কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। উচ্চ শিক্ষার জন্য যারা কানাডা যেতে চান তাদের জন্য আজকে আমরা কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। নিঃসন্দেহে উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডা বিশ্বের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা
আজকের আর্টিকেলে আমরা কানাডয় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পরুন।

ভূমিকা

আপনারা যারা উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। নিঃসন্দেহে কানাডা উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য সবার প্রথম পছন্দ। এখানে কিছু সুবিধা এবং কিছু অসুবিধা রয়েছে। 

আজকে আমরা কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা হতে সর্বোচ্চ কত সময় লাগে, কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং টাইম এই সবগুলো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে। তাহলে চলুন কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে নেওয়া যাক।

কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা হতে সর্বোচ্চ কত সময় লাগে

কানাডা ভিসা প্রসেসিং এর জন্য যে সকল ডকুমেন্টস দরকার হয় সেগুলো যদি আপনার ঠিকঠাক থাকে তাহলে কাগজপত্র জমা দেওয়ার ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে আপনি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। আর যদি কাগজপত্রের মধ্যে কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে বেশি সময় লাগতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে পুনরায় কাগজপত্র জমা দেওয়ার একটি ব্যাপার রয়েছে। তাছাড়া কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং হতে একটু বেশি সময় লাগে।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী কানাডা যায়। তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথম পছন্দের দেশই হচ্ছে কানাডা। এর বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন কানাডায় উন্নতমানের জীবনযাত্রা, পড়াশুনার মান উন্নত এবং পড়াশোনা শেষে চাকরির সুযোগ রয়েছে। অন্যান্য দেশের মতো কানাডায় রাজনৈতিক কোন অস্থিরতা নেই। 
স্টুডেন্টরা যদি চায় তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করতে পারে। বর্তমানে কানাডাকে উচ্চশিক্ষার স্বর্গরাজ্য বলা হয়ে থাকে। কিন্তু স্বপ্নের দেশ কানাডা যেতে আপনার যোগ্যতা থাকতে হবে এবং কিছু নিয়ম মানতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি যোগ্যতা থাকলে আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে পারবেন।
  • ছয় মাস মেয়াদি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে।
  • আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা জন্ম সনদ।
  • যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন তার অফার লেটার।
  • IELTS স্কোর সর্বনিম্ন ৬.৫।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
  • আপনি সর্বশেষ যে প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন তার প্রশংসাপত্র।
  • আপনার স্পন্সরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
আপনার কাছে যদি কাগজপত্রগুলো থেকে থাকে তাহলে আপনি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর বাইরেও যদি কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হলে তাহলে এজেন্সি থেকে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে।

কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা

কানাডায় যারা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যেতে চান তাদের জেনে রাখা ভালো যে স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা রয়েছে। এগুলো আমাদের কানাডা যাওয়ার আগে জেনে নেওয়া দরকার। কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার অসুবিধার চেয়ে সুবিধা অনেক বে।শি কানাডা সবার পছন্দের উচ্চ শিক্ষার একটি দেশ এবং সেখানে বহু শিক্ষার্থী প্রতিবছর স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে। চলুন তাহলে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে নেওয়া যাক।

সুবিধা

  • কানাডায় শিক্ষা ব্যবস্থা যেহেতু আন্তর্জাতিক মানের সেহেতু আপনি সেখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করে পৃথিবীর যেকোন দেশে গিয়ে জব করতে পারবেন।
  • শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আর্থিক সমস্যা। অনেক শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে পড়াশুনায় ছেড়ে দেয়। কানাডায় স্কলার্শিপ বা বৃত্তির সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগটি আপনি চাইলে লুফে নিতে পারেন
  • বাংলাদেশের বিভিন্ন কারণে সেশন জট হয়ে থাকে। কিন্তু কানাডায় সেরকম কোন সমস্যা হয় না।
  • নানা রকম আন্তর্জাতিক ভাষাভাষীর দেশ কানাডা। নানা রকম সাংস্কৃতির মানুষের দেখা মিলবে। সকলের সাথে সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা করে তোলার সুযোগ রয়েছে।
  • কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে পার্ট টাইম জব করতে পারেন। পড়াশোনা শেষ হলে স্থায়ীভাবে কাজের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।
  • পড়াশোনা শেষ হয়ে গেলে আপনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন।
  • কানাডায় খুবই নিরাপদ পরিবেশ রয়েছে। যা যে কাউকে মুগ্ধ করতে পারে।

অসুবিধা

জীবন যাত্রার মান ব্যয়বহুল এবং তুলনামূলক অনেক বেশি। যেমন বাসস্থান, খাবার খরচ এবং আনুষঙ্গিক খরচ অনেকটাই বেশি। এই ব্যয় বহন করার শিক্ষার্থীদের জন্য একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে যারা নিজের ফান্ড নিয়ে কানাডায় পড়াশোনা করতে যায়। আর যারা স্কলারশিপ নিয়ে যান তাদের কথা আলাদা। স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় গেলে আপনি পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন। যেখানে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে ২০ কর্ম ঘন্টা কাজ করতে হতে পারে। 

স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা গেলে ভিন্ন কোন সেক্টরে গিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। সঠিকভাবে কাগজপত্র জমা দেয়ার পরেও স্টুডেন্ট ভিসা পেতে আর ৬০ থেকে ৯০ দিন সময় লাগে। আমাদের দেশের আবহাওয়া ঠান্ডা গরম মিলিয়ে। কিন্তু কানাডায় গরম আবহাওয়া মানুষের জন্য মেনে নেওয়া অনেকটাই কঠিন।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ

স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে চাইলে আপনাকে পর্যাপ্ত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি স্কলারশিপ নিয়ে কানাডা চান তাহলেখরচ অনেকটাই কম হবে। স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে হলে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মত খরচ হতে পারে। আর স্কলারশিপ নিয়ে কানাডা ৫ - ৬ লক্ষ টাকা খরচ হবে।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি

আপনি যদি দেশের বাইরে যে কোন বাইরের দেশে যেতে চান তাহলে সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় দালালের ফাঁদ। যারা বাইরে থেকে দেশে যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই এ বিষয়ে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ দালালের ফাঁদে পড়লে আপনার খরচ অনেক বেড়ে যাবে এবং আপনি আপনার পছন্দমত কিছু করতে পারবে না। এজন্য কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে কানাডিয়ান হাইকমিশন দূতাবাসে যোগাযোগ করুন। এটাই আপনার জন্য সবথেকে বেশি ভালো হবে।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা ব্যাংক স্টেটমেন্ট

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এর জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট খুবই জরুরী। কেননা কানাডায় যেহেতু জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেশি তাই স্টুডেন্ট চাইলেই কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পাবে না। এক্ষেত্রে তাকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। সে যদি নিজের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে না পারে তাহলে তাকে যে স্পন্সর করবে তার গত এক বছরের লেনদেনের তথ্য, ব্যাংক ব্যালেন্স কত আছে তা দেখাতে হবে। 

কানাডায় যাওয়ার আবেদন করার ৩০ দিনের মধ্যেই স্বীকৃত ব্যাংক স্টেটমেন্ট কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কানাডায় গিয়ে আপনার পড়াশুনা, বাসস্থান, খাবার খরচ, টিউশন ফি অন্যান্য খরচ চালাতে পারবেন কিনা এই সবকিছু জানার জন্য জরুরী।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা স্টাডি গ্যাপ

অনেকেই জানেন না কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা স্টাডি গ্যাপ কি। স্ট্যাডি ক্যাপ হচ্ছে আপনার পড়ালেখার বিরতি। মনে করুন আপনি HSC পাশ করার পর ৪ বছর পড়া গ্যাপ দিয়েছেন। এখন আপনি কানাডা পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন উচ্চতরো ডিগ্রী অর্জনের জন্য। এখন কানাডার ভিসা অফিসার আপনাকে অবশ্যই এটা জিজ্ঞেস করবে যে আপনি চার বছর কেন পড়াশোনা গ্যাপ দিয়েছেন। 
সেজন্য আপনাকে একটি যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিতে হবে। যদি আপনার ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয় তাহলে আপনি সহজে কানাডা স্টুডেন্ট হিসেবে পেয়ে যাবেন। অন্যথায় এই গ্যাপের কারণে আপনি কানাডা যেতে পারবেন না।

কানাডা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং টাইম

আপনি যদি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে থাকেন তাহলে সব ডকুমেন্ট সঠিকভাবে জমা দেওয়ার পর আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। এজেন্সি থেকে আপনার সব কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা দেখা হবে।ডকুমেন্টে যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ভিসা প্রসেসিং হতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। 

ডকুমেন্ট সব ঠিকঠাক থাকার পর আপনার স্টুডেন্ট ভিসা পেতে দুই থেকে তিন মাসের মত সময় লাগবে। কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কানাডিয়ান দূতাবাস এ যোগাযোগ করুন। কানাডা এম্বাসির ঠিকানা হলো- হাউজ# ১৬ এ, রোড# 48, গুলসান ২ ঢাকাই অবস্থিত।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি পোস্টটি পড়ে আপনারা কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়েছেন। এরকম ভিসা সম্পর্কিত নানা রকম তথ্য আমারা প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে পাবলিশ করে থাকে। 

এরকম তথ্যবহুল আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ ধৈর্য ধরে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আপনার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আরো অন্য কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url