হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয় বিস্তারিত জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয় এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমান সময়ে হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ অভিভাবকদের মধ্যে অনেক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ
এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের নানা জায়গায় ক্ষত হয়ে থাকে। হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের দেশে কিছু কিছু রোগের আবির্ভাব ঘটে। এর মধ্যে হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ একটি। এটিকে অনেকে জল বসন্ত মনে করেন। কারণ উপসর্গগুলো জলবসন্তের মতো। 
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয়, হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিসিস খাবার, হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ লক্ষণ সহ আরো আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন দেরি না করে হ্যান্ড ফুড এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয়

ঋতু চেঞ্জ এর সময় আসলে বাচ্চাদের মধ্যে নানা রকমের সংক্রমক রোগ দেখা যায়। তার মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় সকল এলাকাতে হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ ছড়িয়ে পড়ছে। যেহেতু শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তাই অভিভাবকরা খুব চিন্তায় পড়ে যাচ্ছেন। ভাইরাস আক্রমণের ফলে এই রোগটি হয়। তবে এ রোগটি খুবই সংক্রমাত। 
প্রধানত শিশুদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। কিন্তু যে কোন বয়সের মানুষও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কক্সাকি নামক এক ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ হয়। এটি তেমন কোন মারাত্মক রোগ নয় এবং জীবনহানির কোন ঝুঁকি নেই।
  • আমার সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির ফোসকা থেকে নিঃশ্বাস, রস, হাঁচি,কাশি, পোশাক, স্পর্শ করা যে কোন জিনিস, এমনকি মলের মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে।
  • জনসমাগম যেখানে বেশি সেখান থেকে এই রোগ বেশি ছড়ায়।
  • এছাড়াও খেলনা কিংবা দরজার লক বা আসবাবপত্রে ভাইরাস অবস্থান করতে পারে। এগুলো কেউ স্পর্শ করলে সে আক্রান্ত হতে পারে।

হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ খাবার

হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজে আক্রান্ত শিশুর খাদ্য তালিকায় পানি জাতীয় গরম খাবার রাখা জরুরি। গরম স্যুপ একদম পাতলা করে, সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে দিতে পারেন। এতে করে বাচ্চার খেতেও কষ্ট হবে না এবং তার শরীরের যেই পুষ্টি চাহিদা রয়েছে সেগুলোও পূরণ হবে। এই সময় শিশুকে ডাবের পানি খাওয়ানো ভালো। কারণ শরীরে পানি শূন্যতা দেখা যেতে পারে। 
ডাবের পানি তাকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করবে। এই সময় শিশুকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। যেমন শাক-সবজি দিতে হবে। যেহেতু রান্না করে শাকসবজি দিলে বাচ্চা খেতে পারবেনা। তাই এগুলো দিয়ে আপনি স্যুপ খুব বানিয়ে দিতে পারেন। অতিরিক্ত বেশি গরম খাবার না দিয়ে তার গলায় যেহেতু ব্যথা থাকে তাই ঠান্ডা খাবার ও মাঝে মাঝে দিতে পারেন। 

প্রতিদিনের দিনের খাবারের অন্ততপক্ষে একটা করে ডিম রাখতে পারেন। যদি বাচ্চা খেতে না পারে তাহলে স্যুপের মধ্যে একটা ডিম দিয়ে এক দুই মিনিট ফুটিয়ে সেটা বাচ্চাকে দিতে পারেন। এছাড়াও বাচ্চাকে নরম ফল দিতে পারেন। যেমন পাকা পেঁপে। পাকা পেঁপে এই সময় বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুব ভালোভাবে কাজ করে থাকে।

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এর লক্ষণ

  • হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিসিজ এ গলা ব্যথা, জ্বর এবং খাবারের অরুচি থাকে। কয়েক দিন পর মুখ ও জিহ্বায় ঘায়ের মত ফুসকুড়ি হয়।
  • দাঁতে ব্যথা হতে পারে। খেতে কষ্ট হতে পারে।
  • হাত এবং পায়ে, ত্বকের রং অনুযায়ী গোলাপী লাল কিংবা কালো রংয়ের গোটা দেখা দেয়। পরে পানি ভর্তি হয় ।
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাত পা এবং জিহ্বাতে ফুসকুড়ি হয়। তবে ঊরু এবং নিতম্বেও হতে পারে।
  • শিশু এবং বড়দের একই রকম লক্ষণ দেখা দেয়।
  • পাঁচ বছরের নিচে যেসব শিশু রয়েছে তাদের লক্ষণগুলো বেশি কষ্টদায়ক।
  • অসুখটি বারে বারে হতে পারে ।
  • এটি ছোঁয়াচে এবং আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহের বেশি ছড়ায়।

হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ এর ঔষধ

  • হ্যান্ড ফুড এন্ড মাউথ ডিজিজ রোগের তেমন কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নাই। ওষুধের দরকারও হয় না। সাধারণত সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।
  • স্বাভাবিকভাবে পরিচর্যা করলে খাবার এবং বিশেষ করে পানি জাতীয় খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ দিতে হবে। যাতে করে প্রসাব ঠিকমতো হয়।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার মুখের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • যদি জ্বর থাকে তাহলে প্যারাসিটামল দেওয়া যাবে। তবে এসপিরিন দেওয়া কখনোই উচিত হবে না। এর বাইরে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের কোন ভূমিকা নেই। তাই এগুলো দেওয়ার কোন দরকার নাই।

হ্যান্ড ফুট মাউথ হলে করণীয়

হ্যান্ড ফুড মাউথ অর ডিজিজে আক্রান্ত হলে আর কিছুই করার থাকে না। তবে যাতে আক্রান্ত না হয় সেজন্য কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা ভালো ।
  • শিশুদের বারবার ভালোভাবে হাত ধোয়াতে হবে।
  • হাঁচি কাশির যে শৃঙ্খলা রয়েছে সেগুলো মানতে হবে।
  • ঘরের মেঝে এবং খেলনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • খেয়াল রাখতে হবে শিশুরা যেন মুখের মধ্যে হাত না দেয়।
  • যতটা সম্ভব ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ কেন হয় এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি, সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং আর্টিকেলের মধ্যে যে সকল টিপস গুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো আপনার কাজে আসবে। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। 
যাতে তারা ও বাচ্চাদের হ্যান্ড ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। যদি আপনার কোন মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে কোন একটা নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url