কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, কফি দিয়ে আমরা অনেকেই দিনের শুরু করি। কিন্তু আজকের আর্টিকেলে আমরা কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আপনি জানলে অবাক হবেন কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়গুলো। আর্টিকেলের মধ্যে আরও থাকছে কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়। তাই আপনি যদি কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পূরণ।
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
আপনি শুনে হয়তোবা অবাক হয়েছেন যে কফি দিয়ে রূপচর্চা করা যায়। কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় খুবই সহজ। রূপচর্চায় কফির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কফি এমন একটি উপাদান যা খেয়ে আপনি শরীর সতেজ রাখতে পারেন এবং রূপচর্চা ও করতে পারেন। আপনাদের জন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে কফি দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করা যায় বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।

ভূমিকা - কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়

অনেকে রয়েছেন যারা সকালবেলা কফি দিয়ে সকালের নাস্তাটি সেরে ফেলেন। আবার কফি পাউডার দিয়ে রূপচর্চা করলে খুবই কার্যকারী উপকার পাওয়া যায়। এক কাপ কফি যেমন শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি নিয়ে আসে, ঠিক তেমনি ত্বকের বহু সমস্যার সমাধান করে এই কফি। আজকের আর্টিকেলটি জুড়ে কফি দিয়ে রূপচর্চা করার বিভিন্ন বিষয় থাকছে। 

যেমন- কফি দিয়ে হাত-পা ফর্সা করার উপায়, কফি দিয়ে ফেসিয়াল, কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি এবং কফি ফেসপ্যাক এর উপকারিতা। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়া শেষ হলে আপনি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেজন্য আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়

কফি দিয়ে হাত-পা ফর্সা করার উপায় কি? আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয় এ বিষয়গুলো আর্টিকেলের নিচের দিকে জানব। এই পর্যায়ে আমরা কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা সবাই জানি যে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য কফি অনেক উপকারী। 

পাশাপাশি ত্বক মসৃণ এবং স্নিগ্ধ করার জন্য কফি স্ক্রাবের কোন তুলনা নেই। আমরা যারা কফি পছন্দ করি তারা কফি দিয়ে বিভিন্ন রকম স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করতে পারি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায় কি।

কফি ও চিনির স্ক্রাবারঃ এক কাপ কফি পাউডার, সাথে দুই টেবিল চামচ চিনি নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে। এর সাথে চাইলে আপনারা নারিকেল তেল বা এসেন্সিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ২০-২৫ মিনিট ভালোভাবে হাতে এবং পায়ে মেসেজ করতে হবে। তারপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিয়মিত এক থেকে দুই মাস ব্যবহার করলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার স্কিন এ ঠিক কতটা পরিবর্তন এসেছে।

কফি বেসন এবং গোলাপজলের মিশ্রণঃ এই মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য আপনাকে এক চামচ পরিমাণ কফি পাউডার, সমপরিমাণ বেসন এবং সমপরিমাণ গোলাপজল নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর হাত-পা, মুখ, ঘাড় এবং গলায় ৮-১০ মিনিট লাগিয়ে রেখে দিতে হবে। শুকিয়ে গেলে এবং টানটান অনুভূত হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি যদি আপনি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করেন তাহলে খুব দ্রুত আপনার হাত-পা ফর্সা হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

চিনি অ্যালোভেরা জেল এবং কফির পেস্টঃ এক টেবিল চামচ পরিমাণ কফি, এক চামচ এলোভেরা জেল এবং সমপরিমাণ চিনি নিয়ে এই পেস্টটি তৈরি করে নিতে হবে। তৈরি করা হয়ে গেলে কফির এই মিশ্রণটি আপনার হাতে এবং পায়ে লাগিয়ে দুই থেকে আড়াই মিনিট মেসেজ করতে হবে। এরপর নরমাল পানি ব্যবহার করে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এই ফেসপ্যাক টি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারলে খুব ভালো ভালো ফল পাবেন। হাত পায়ের ফর্সা ভাব দ্রুত ফিরে আসবে।

কফি ও দুধের শরীর ফেস ক্লিনজারঃ প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা করতে এবং হাত ও পায়ের কালো দাগ দূর করতে এই উপায়টি আপনি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। এতে আপনার ত্বক তরতাজা এবং স্বতেজ রাখতে সাহায্য করবে। হাত ও পায়ের কালচে দাগ দূর করবে। এই ক্লিনজার টি তৈরি করার জন্য আপনাকে এক টেবিল চামচ কফি এবং এক চামচ পরিমাণ দুধের সর একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। 

এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার আগে আপনাকে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর হাত-পা, মুখ, ঘাড়ে, গলায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর্যন্ত মাসেজ করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আপনি প্রতি সপ্তাহে তিন চার দিন এই ক্লিনজার টি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা এবং উজ্জ্বল হবে।

আশা করছি, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায় সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণাটি পেয়েছেন। আপনি যদি এই উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারেন তাহলে অল্প দিনের মধ্যেই খুব ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশা রাখছি।

কফি দিয়ে ফেসিয়াল

আমরা অনেকেই ফেসিয়াল করার জন্য পার্লারে যাওয়ার সময় পাইনা। আপনার যদি পার্লারে যাওয়ার সময় না থাকে তাহলে ঘরে বসেই আপনি এর সমাধান করতে পারেন। আপনি কি জানেন কফি দিয়ে ফেসিয়াল করা যায়। এতে করে খরচও যেমন কমে তেমনি ফলাফল পাওয়া যায় তাড়াতাড়ি। চলুন জেনে নেওয়া যাক ধাপে ধাপে কিভাবে কফি দিয়ে ফেসিয়াল করা যায়।
  • কফি দিয়ে ফেসিয়াল করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি পাত্রে দুই চা চামচ কাঁচা দুধ নিতে হবে। এরপর এক চামচ কফি পাউডার মেশাতে হবে। এবার এই মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগিয়ে ফেলুন। আঙ্গুল দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করুন। তারপর কফি এবং কাঁচা দুধের মিশ্রণটি পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • এরপরে করতে হবে স্ক্রাব। ত্বক স্ক্রাব করার জন্য একটি পাত্রের মধ্যে এক চামচ কফি পাউডার নিন। এর সাথে কিছুটা চিনি মেশান। সাথে অল্প একটু নারিকেল তেল। এবার এই স্ক্রাব মুখে দিয়ে মুখ ম্যাসেজ করুন। এই স্ক্রাব দিয়ে অন্ততপক্ষে তিন থেকে চার মিনিট ম্যাসাজ করতে হবে। ম্যাসাজ করা শেষ হলে 15 মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। তারপর সাধারণ পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এতে ত্বকে জমে থাকা ময়লা গুলো দূর হবে।
  • এর পরের ধাপ হচ্ছে এই স্টিম। ত্বক স্টিম করার জন্য একটি বড় পাত্রে পানি নিতে হবে। পানি টা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। তয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে রেখে কমপক্ষে ১০ মিনিটের জন্য এতে মুখ দিয়ে নিতে হবে। এতে করে আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইট হেডস এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • এরপরে আপনি কফি দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য একটি পাত্র এক চামচ কফি পাউডার এবং এতে কিছু পরিমাণ দই মিশিয়ে মুখে এবং ঘাড়ে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে। কিছুক্ষণ রেখে দেওয়ার পর এগুলো ত্বক থেকে খুলে ফেলে দিতে হয়।
  • সবশেষে দরকার ম্যাসাজ। এর জন্য ২ চামচ এলোভেরার মধ্যে এক চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এই প্যাকটি ত্বকে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এলোভেরা এবং কফির ব্যাগটি আপনার ত্বকে ২০ মিনিট মতো রাখতে হবে। তারপর একটি ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
একটার পর একটা এই স্টেপ গুলো ফলো করে আপনি খুব সহজেই কফি দিয়ে ফেসিয়াল করে ফেলতে পারেন খুব সহজে।

কফি মুখে দিলে কি হয়

কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো জানার আগে আপনাকে মুখে কফি দিলে কি হয় বিষয়টি জানতে হবে। কফি আপনার শক্তি বৃদ্ধি করে। কফিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, তাই আপনি যদি কফি পান করেন তাহলে প্রাকৃতিক ত্বকের স্বাস্থ্য উপকারিতা কিছু গুণ আপনি পেয়ে যাবেন। তবুও আপনি যদি ত্বকে এটি সরাসরি প্রয়োগ করেন তাহলে এর উপকার গুলি আরো কার্যকর হয়ে যাবে। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি ব্যবহারের সুবিধা কি, এগুলো জানবো।

প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েট হিসেবে কাজ করেঃ আপনি আপনার কফি খাওয়ার পরে কফি পাউডার গুলো ফেলে না দিয়ে আপনার ত্বকে এক্সপোলিয়েট করার জন্য সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বকে যদি কফি দানা ঘষেন তাহলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হবে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়তে সহায়তা করবে। 

ফাটা ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করতে কফি পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। সামান্য পরিমাণ নারিকেলের সাথে কফি পাউডার মিশিয়ে আপনার ঠোঁটে একসাথে ঘষতে থাকুন। আপনার শরীরের যেকোনো খানে এক্সফোলিয়েট করার জন্য কফি পাউডার ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার ত্বক মসলিন এবং কোমল হয়ে যাবে।

ডার্ক সার্কেল দূর করেঃ আমরা কেউ আমাদের চোখের নিচে কালো দাগ পছন্দ করি না। এর সহজ সমাধান হচ্ছে কফি। চোখের নিজের কালো দাগ দূর করতে সহায়তা করে। কফি যে শুধু শক্তির দিক দিয়ে আপনাকে সহায়তা করে তা কিন্তু নয়। এটি রক্তের সঞ্চালন বাড়াতে এবং আপনার চোখের চারপাশের ত্বকে আঁটসাঁট করতে সহায়তা করে। আর এভাবেই আস্তে আস্তে আপনার সার্কেল কমে যায়।

ফোলা ভাব দূর করেঃ আমরা একটু আগে জানলাম কফি আমাদের চোখে চারপাশের ত্বকের উন্নতি করার জন্য কাজ করে। ডার্ক সার্কেল কমানোর পাশাপাশি কফি ত্বকের ফোলা ভাব দূর করতেও সহায়তা করে। ক্যাফিন রক্তনালী সংকুচিত করে আপনার চোখের নিচের ব্যাগগুলো দূর করে। চোখের নিচের ব্যাগগুলো একটি লিম্ফাইটিক চ্যানেল দ্বারা তৈরি করা হয়। যা সহজে নিষ্কাশন করা যায় না। কিন্তু কফি এর মত গুণ সেই পানিকে অপসারণ করতে সহায়তা করে।

বয়সের ছাপ কমায়ঃ যে কোন বয়সে মানুষ নিজেকে সুন্দর রাখতে পারে। কিন্তু যদি বার্ধক্যের কিছু লক্ষণ যেমন বলি রেখা, মেছতা, ত্বকের লাল ভাব এগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। তাহলে সেগুলো কমানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি কফি পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। কারণ কফিতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বার্ধক্য বিরোধী সুবিধা প্রদান করে থাকে।

সেলুলাইট এর পরিমাণ কমায়ঃ আপনি এক্সফোলিয়েটিং কফি স্ক্রাব দিয়ে স্যালুলাইট মসলিন করতে পারেন। রক্ত প্রবাহ উন্নত করার জন্য রক্তনালীকে প্রসারিত করে সেলুলাইড কমাতে সহায়তা করে এবং ত্বক মসৃণ করে তোলে।

ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ কফিতে রয়েছে ভিটামিন বি ৩, যা কফির দানা ভাজা হওয়ার পর থেকে পাওয়া যায়। স্কিন ক্যান্সার ফাউন্ডেশন এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নিয়াসিন ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। ২০১১ সালে একটি গবেষণা দেখা গেছে যে মহিলাদের জন্য দিনে তিন কাপের বেশি পান করলে মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ২০% কমে যায়।

রোদে পোড়া ভাব দূর করেঃ রোদে পোড়া ভাব দূর করতে কফি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে এক কাপ কফি তৈরি করে ঠান্ডা পানি দিয়ে এটি পাতলা করে নিতে হবে। পানি ভিজানোর জন্য একটি কাপড় বা কাগজের তয়ালে ব্যবহার করতে হবে। তারপরে তোয়ালেটি জায়গাটিতে রেখে দিতে হবে। রোদে পোড়া ভাব না যাওয়া পর্যন্ত এটি যতবার খুশি ততবার ব্যবহার করতে পারেন।

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমরা কফি মুখে দিলে কি হয় আলোচনা করলাম। আশা করছি, কফি মুখে দিলে কি হয় বিষয়টি সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণাটি পেয়েছেন। এই সুবিধা গুলো জানার পরে আপনি আপনার রূপচর্চার জন্য কফি অবশ্যই ব্যবহার করে দেখবেন। আপনি আপনার আশানুরূপ ফলাফল পাবেন।

কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি দিয়ে রূপচর্চা

প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়। আপনি যদি আপনার ত্বকে এক্সফোলিয়েট করার পাশাপাশি ত্বক ফর্সা করার জন্য কফি ব্যবহার করতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কফি লাগালে আপনার ত্বকের জন্য নানা রকমের সুবিধা রয়েছে। তাহলে আসুন আমরা কিভাবে কফি দিয়ে ফেস মাস্ক তৈরি করবেন এবং কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো জেনে নেই।

কফি এবং মধুঃ কফি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং মধু ত্বককে হাইড্রেট এবং ময়েশ্চারাইজ রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা দেখায়। এজন্য আপনাকে দুই টেবিল চামচ কফি পাউডার, এক চা চামচ মধু একসাথে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তৈরি করা পেস্টটি আপনার সমস্ত মুখে এবং ঘাড়ে সমানভাবে লাগাতে হবে। ফেসপ্যাক টি লাগানোর পরে 15 মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

কফি, হলুদ এবং দইঃ এটি একটি অন্যতম কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়। কফি দিয়ে তৈরি এটা একটি কার্যকারী ফেসপ্যাক, যা মুখের তেল এবং ব্রন দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। হলুদে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং মুখের দাগ কমায়। দই ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং ত্বক হাইড্রেট করে। আর কফি আটকে থাকা ছিদ্রগুলো খুলতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়। 

কিন্তু এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করার পরে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কারণ কফিতে এক্স ফোলিউটিং ক্ষমতা আছে। এজন্য আপনাকে দুই টেবিল চামচ কফি পাউডার নিতে হবে, দুই টেবিল চামচ দই নিতে হবে, আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়া নিয়ে একসাথে মিশে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্ট টি আপনার মুখে ভালোভাবে লাগান এবং ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ঠান্ডা পানি।

কফি এবং কুমড়াঃ এটিও একটি অন্যতম কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়। আপনার ত্বক যদি নিস্তেজ হয়ে পড়ে তাহলে ত্বকের উন্নতির জন্য আপনি কফি দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। এই দুটি উপাদান আপনার ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে, কোলাজেন বৃদ্ধি করে ত্বকে নরম করতে সহায়তা করে। 

এজন্য আপনাকে আধা কাপ ছেচানো বিশুদ্ধ কুমড়া এবং দুই টেবিল চামচ কফি পাউডার একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। সামান্য পরিমাণ গোলাপ জল দিয়ে উপাদান গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর এটি আপনার সারা মুখে সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। মুখে প্রয়োগ করার পরে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানিতে ধুয়ে নিন এবং ময়শ্চারাইজার লাগান।

কফি আপনার ত্বকের জন্য বিশেষভাবে কাজ করবে‌ কফিতে বিদ্যমান এক্সপ্লিয়েটর রক্ত প্রবাহ কে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে। যা আপনার ত্বকের ব্রণ এবং ফেটে যাওয়া চিহ্ন কমাতে সহায়তা করে। কফি একটি দুর্দান্ত কোলাজেন হিসেবে কাজ করে। সুস্থ, প্রাণবন্ত এবং তার লাবন্যময় ত্বকের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী। 

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের কোলাজনের বিকাশ হ্রাস পায় এবং আমাদের সংস্পর্শে নিয়ে আসে। তাই উপরে আলোচিত কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি দিয়ে রূপচর্চা বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে আপনিও আপনার ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে পারেন। আশা করছি, কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।

তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি ব্যবহার করা যায় কিনা। আসুন আমরা তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি ব্যবহার করা যায় কিনা। বিষয়টি একটু জানার চেষ্টা করি। কফিতে রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা আমাদের ত্বকের ছিদ্রগুলোতে ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। 

পাশাপাশি কফি আমাদের ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। কফি একটি প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েট হিসেবে ত্বকের মৃত কোষ, ময়লা এবং ধুলোবালি অপসারণ করতে পারে। সেজন্য আমরা বলতে পারি হ্যাঁ, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি ব্যবহার করতে পারবেন এবং খুবই ভালো ফলাফল পাবেন। কফি আপনার প্রতিদিন ত্বকের যত্নে অর্থাৎ রূপচর্চায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি বিশেষ উপাদান। 

বিশেষ করে আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয়ে থাকে। কারণ ত্বকের ছিদ্র থেকে ময়লা, তেল এবং আটকে থাকা সিবাম থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। কফি আমাদের ত্বকে পুষ্টি অনুভব করানোর সাথে সাথে গভীরভাবে পরিষ্কার করে এবং এক্সফোলিয়েট করে। আপনি আপনার ত্বকের ধরনের উপর নির্ভর করে প্রতিদিন কফি ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারবেন। 

এতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনের মত অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যা ত্বকের কোষ থেকে টক্সিন দূর করে ফেলে। ত্বকের স্তর গুলিতে রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বিভিন্ন ধরনের কফি প্যাক তৈরি করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। 

উপরে আমরা অনেকগুলো কফি দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক এবং ফেস মাস্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়। এই পয়েন্ট গুলো ভালোভাবে পড়লে আপনি এই টিপস গুলো পেয়ে যাবেন।

কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা

আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা যদি দিন দিন হারিয়ে যায় এবং আপনি এই বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তায় থাকেন। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য সময় বের করে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন না। তাহলে আর্টিকেলের এই লেখাটি আপনার জন্য। আপনি চাইলে খুব কম সময়ের মধ্যে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। আমাদের সবার ঘরেই কমবেশি কফি রয়েছে। কফি খাওয়ার পাশাপাশি আপনি এটিকে রূপচর্চাতেও কাজে লাগাতে পারেন। কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো জেনে ঘরেই কফির নানা রকম ফেসপ্যাক তৈরি করে ফেলতে পারেন। কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। চলুন জেনে নেই কিভাবে কফির ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে।
  • ২ চামচ কফি পাউডার, এক চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ চালের গুড়া, সাথে পরিমাণ মতো কাঁচা দুধ মিশিয়ে এই কফি প্যাকটি তৈরি করে নিতে হয়। এই ফেসপ্যাক টি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
  • এক চামচ কফি পাউডার, এক চা চামচ কাঁচা দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে আপনার মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। পনেরো মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক টি সপ্তাহে দুই তিনবার ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে এবং ত্বক ফর্সা হবে।
  • আপনার ত্বক যদি রোদে পুড়ে কালো ভাব চলে আসে তাহলে এক চামচ টক দই, এক চামচ কফি পাউডার এবং এক চামচ হলুদের পেস্ট মিশিয়ে সম্পূর্ণ মুখে লাগিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট রাখুন। দুইবার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
কফি ফেসপ্যাক এর উপকারিতা হচ্ছে কফিতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মৃত কোষ গুলো মেরে ফেলে ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল করে তোলে। আপনি যদি নিয়মিত কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করেন তাহলে আপনি কিছুদিনের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। ফেসপ্যাক ব্যবহারের পরে অবশ্যই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার যার ব্যবহার করতে হবে। 

মনে রাখতে হবে ফেসপ্যাক ব্যবহারের পরে রোদে কিংবা ধুলাবালিতে যাওয়া যাবে না। কফি আপনার ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বকের ফ্রেশ, গ্লোয়িং এবং ইয়াং গড়ে তুলবে। আশা করছি, কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং কফি ফেসপ্যাক এর উপকারিতার সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণাটি পেয়েছেন।

শেষ কথা - কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়

আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেসব বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো হলো কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, মুখে কফি দিলে কি হয়, কফি দিয়ে হাত-পা ফর্সা করার উপায়, কফি দিয়ে ফেসিয়াল, কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি, আপনি কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, কফি মুখে দিলে কি হয় এবং কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায় গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। আমাদের আর্টিকেলের তথ্য থেকে আপনি যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। 

এরকম আরো নতুন নতুন বিষয় পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url