কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আপনারা অনেকেই google এ এসে কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি তা লিখে সার্চ করে থাকেন। আপনাদের জন্য আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
কোন রাউটারের রেঞ্জে বেশি এ বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
ভূমিকা
আমাদের দৈনন্দিন জীবন অনেকটাই ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে গেছে। এবং ভালোভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করার জন্য আমাদের ভালো ওয়াইফাই কানেকশন দরকার হয়। ভালো ওয়াইফাই কানেশনের জন্য অবশ্যই রাউটার ব্যবহার করতে হবে। রাউটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যখন আমরা রাউটার কিনতে যাই অবশ্যই কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি তার জেনে রাউটার কেনা উচিত।
কেননা যদি রাউটারের রেঞ্জ বেশি হয় তাহলে অনেক দূর থেকেই ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ভালো রাউটার চেনার উপায়, টেন্ডা রাউটারের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন, কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি, টেন্ডা রাউটারের দাম, রাউটার সেটআপ এ সকল বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। চলুন শুরু করা যাক।
ভালো রাউটার চেনার উপায়
রাউটার কেনার সময় অবশ্যই কোন রাউটার ভালো, দাম দেখে কিনতে হবে। ভালো রাউটার চেনার কিছু উপায় রয়েছে। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
রাউটারের রেঞ্জঃ সাধারণত তার যুক্ত রাউটার গুলোর রেঞ্জ ৩০০ মিটার হয়ে থাকে। রাউটারের সিগনাল উন্মুক্ত স্থানে ৩০০ ফুট এবং ইনডোরে ১৫০ ফুট পর্যন্ত যেতে পারে।
রাউটারের গতিঃ যেগুলো বাড়িতে ব্যবহার করা হয় সেগুলোর গতি ১৫০ এমবিপিএস থেকে ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত হয়। এর চেয়েও উচ্চগতির রাউটার বাজারে পাওয়া যায়। যেমন গিগাবিট রাউটার এক সেকেন্ডে এক গিগাবাইট পর্যন্ত গতি সরবরাহ করে।
গেমিংঃ গেমিং রাউটার সাধারণত দ্রুতগতির হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে তার যুক্ত রাউটার গুলো ভালো কাজ করে।
এন্টেনাঃ এখন বাজারে যে সকল রাউটার গুলো পাওয়া যায় সেগুলো একাধিক এন্টেনা থাকে এবং খুব কম দামে পাওয়া যায়। মনে রাখতে হবে রাউটারে যত বেশি এন্টেনা থাকবে রাউটার তত বেশি কানেকশন একযোগে লিখিতভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবে। বর্তমানে একটি থেকে শুরু করে ৮ টি পর্যন্ত এন্টেনা রাউটার পাওয়া যায়।
কানেকশনঃ তার যুক্ত রাউটার গুলোতে যতগুলো কানেকশন একসাথে সাপোর্ট করে। যদি তার যুক্ত রাউটার কিনেন তাহলে যতগুলো কানেকশন দরকার ততগুলো পোর্ট যুক্ত রাউটার কিনবেন। একটিতে যদি কাভার না হয় তাহলে আরো একটি কিনতে হবে। একটি রাউটার সাধারণত প্রতিটি ব্যান্ডের জন্য ৩২টি ডিভাইস সমর্থন করে। অতএব ডুয়েল ব্রান্ডের জন্য এটি 64 টি ডিভাইস সমর্থন করবে।
স্ট্যান্ডার্ডঃ রাউটারটি কোন ধরনের স্ট্যান্ডার্ড সমর্থন করে তা ভালোভাবে চেক করে নিতে হবে। কারণ বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড সমর্থন করলে একাধিক রাউটার একসাথে ব্যবহার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।
ব্যান্ডউইথ শেয়ারিংঃ একটি রাউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথ সমানভাবে ভাগ করা যায় কিনা তা অবশ্যই দেখে নিতে হবে। এতে করে সবাই সুন্দরভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। কিছু কিছু রাউটারের ব্যান্ডউইথ প্রতিটি কানেকশনের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে কাস্টমাইজ করে নেওয়া যায়।
উপরে যতগুলো বিষয় আলোচনা করেছি সবগুলোই একটি ভাল রাউটারের বৈশিষ্ট্য। আপনি যদি রাউটার কিনতে চান তাহলে এই বিষয়গুলো প্রতি লক্ষ্য রাখুন। বিশেষ করে কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি এ বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নিন। এতে করে আপনি কতদূর থেকে ইন্টারনেট কানেকশন পাবেন তা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
টেন্ডা রাউটারের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন
টেন্ডা রাউটারের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন খুবই সহজ একটি প্রসেস। টেন্ডা রাউটারের পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের ধাপগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
প্রথমেই আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল এর ওয়েব ব্রাউজারটি খুলে নিন। তারপর রাউটারের আইপি ঠিকানাটি টাইপ করুন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। wireless বা WLAN মেনুতে প্রবেশ করুন। Security বা WPA/WPA2 প্রবেশ করতে হবে। তারপরে Wireless Password বা PSK ফিল্ডে নতুন পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে হবে। এরপরে Save বা Apply বাটনে ক্লিক করলেই টেন্ডা রাউটারের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন হয়ে যাবে।
পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন শক্তিশালী password ব্যবহার করতে হবে। যাতে অন্ততপক্ষে চারটি অক্ষর থাকবে এবং তাতে বড় হাতের এবং ছোট হাতের অক্ষর সংখ্যা এবং সেম্বল ব্যবহার করতে হবে। পাসওয়ার্ড নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে এবং নিজের পাসওয়ার্ড কখনোই কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না।
কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি
আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি তা নিয়ে আলোচনা করা। রেঞ্জ মোটামুটি সব রাউটারের একই হয়। গড়ে ৩৮ হাতের মতো। তবে আপনি অনেক দূর থেকে তারবিহীন ভাবে ওয়াইফাই সংযোগ নিতে চাইলে আউটডোর সিপিই নিতে পারেন। তবে এটি একটু ব্যয়বহুল হয়ে যায়।
যদি আপনি অনেক দূর পর্যন্ত পেতে চান তাহলে আপনাকে রাউটারটি খোলা জায়গায় রাখতে হবে। এতে করে ৩০০ ফুট পর্যন্ত রেঞ্জ পেতে পারেন এবং ইনডোরে ১৫০ ফুট পর্যন্ত রেঞ্জ পাওয়া যায়।
টেনডা রাউটার দাম
বাংলাদেশের টেন্ডা রাউটারের দাম মাত্র ১১৫০ টাকা থেকে শুরু হয় এবং একটি খুবই শক্তিশালী একটি ওয়াইফাই রাউটার। রাউটারটি ডব্লিউপিএ এলগরিদম, ওয়্যারলেস এক্সেস, কন্ট্রোল ম্যাক, এড্রেস ফিল্টারিং সহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই রাউটারটির শক্তিশালী তিনটি এন্টেনা এর সাহায্যে ১৪০০ বর্গফুট এরিয়া কি পর্যন্ত ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ছড়াতে পারে।
আরো পড়ুনঃ QR কোড কাকে বলে - বাংলা কিউ আর কোড কি
তাই বাংলাদেশের টেন্ডা রাউটারের দাম অনেকটাই কম এবং শক্তিশালী বেশি। টেন্ডা ৪ অ্যান্ডটেনা যুক্ত রাউটারের দাম মাত্র ১৪০০ টাকা এবং এইচআর এন্টেনা রাউটার ডুয়েল ব্যান্ড, ওয়াইফাই সিগনাল, হাই স্পিড নেটওয়ার্ক, ব্যান্ডউইথ কন্ট্রোল ম্যাক এড্রেস ফিল্টার, আইপি এবং ম্যাক এড্রেস বাইন্ডিং, আইপি টিভি, ব্ল্যাক হোয়াইট লোন, সিস্টেম আপডেট এবং বিভিন্ন আধুনিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
অতএব এখান থেকে বোঝাই যায় যে টেন্ডা রাউটারের দাম যেমন কম তেমনি নেটওয়ার্কও অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই আপনারা রাউটার ব্যবহার করতে চাইলে টেন্ডা রাউটার ব্যবহার করতে পারেন।
টেন্ডা রাউটার সেটআপ
কোন রাউটারের রেঞ্জ বেশি তা জেনে যদি আপনারা টেন্ডা রাউটার কিনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে রাউটারটি সেটআপ করতে হবে। টেন্ডা রাউটার সেটআপ করা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করলেই হয়ে যাবে। চলুন টেন্ডা রাউটার সেটআপ এর নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
- টেন্ডার রাউটার অন করার পরেই টেনডা নামে একটি কানেকশন পাওয়া যাবে। সেখানে ক্লিক করে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ওয়াইফাই কানেক্ট করতে হবে।
- কানেক্ট করা ডিভাইস থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করতে হবে।
- ব্রাউজারের সার্চবারে গিয়ে টেন্ডা রাউটার আইপি এড্রেস লিখে সার্চ করতে হবে।
- আইপি এড্রেস সার্চ করলে টেন্ডা কুইক সেটা পেজ ওপেন হয়ে যাবে।
- পেজটি ওপেন হওয়ার পরে সেখান থেকে কানেকশন টাইপ থেকে PPPOE সিলেক্ট করে পছন্দ মত নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে তারপর সেভ করে নিতে হবে।
- কুইক সেটাপ পর্ব শেষ হলে সেখানে আরেকটি পেজ ওপেন হবে। সেখান থেকে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তারপর অটোমেটিক পেজ থেকে লগ আউট হয়ে যাবে।
- লগইন করা ডিভাইস থেকে ওয়াইফাই কানেকশন এ গিয়ে পছন্দ মত উপর ক্লিক করে পাসওয়ার্ড দিলে ওয়াই ফাই কানেকশন পূর্ণ নিরাপত্তা সাথে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করার জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে যাবে।
উপরোক্ত ধাপ গুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই টেন্ডা রাউটার সেটআপ করে নিতে পারে।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কো রাউটারের রেঞ্জ বেশি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আমাদের লেখা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আমাদের লেখা সম্পর্কে কোন মতামত জানানোর থাকলে কমেন্ট করে জানান।
প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন বিষয়ে আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url