফলে বুকে ব্যথা হতে পারে। এটি খুবই স্বাভাবিক।

মানসিক চাপঃ মানসিক চাপ মাংসপেশির উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি বুকের ব্যথা বাড়াতে পারে।
স্তনের আকার পরিবর্তনঃ গর্ভাবস্থায় যেহেতু স্তনের আকার পরিবর্তন হয় তাই বুকের প্রাচীরের পেশী এবং জয়েন্ট গুলোতে চাপ পড়ে। যার ফলে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। একটি ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি জনিত সমস্যাঃ গর্ভাবস্থায় যদি হাঁপানি থাকে তবে থেকে আপনার শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথা হতে পারে।

ডিপ ভেইন থ্রম্বসিসঃ ডিভিটি হচ্ছে শিরা এবং ধমনীতে রক্ত জমাট বেধে যাওয়া এবং সাধারণত পা বা পেলভিসে এটি ঘটে থাকে। জমাট বাধা রক্ত আপনার দেহ ঘুরে ফুসফুসে চলে যেতে পারে। যার ফলে পালমোনারি এমবোলিজম হয়। এটি একটি প্রাণঘাতী অবস্থা এবং এটি গর্ভবতী মহিলাদের বুকে তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। এর শেষ পরিণতি হিসেবে মৃত্যু হতে পারে।

হৃদপিন্ডে হঠাৎ আক্রমণঃ গর্ভবতী যদি বুকের বাম দিতে ব্যথা অনুভব হয় এবং অস্বস্তি বোধ হয় তবে এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ হতে পারে। এর মধ্যে অন্যান্য লক্ষণ গুলো হচ্ছে শরীর অবশ হয়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া, হালকা মাথাব্যথা ইত্যাদি।

জন্মগত হৃদরোগঃ যদি জন্মগত হৃদরোগ থেকে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় বুকে ব্যথার কারণ এটিও হতে পারে। হৃদরোগে পারিবারিক ইতিহাস জানা অত্যন্ত জরুরী।

করোনারী হার্ট অ্যাটাকঃ ধমনীতে যদি চর্বি জমা হয় তাহলে ধমনী গুলো সংকীর্ণ হয়ে আসে রক্তের প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করে ফেলে এবং এর ফলে বুকে ব্যথা হয়। এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে আপনাকে ফেলতে পারে।

মহা ধমনীর ব্যবচ্ছেদঃ মহা ধমনীর প্রাচীর ছিড়ে গেলে স্তর গুলোর মধ্যে রক্ত জমে যায়। ফলে ব্যবচ্ছেদ ঘটে। যা গর্ভাবস্থায় বুকেও তীব্র বাধা সৃষ্টি করে। গর্ভাবস্থায় এই অবস্থার ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।

গলস্টোনগুলিঃ গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় অনেক দেরিতে বুকে এবং তলপেটে ডান দিকে ব্যথা অনুভব করে তাহলে এটি পিত্তথলির কারণে হতে পারে। ইস্ট্রোজেন হরমোন বেড়ে যায় এবং গর্ভবতী মহিলাদের এই অবস্থার জন্য খুবই সংবেদনশীল করে তোলে।
আশা করছি গর্ভাবস্থায় বুকের নিচে ব্যথা হওয়ার কারণ গুলি সম্পর্কে আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি উপরে উক্ত কোন কারণ বুঝতে পারেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু ব্যথা

গর্ভাবস্থায় মেয়েদের পেটে ব্যথা জরায়ু ব্যথা এগুলো খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। কারণ এই সময় নারীর দেহে অনেক অঙ্গের পরিবর্তন ঘটে, আকার বড় হয়, লিগামেন্ট টানটান হয়ে যায়, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে মর্নিং সিকনেস দেখা দেয়। কিন্তু যখন এই ব্যথাগুলো অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় তখন অবশ্যই এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। 

গর্ভাবস্থায় জরায়ু ব্যথা হওয়ার নানা রকম কারণ রয়েছে। এই কারণগুলো সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এ কারণগুলো সম্পর্কে আমরা যদি না জানি তাহলে এর প্রতিকার করা সম্ভব নয়। তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে গর্ভাবস্থায় জরায়ু ব্যথা হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে জানাব। জরায়ুতে যে সকল কারণে ব্যথা হয় তার মধ্যে কিছু ঝুঁকিময় কারণ রয়েছে এবং কিছু কারণ আছে যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। এখন আমরা যে সকল ঝুঁকিপূর্ণ কারণ গুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

ইউরিনারি ট্র্যাকট ইনফেকশনঃ প্রেগনেন্সি যখন ছয় সপ্তাহ চলে যায় তখন ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন এর ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রসবের সময় জ্বালাপোড়া, তলপেটে চাপ বাড়বে, প্রসাব হওয়া এই সমস্যাগুলো হয়। জরায়ুর ওজন বাড়তে থাকলে তা ব্লাডারে চাপ দেওয়ার ফলে প্রসাব ঠিকমতো বের হতে পারেনা। ফলে ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। যদি সময়মতো সাবধানতা অবলম্বন না করেন তাহলে এর প্রভাব কিডনির উপরে পড়বে। ফলে সময়ের আগে প্রসব ব্যথা শুরু হবে এবং অস্বাভাবিক কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করবে।

মিস ক্যারেজ হলেঃ সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে মিস ক্যারেজ বেশি হয়। আট সপ্তাহের মধ্যে যদি ব্যথা হয় তাহলে তা মিস ক্যারেজের লক্ষণ হতে পারে।

আগের সিজারিয়ান সেকশনের ব্যথাঃ যদি আগে সিজার করা থাকে এবং পরে আবার গর্ভবতী হয় তাহলে গর্ভধারণের শেষের দিকে জড়ায়ুতে ব্যথা হতে পারে। আগে সেলাই যদি ঠিকমতো দেওয়া না হয় তাহলে কাটা জায়গায় ব্যথা হয়। অনেক সময় জরায়ু বড় হতে হতে সেটা ফেটেও যেতে পারে। তাই আগে যদি সিজার করে থাকে তাহলে পরেরবার গর্ভধারণের সময়ে প্রচুর সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সামান্য ব্যথা কেউ অবহেলা করা উচিত নয়।

প্রসব বেদনাঃ অনেকের ক্ষেত্রে 37 সপ্তাহের আগেই প্রসব ব্যথা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে তলপেট ও পিঠে ব্যথার পাশাপাশি ইউটেরাইন কন্টাক্ট শন্স আর রক্তপাত, পানি ভাঙ্গা এগুলো দেখা দেয়। পিরিয়ডের সময় যেমন ব্যাথা হয় তেমন ব্যথা হতে পারে।

একটপিক প্রেগনেন্সিঃ জরায়ুর বাইরে বিশেষ করে ফ্যালোপিয়ান টিউবে ও ভুল বড় হতে পারে। যদি আপনি টেস্ট করে জেনে থাকেন যে আপনি গর্ভবতী এবং পেটে ব্যথা হয় তাহলে একটপিক প্রেগনেন্সি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে আলট্রাসাউন্ড করে নিশ্চিত হওয়া জরুরী।

প্লাসেন্টা ফেটে যাওয়াঃ প্লাসেন্টা হচ্ছে গর্ভের শিশুর জন্য অক্সিজেন এবং পুষ্টির প্রধান উৎস। এটা জরায়ুর উপরের স্তরের সাথে যুক্ত থাকে ও শিশুর জন্মের পর এটা আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মাথায় প্লাস থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারে। 

জাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে জরায়ু শক্ত হয়ে যায় এবং কালো লাল রঙের রক্ত বের হতে থাকে যোনি দিয়ে। যা সহজে জমাট বাঁধে না এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজন হলে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চাকে জন্ম দেওয়া হবে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা কেন হয়? শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। যার মধ্যে তলপেটে ব্যথা একটি। গর্ভাবস্থায় তলপেট ব্যথায় প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে ওজন বৃদ্ধি এবং স্তনের পরিবর্তন অন্যতম। গর্ভাবস্থার যত দিন যায় সাথে সাথে বাচ্চা বড় হতে থাকে। যা আশেপাশের অঙ্গ এবং টিস্যুতে চাপ সৃষ্টি করে। 

লিগামেন্ট গুলোতে টান পড়ে। যার ফলে তলপেটে ব্যথা হয়। হরমোনাল পরিবর্তনের কারনে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় রিলাক্সিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা পেলভিক অঞ্চলের লিগামেন্ট এবং জয়েন্টগুলোকে নরম করে দেয়। এটি গর্ভবতী মায়ের শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করে। এর ফলে ব্যথা তৈরি হয়। 
প্রথম ত্রৈমাসিকে ইমপ্লান্টেশন ট্রাম্প এর কারণে তলপেটে ব্যথা হয়। একটপিক গর্ভধারণের কারণে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। রাউন্ড লিগামেন্টের কারণে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। পেলভিক গার্ডল এর ব্যথা শেষের দিকে দেখা যায়।

এছাড়াও তলপেটে ব্যথা হওয়ার আরো কিছু কারণ রয়েছে। যেগুলো গর্ভাবস্থায় সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোনাল পরিবর্তন, মূত্রনালী এর সংক্রমণ ও পেটে গ্যাস জমা থাকা, এগুলোর কারণে ও তলপেটে ব্যথা হতে পারে

গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয়

প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি। আর্টিকেল এর এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথায় করণীয় কি সে বিষয়টি সম্পর্কে জানাব। গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। একজন গর্ভবতী মহিলার কাছে সমস্যার কথা প্রায় শুনতে পাবেন। 

গবেষণায় দেখা যায় প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন নারী এই গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথায় ভুগে থাকে। এ সমস্যাটি বেশিরভাগ সময় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে দেখা যায়। মায়ের জরায়ুর যে পাশে সন্তান অবস্থান করে সে পাশে ব্যথা বেশি হয়। গর্ভধারণের প্রথম থেকেই প্রোজেস্টেরন ও রিলাক্সিন হরমোন সন্তান জন্মদানের জন্য মায়ের শরীরকে প্রস্তুত করতে বিভিন্ন জয়েন্ট এবং লিগামেন্টের নরম এবং ঢিলা করে দেয়। 

গর্ভবতীর শরীর অস্থিতিশীল হয়ে যায় এবং জয়েন্টের ভার্বোহন ক্ষমতা অনেক কমে যায়। গর্ভবতী বিভিন্ন সময় ব্যথা অনুভব করে। যেমন- হাটার সময়, বসে থাকলে, ওঠার সময় বা কোন কিছু তোলার সময়। একজন গর্ভবতীর শরীরে এই সময় ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যায়। এই সময় শরীরে পেশী এবং জয়েন্ট এর উপর বেশি চাপ পড়ে। সেজন্য গর্ভাবস্থায় কোমরে ব্যথা হয়। 

নারীর পেলভিসে এক জোড়া লিগামেন্ট থাকে যেগুলোকে রাউন্ড লিগামেন্ট বলে। এগুলো সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সহায়তা করে। গর্ভধারণের আগে লিগামেন্ট গুলো অনেকটা পুরু এবং ছোট আকারের থাকে কিন্তু গর্ভধারণের পর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিগামেন্ট গুলো রাবার ব্যান্ডের মত প্রসারিত এবং পাতলা হয়ে যায়। এর ফলে legement গুলো টানটান হয়ে যায়। 

হঠাৎ করে যদি এর উপরে কোন চাপ পড়ে তাহলে ব্যথা হতে পারে। এ ধরনের ব্যথাকে রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন বলা হয়। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে কোমরের ব্যথা হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে সায়াটিকা নার্ভের উপরে অতিরিক্ত চাপ। গর্ভাবস্থায় জরায়ু অনেকটাই বড় হয়ে যায় এবং এর চাপ শরীরে দুটি সায়াটিকা এর উপরে পড়ে। তখন কোমর, নিতম্ব বা উরুতে ব্যথা হয়। 

এ ধরনের ব্যথা কে সায়টিকা বলা হয়। এ ব্যথা কোমরে এবং কোমরের উপরে পিঠের মাঝ বরাবর হয়ে থাকে। কখনো কখনো পায়ের দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে এরকম মনে হয়। আরো কিছু কিছু কারণে ব্যথা বাড়তে পারে। যেমন দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা বা ভারি কিছু তুললে। রাতের বেলায় বেশি ব্যথা হয়। গর্ভাবস্থায় সায়াটিকার ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তারপরেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর বাধা হলে করণীয় কি। গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা দূর করতে আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম হচ্ছে সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো কিংবা হাঁটা। কিন্তু ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। স্ট্রেচিং করতে পারেন। এতে আপনি স্বস্তি পাবেন। 

ব্যায়ামের সময় নিজের শরীরের কথা শুনতে হবে। আর যদি ব্যায়াম করতে আপনার অসুবিধা হয় তাহলে ব্যায়াম করা বন্ধ করে দিন। কোমরের যে স্থানে ব্যথা সেখানে ঠান্ডা এবং গরম সেঁক দিতে পারেন। বসার সময় অবস্থান ঠিক করে বসুন অর্থাৎ সোজা হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করুন। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। দাড়ানোর সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ঘাড় যেন পেছনের দিকে থাকে। 

যদি বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাহলে মাঝে মাঝে বসে বিশ্রাম নিন। আর একটা কথা ভারি জিনিস তোলা যাবে না। গর্ভাবস্থায় সব সময় বাম পাশ ফিরে শোয়ার চেষ্টা করুন। ঘুমানোর সময় দুই পায়ের মাঝে বালিশ দিন এবং পেট বা পিঠের দিকে বালিশ দিয়ে সাপোর্ট দেন। এতে করে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। আশা করছি, গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যাথা হলে করণীয় সম্পর্কে আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।

শেষ কথা

গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি স্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলাফল। তবে কোন উদ্বেগ জনক লক্ষণ যদি দেখা দেয় তাহলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় যেগুলো রয়েছে সেগুলো অবশ্যই ট্রাই করা উচিত। যদি তাতেও কোন কাজ না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

আশা করছি, আপনি গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে কোমর ব্যথা হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। তাছাড়াও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url