সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে - সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আগে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেতে শ্রমিকদের অনেক ভোগান্তি হতো। কিন্তু এখন ভিসা প্রসেসিং সময় অনেকটাই কমে এসেছে।
সৌদি ভিসা
আপনারা যারা সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে এ বিষয়টি জানতে চান তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনারা আর্টিকেলটি পড়া শেষে সৌদি ভিসা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা সৌদি আরবের যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন এবং সৌদি আরব ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আপনারা অনেকেই জানেন না সৌদির ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে। সৌদি আরব যাওয়ার কথা যদি কেউ শোনে তাহলে বাড়ির জমি, ব্যাংক থেকে লোন, হালের গরু, এমনকি বাড়ির হাঁস মুরগি বিক্রি করে হলেও চলে যান। 

আপনারা কি জানেন বিদেশে আসার পর আপনাদের কত রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে পর্যটনখাত, খেলাধুলা, শিল্প, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে পর্যটকদের আকর্ষণ করছে সৌদি আরব। পাশাপাশি নিজেদেরকে রক্ষণশীলতার প্রমাণ করে আধুনিক বিশ্বে নিজেদের নজির রাখছেন।

সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার

সৌদি আরবে ভ্রমণ বা কিংবা বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে। যার প্রতিটি নিজস্ব আলাদা আলাদা শর্ত এবং ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সৌদি আরবের প্রধান প্রধান ভিসার প্রকার গুলো নিজে তুলে ধরা হলো।

১। কাজের ভিসা (Work Visa)

সৌদি আরবের যারা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাদের জন্য কাজের ভিসাটি প্রযোজ্য হবে। কাজের ভিসা পেতে আপনাকে নিয়োগ এজেন্সির কাছ থেকে একটি স্পন্সরশিপ এর প্রয়োজন হবে। এ ভিসার মাধ্যমে আপনি দীর্ঘমেয়াদি কাজের চুক্তিতে সৌদি আরবে থাকতে পারবেন।

২। হজ ভিসা (Hajj Visa)

মুসলমানরা যারা হজ করতে যান তাদের জন্য হজ ভিসা প্রযোজ্য। হজ্ব ভিসা প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়ে থাকে। শুধুমাত্র সৌদি আরবের সরকার অনুমোদিত এজেন্সি দ্বারাই দেওয়া হয়।

৩। ওমরা ভিসা (Umrah Visa)

যারা ওমরা পালন করতে চান তাদেরকে ওমরা ভিসা প্রদান করা হয়। কিন্তু হজের সময় এই ওমরা ভিসা দেওয়া বন্ধ থাকে।

৪। টুরিস্ট ভিসা ( Tourist Visa)

যারা সৌদি আরব ভ্রমণ করতে চান সে সকল পর্যটকদের জন্য টুরিস্ট ভিসা প্রদান করা হয়। সৌদি সরকার ২০১৯ সাল থেকে টুরিস্ট ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। এখন এটা আগে থেকে অনেকটাই সহজ।

৫। রেসিডেন্স ভিসা( Residence Visa)

যারা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বসবাস করতে চান তাদের জন্য রেসিডেন্স ভিসায। সাধারণত কাজের ভিসার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাস করার অনুমতি মিলে।

৬। বিজনেস ভিসা (Business Visa)

বিভিন্ন রকম ব্যবসায়ী কাজের জন্য যেমন মিটিং, আলোচনা, সেমিনার কিংবা ব্যবসা পরিদর্শনের জন্য বিজনেস ভিসা প্রদান করা হয়। এতে কোন প্রকার কাজের অনুমতি দেওয়া হয় না।

৭। শিক্ষা ভিসা (Student Visa)

সৌদি আরবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা পড়াশোনা করতে চায় তাদের জন্য শিক্ষা ভিসা প্রযোজ্য। এই ভিসাটি শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি থাকার সুযোগ করে দেয়।

৮। মেডিকেল ভিসা (Medical Visa)

চিকিৎসার জন্য যারা সৌদি আরবে যেতে চান তাদের জন্য মেডিকেল ভিসা। এটি স্বল্পমেয়াদি একটি ভিসা।

৯। পরিবার ভিসা (Familly Visa)

যারা সৌদি আরবের কর্মরত অবস্থায় আছেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সৌদি আরবে নিয়ে যেতে চান তাদের জন্য ফ্যামিলি ভিসা প্রদান করা হয়।

১০। ট্রানজিট ভিসা (Transit Visa)

যারা সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে অন্য কোন গন্তব্যে যেতে চান তাদেরকে ট্রানজিট ভিসা প্রদান করা হয় এবং তারা সৌদি আরবে অল্প কিছু সময়ের জন্য অবস্থান করতে পারে। ৪৮ থেকে ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত।

সৌদি আরব যেতে বয়স কত লাগে

অনেকেই সৌদি আরবে বিভিন্ন কারণে যেতে চান। একেক জনের জন্য একেক রকম ভিসা। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানেন না সৌদি আরব যেতে বয়স কত লাগে এবং সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে। এখন আমরা সৌদি আরব যেতে বয়স কত লাগে তা নিয়ে জানব। প্রকৃতপক্ষে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়সের প্রয়োজন হয় না। যেকোনো বয়সের মানুষ সৌদি আরব যেতে পারে। যদি তাদের পাসপোর্ট এবং ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক থাকে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনা করা হয়। যেমন-
  • আঠারো বছর বয়সের কম বয়সীদের সাধারণত একজন অভিভাবকের সাথে ভ্রমণ করতে হয়। তাদের একার জন্য কোন ভিসা প্রদান করা হয় না।
  • হজ এবং ওমরা করার জন্য সৌদি সরকারের নির্দিষ্ট কিছু বয়সের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে

ওকে ভাই-বোনেরা আপনারা খুব সহজেই কম সময়ে এবং সল্প খরচে ভিসা প্রসেসিং করতে পারেন। সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে আপনাদের এবার ধারণা দিব। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে কিছু ডকুমেন্ট দরকার হবে। সেগুলো হলো-
  • আপনার বৈধ পাসপোর্ট যাতে বৈধতা ছয় মাসের বেশি সময় থাকতে হবে এবং ইমিগ্রেশন অফিসার স্টাম্প করার জন্য অবশ্যই দুটি পেজটা ফাঁকা বা তার বেশি থাকতে হবে।
  • পাসপোর্ট এর জীবনী পৃষ্ঠার একটি স্ক্যান কপি লাগবে।
  • সৌদি ই ভিসা স্পেসিফিকেশন পর্যালোচনা করতে হবে।
  • তথ্য বিনিময় এবং অনলাইন হিসেবে একটি ইমেইল একাউন্ট থাকতে হবে।
  • অর্থ প্রদান করার জন্য ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড বা পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করতে হবে।

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত

আগে সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোতে শ্রমিক হিসেবে চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে সৌদি আরবের কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে চাকরি পাওয়া তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ ।কেননা শ্রমিক হিসেবে কোম্পানিতে আবেদন করলে সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। 
বর্তমানে সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোতে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। সর্বোচ্চ বেতন ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। তবে কাজের দক্ষতা বেশি হলে বেতন বেশি হয়ে যায়। সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোতে শ্রমিকদের বেতন ৮০ হাজার থেকে 1 লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কত বছর বয়স হলে সৌদি আরব যাওয়া যায় না

সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা রয়েছে। তা হল ১৮ বছর বয়সে এর কম হলে ভিসা প্রদান করা হয় না এবং ৬৫ বছরের বেশি হলেও আপনি সৌদি আরব যেতে পারবেন না।

সৌদি আরবে সর্বনিম্ন বেতন কত

সৌদি আরবের অধিকাংশ বেসরকারি কোম্পানি রয়েছে যেগুলোতে কোনরকম বেতন কাঠামোই অনুসরণ করা হয় না। সরকারি কোম্পানিগুলোতে নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো রয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরবের কোম্পানি সর্বনিম্ন বেতন ৩৯ হাজার টাকা থেকে 50 হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। তবে সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোতে ওভারটাইম কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তাই একজন শ্রমিক ওভারটাইম করে প্রতি মাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারে।

সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে

সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে এবং সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে। সে সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। সৌদি আরব যেতে সাধারণত তিন লক্ষ থেকে চার লক্ষ টাকা লাগে। ভিসা ফি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। মেডিকেল খরচ, বিএমইটি, প্লেনের টিকিট এবং আনুষঙ্গিক খরচ সহ সৌদি আরবে যেতে যেতে মোট ৩ - ৪ লক্ষ টাকা লাগে। 

এছাড়া আপনি যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে আপনার ভিসার জন্য এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাগবে। এছাড়া প্লেনের টিকিট, মেডিকেল খরচ সবকিছু মিলিয়ে মোট চার লক্ষ থেকে 5 লক্ষ টাকা লেগে যাবে।

সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় প্রবাসী এবং বিদেশে যেতে ইচ্ছুক ভাই-বোনেরা আজকে আমি সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে তা নিয়ে আপনাদের জানাবো। আপনি যদি সৌদি আরবের ভিসা প্রসেসিং করতে চান কিন্তু কিভাবে করতে হয় বা কি কি ডকুমেন্টস লাগে তা না জানেন আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। 
আগে সৌদি ভিসা প্রসেসিং হতে ৯০ দিন পর্যন্ত লেগে যেত। কিন্তু এখন ৪ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই সৌদি যেকোনো রকম ভিসা প্রসেসিং হয়ে যায়। এখন সৌদি ভিসা প্রসেসিং খুবই সহজ হয়ে গেছে।

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা

বর্তমানে এই সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। যার ফলে কোম্পানি ভিসা গুলোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সৌদি আরব যাওয়ার খরচ অনেকটাই বেড়ে গেছে। সরকারী এবং বেসরকারি যেভাবে সৌদি আরব যেতে চান না কেন আপনাকে নির্দিষ্ট অপরিমান খরচ করতে হবে। সরকারিভাবে সৌদি আরব কোম্পানির ভিসা পেতে সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা থেকে 6 লাখ টাকা পর্যন্ত লাগে। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে অর্থাৎ এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব কোম্পানির ভিসা যেতে সর্বনিম্ন ৭ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে, সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা, কোম্পানির সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যারা সৌদির প্রবাসে যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকে আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। যাতে করে আপনার পরিচিত লোকজন উপকৃত হতে পারে। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে পোস্ট করার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url