গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয় কি

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করনীয় কি। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় জড়ায়ুর মুখ খোলার জন্য করনীয় সমূহ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
জরায়ুর মুখ খোলা
গর্ভাবস্থায় নরমাল ডেলিভারির জন্য জরায়ুর মুখ খোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক সময় জরায়ুর মুখ খুলে না। জরায়ুর মুখ না খোলার কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব হয় না।

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় যদি জরায়ুর মুখ না খুলে তাহলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হয় না। বাচ্চা প্রসবের সময় এমন অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয় যে কারণে গর্ভে শিশুকে সিজারিয়ান মাধ্যমে delivery করা হয়। এই জটিলতা গুলোর মধ্যে একটি কারণ হলো গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ না খোলা। আজকের আর্টিকেল এর মধ্যে আমরা এমনই কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। 

যেমন গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়, গর্ভাবস্থায় জরায়ুর নিচে নামার লক্ষণ, গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নেমে গেলে করণীয়, গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাব ও পানি ভাঙ্গার পার্থক্য, গর্ভাবস্থায় জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ এবং গর্ভাবস্থায় যোনির পরিবর্তন। এই সবগুলো বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আজকের মূল বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করনীয় কি। তাহলে চলুন দেরি না করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভাবস্থায় যোনির পরিবর্তন - গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে অসংখ্য পরিবর্তন হতে পারে। আপনি যদি একজন গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয় জানবেন আমরা কি বিষয় নিয়ে কথা বলছি। এ সময় আপনার দেহে অবশ্যম্ভাবী রূপে অনেকগুলো হরমোনের পরিবর্তন হয়। আপনি ইতিমধ্যে আপনার শরীরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন।

 যেমন ওজন বৃদ্ধি, স্তনের পরিবর্তন ও চুল উজ্জ্বল এবং ত্বক ইত্যাদি। এক্ষেত্রে আরও এমন অনেকগুলো পরিবর্তন রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থা আপনার মধ্যে হতে চলেছে। যোনির পরিবর্তন সাধারণত প্রথম দিকে হয় না। প্রথম তিন মাস এটির কোনো পরিবর্তন হবে না। কারণ পরিবর্তনের সাপেক্ষে সময়টি বেশ তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় কোমরের বেল্ট এর নিচের অংশে নানা রকম পরিবর্তন সম্পূর্ণরূপে ঘটে। গর্ভাবস্থায় যোনির পরিবর্তন সম্পর্কে নিচে বলা হল।

যোনির পিএইচ মাত্রার পরিবর্তনঃ গর্ভবতী শরীরে যে সকল অংশগুলি প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত সেই সব অঞ্চলে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায় এবং এগুলোর মধ্যে জরায়ু এবং জলীয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রক্ত সরবরাহ সেখানকার রাসায়নিক পি এইচ ভারসাম্যকে বদলে ফেলে। এর ফলে যোনি থেকে আঠালো তরল পদার্থের গন্ধ বের হবে। তবে গন্ধটি যদি মাত্রাতিরিক্ত বা দুর্গন্ধযুক্ত হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

যোনির স্বাদ পাল্টে যাবেঃ আপনার জনির স্বাদ অনেক ক্ষেত্রে পাল্টে যাবে। স্বাদের এই পরিবর্তনের কারণ হলো আপনার যোনি অঞ্চলের রক্ত প্রবাহ বেড়ে গিয়ে যৌনাঙ্গ অঞ্চলের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়। গর্ভাবস্থায় এর স্বাদ নোনতা এবং ধাতব হয়ে ওঠে।

সাদাস্রাব বেড়ে যাবেঃ অধিকাংশ মহিলারা এটা মনে করে যে গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাব শুধুমাত্র তার প্রসবের সময় আসার ক্ষেত্রেই হয়। কিন্তু এটা সঠিক নয়। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের হরমোনের নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। যার পরিণাম স্বরূপ গর্ভাবস্থায় স্ত্রী অংশ পরিবর্তনগুলো হয়ে থাকে। যোনির প্রাচীর লিউকোরিয়া নামক একটি সাদা স্রাব উৎপাদন করে যা আপনার স্ত্রী অংশ গুলোকে যেকোনো স়ংক্রমন থেকে মুক্ত রাখে। সুতরাং যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি স্রাব নির্গত হয় সে ক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

মূত্রনালীতে সংক্রমণঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতীর মুন্ত্রনালীর সংক্রমনের ঝুঁকি থাকে। আপনার গর্ভাবস্থা ক্রমশ বাড়তে পেতে থাকার কারণে আপনার বর্ধিত জড়ায়ুতে আপনার মুন্ত্রথলির ওপর ভালো মাত্রায় চাপ প্রয়োগ করে। যা মুত্রথলির থেকে সম্পূর্ণ প্রসবের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। এটি মূলত মুত্রনালী সংক্রমণের কারণ।

যোনি মারাত্মক সংবেদনশীল হয়ে ওঠেঃ গর্ভাবস্থায় যোনি দারের রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। যার ফলে যোনি স্ফীত এবং সংবেদনশীল হয়।

নিচের দিকে ভেরিকোস শিরা দেখা দেয়ঃ যোনি অঞ্চলে রক্ত প্রবাহ বেড়ে গেলে আরেকটি পরিবর্তন দেখা দেয় সেটা হল ভেরিকোস শিরাগুলির উপস্থিতি। শিরা গুলির মধ্য দিয়ে উচ্চ পরিমাণে ধীরে ধীরে রক্ত প্রবাহিত হয়। সেটার প্রাচীর গুলো চাপা পড়ে।

যোনিতে ইস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়েঃ গর্ভবতী হোক বা না হোক উভয় ক্ষেত্রে মোটামুটি 75 পার্সেন্ট মহিলারা ইস্ট সংক্রমণের প্রভাবিত হয়ে থাকে। গর্ভবতীর শরীরে যেহেতু ইস্ট্রোজেন হরমোন এর মাত্রা এবং দেহের পিএইচ মাত্রার পরিবর্তন হয়। সে কারণে তারা সংক্রমণের ঝুঁকিতে বেশি থাকে ।

যোনির বর্ণ পরিবর্তনঃ সাধারণত যোনির রং গোলাপি কালার হয়ে থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থার সেই বর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। যোনিতে যেহেতু রক্ত প্রবাহের পরিমাণ বেড়ে যায় সেই কারণে এই সমস্যাটি হয়ে থাকে।

অন্তর্বর্তী লোমের বৃদ্ধিঃ রক্ত প্রবাহের প্রচুর পরিমাণে ইস্ট্রোজেন উপস্থিত থাকার ফলে দ্রুত বৃদ্ধি পা।ই যা পরবর্তী সময়ে লোমকূপের ছিদ্র গুলোর মুখ বন্ধ করে দেয় এবং পরিণাম হিসেবে প্রচুর ঘাম হয়।

যোনিতে চুলকানি হতে পারেঃ গর্ভাবস্থায় আপনি যোনির নিম্নাঞ্চলে চুলকানি বোধ করতে পারেন। যোনির স্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধির পরিবর্তনে এবং আরো অন্যান্য পরিবর্তন গুলির কারণে আপনি হয়তো অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ - গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

গর্ভাবস্থায় জরায়ু ইনফেকশন এর লক্ষণ গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো।

ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এর লক্ষণ
  • পাতলা এবং ধূসর রঙের স্রাব যায়।
  • স্রাব থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ আসে। অনেকটা পঁচা মাছের দুর্গন্ধের ম।ত বিশেষ করে সহবাসের পরে এমন দুর্গন্ধ হয়।
  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা, চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। তবে এ রোগের সাধারণত এমন কিছু হয় না।
ফাংগাল ইনফেকশন এর লক্ষণ
  • অতিরিক্ত পরিমাণে দই বা বা পনিরের মতো সাদা ও চাকা স্রাব হয়। এই স্রাবে কোন গন্ধ থাকে না।
  • যোনিপথের আশেপাশে প্রচুর চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া হয়।
  • প্রস্রাব অথবা সহবাসের সময় ব্যথা অথবা স্বস্তি হতে পারে।
যোনি বাহিত ইনফেকশন
  • অস্বাভাবিক গন্ধ এবং দুর্গন্ধ যুক্ত স্রাব।
  • হলুদ, সবুজ, লালচে অথবা ধূসর রঙের স্রাব।
  • যোনিপথের আশেপাশের ব্যথা, চুলকানি।
  • প্রসবের সময় জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা।
  • যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া এবং লালচে হয়ে যাওয়া।
এ সকল ইনফেকশন গুলো সাধারণত সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই আপনার পাশাপাশি আপনার সঙ্গীকে চিকিৎসা করা জরুরী। ইনফেকশনের চিকিৎসা না করালে তার কাছ থেকে পুনরায় আবার আপনার ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়া চিকিৎসার পর বিশেষ করে কনডম ছাড়া সহবাস করলে পুনরায় আবার এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কনডম ব্যবহার করার মত নিরাপদ শারীরিক সম্পর্কে নিয়ম মানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাব ও পানি ভাঙ্গার পার্থক্য

প্রিয় পাঠক, গর্ভবতী মায়ের প্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা তত বাড়তে থাকে। পানি ভাঙ্গা এর মধ্যে একটি। প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে সাধারণত পানি ভেঙ্গে থাকে। তবে পানি ভাঙ্গা ছাড়াও প্রসব হতে পারে। অনেকেই এই পানি ভাঙ্গা কে বিভিন্ন কিছুর সাথে গুলিয়ে ফেলে। যেমন প্রস্রাব কিংবা স্রাব। এগুলোর সাথে স্রাব সাধারণত একটু ঘন আঠালো এবং দুধের মত সাদা হয় ।

আর পানি ভাঙ্গার পানিতে হালকা হলুদ বা ফেকাসে রংয়ের এবং পাতলা একদম তরল হয়ে থাকে। তবে খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই যে পানি ভাঙ্গার সাথে সাথে একই সময়ে আপনার মিউকাস প্লাগ অর্থাৎ গর্ভকালে জরায়ু মুখে জমা হওয়া স্রাব মিশ্রিত হতে পারে। এটি কিছুটা রক্ত মিশ্রিত হয় ।যাকে শো বলে। 

অনেকেই আবার একে প্রস্রাব ভেবে নিশ্চিন্তে থাকেন। কিন্তু প্রস্রাব যেমন অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে কিন্তু তেমনটা থাকে না। হালকা হলুদ হয় না। কাজেই এরকম ভুল কখনোই করবেন না। পানি ভাঙার বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো দেখলে বুঝতে হবে যে প্রসব সময় ঘনিয়ে এসেছে।
  • যদি একবার পানি ভাঙ্গা শুরু হয় তাহলে তা চলতেই থাকে। কিভাবে সেই পানিটা বের হবে সেটা নির্ভর করে যে থলিটা সামান্য পরিমাণ চিড় ধরেছে নাকি ছিড়ে বা ফেটে গেছে। যদি চিরে যায় তাহলে আস্তে আস্তে গরিয়ে গরিয়ে পানি বেরোবে আর যদি ছিঁড়ে বা ফেটে যায় তাহলে এক ধাক্কায় অনেকগুলো গরম পানি একসাথে বেরিয়ে আসবে।
  • এই তরলটি একেবারে পানির মতো তাতে কোন রং বা গন্ধ নাই। তবে কখনো কখনো রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে।
  • পানি ভাঙার শুরু হওয়ার আগে পেটে বেশ একটা চাপ লাগে। কখনও কাপড় ছেঁড়ার মত আওয়াজ হতে পারে।
এই লক্ষণ গুলো যদি দেখা দেয় তাহলে ধরে নিতে হবে যে পানি ভাঙ্গা শুরু হয়ে গেছে। তারপরে আপনাকে পানি ভাঙার পরে যে সকল করণীয়গুলো রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নামার লক্ষণ

অনেক সময় বিভিন্ন কারণে জরায়ু নিচের দিকে নেমে যেতে পারে। একে ইউটেরাল প্রোলাপস বা পদ্মরোগ বলা হয়। জরায়ু নিচের দিকে নেমে যাওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে। চলুন লক্ষণ গুলো কি কি জেনে নেওয়া যাক।
  • যদি জরায়ু নিচের দিকে নেমে যায় তাহলে ভ্যাজাইনার মধ্যে ভারী ভারী অনুভব হয়।
  • জরায়ু নিচের দিকে নেমে আসলে প্রস্রাব এবং পায়খানা করার সময় অসুবিধা হয়। বাইরের দিকে বের হয়ে আসে তখন সেটি আবার আঙ্গুল দিয়ে ভিতরের দিকে দিয়ে দিতে হয়।
  • সহবাসের সময় ব্যথা অনুভূত হতে পারে এবং হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।
  • কোমরে এবং পিঠে ব্যথা হয়।
  • সাদা স্রাব অথবা রক্তচাপ অনেক সময় ঘা জনিত কারণে পুঁজ, রক্ত স্রাব ক্ষরণ হতে পারে।
  • শেষের দিকে জরায়ুতে ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি এবং নানা রোকম জটিলতা দেখা দে।য়
সাধারণত অপারেশনের মাধ্যমে জরায়ু অপসারণ করা হয়। কিন্তু অপারেশন জটিল এবং দীর্ঘ ও ঝুঁকিপূর্ণ। আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনারা হয়তো এতক্ষণে বুঝে গেছেন যে জরায়ু নিচে নেমে আসার প্রকৃত লক্ষণ গুলো কি।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নেমে গেলে করণীয় - গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করনীয় কি। এ বিষয়টি আলোচনা করার পাশাপাশি আমরা গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নেমে গেলে করণীয় কি এ বিষয়টি সম্পর্কেও জানব। গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নেমে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে এবার আমরা জানবো। জরায়ুর মুখ যদি বাইরের দিকে বের হয়ে আসে তাহলে দেরি না করে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 

ব্যায়াম এবং ওষুধের মাধ্যমে এটি চিকিৎসা করা হয়। তবে জটিলতা যদি বেশি হয় তাহলে অপারেশন করতেও হতে পারে। চিকিৎসা না করলে দুটি সমস্যা দেখা দিতে পারে একটি হলো এন্টারিওর অফ রোলাক্স এবং অপরটি পোস্টেরিয়র ভ্যাজাইনাল প্রলাপস।

প্রতিকার
  • স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে। পুষ্টিকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরী। তবে ভারী জিনিসপত্র তোলা যাবে না এবং কিছু করতে হলে কোমর বা পিঠে চাপ না দিয়ে পায়ের উপরে চাপ দিতে হবে।
  • সন্তান ডেলিভারির সময় অবশ্যই অভিজ্ঞ ধাত্রী বা হাসপাতালে প্রসব করানো ভালো।
  • প্রসবের পরবর্তী সময়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
  • দীর্ঘ সময় ধরে কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাবের সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসা করাতে হবে।
  • সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।
  • দুই সন্তানের জন্ম দানের ব্যবধান যেন কখনোই দুই বছরের কম না হয়।
  • নিয়মিত ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • সবজি বা ফলমূল বেশি করে খেলেও এ ধরনের সমস্যা ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
  • ধূমপান করা যাবে না এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে

গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

গর্ভাবস্থায় প্রসবের সময় জরায়ুর মুখ না খোলার কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব হয় না। বিভিন্ন কারণে জরায়ুর মুখ খুলে না। গর্ভাবস্থায় যদি পূর্ণ গর্ভকালীন সময়ে পার হয়ে যায় এবং বাচ্চা সঠিক পজিশনে থাকে তাহলে জরায়ুর মুখ খুলতে ছয় থেকে দশ ঘন্টা বা ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।  
গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ
গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয় কি তা জানার আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে জরায়ুর মুখ না খোলার কারণ গুলো কি। চলুন কারণ গুলো জেনে নেওয়া যায়।
জরায়ুর মুখ যদি দুর্বল হয় তাহলে প্রসবের সময় মুখ খোলে না।
  • জরায়ুর মুখ যদি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা ছোট হয় তাহলে জরায়ুর মুখ খোলার সম্ভাবনা খুবই কম।
  • জরায়ুর মুখে যদি ক্ষত বা ব্যথা থাকে তাহলে জরায়ুর মুখ খোলার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • জরায়ুতে যদি অপারেশন বা জরায়ু টিউমার অপারেশন করা হয় তাহলে ডেলিভারি সময় জরায়ু মুখ খোলার সম্ভাবনা কম থাকে।
গর্ভাবস্থায় যদি শারীরিক অবস্থা ভালো থাকে এবং বাচ্চার সঠিক ওজন এবং সুস্থ সঠিক পজিশনে থাকে তাহলে নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভব। গর্ভাবস্থার শুরু থেকে যদি কিছু নিয়ম কারণ মেনে চলা হয় তাহলে খুব সহজে জরায়ুর মুখ খুলে যায় এবং নরমাল ডেলিভারি হতে পারে। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
  • গর্ভাবস্থার শুরু থেকে একজন ডাইনি বিশেষজ্ঞের আওতায় চিকিৎসাধীন থাকতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা শাক-সবজি এবং ফলমূল রাখতে হবে।
  • প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আধাঘন্টা হাঁটতে হবে অথবা হালকা শরীর চর্চা করতে হবে।
  • প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর রুটিন চেকআপ করতে হবে। দেখতে হবে বাচ্চা সঠিক পজিশনে রয়েছে কিনা।
  • মানসিক টেনশন করা যাবে না।
  • মনে নরমাল ডেলিভারি প্রস্তুতি এবং আশা রাখতে হবে।
  • অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় শুরু থেকে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকলে নরমাল ডেলিভারি হতে পারে। এ সময় চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেয়।
সবশেষে আমরা এটা বলতে পারি যে মা হওয়ার জন্য একজন নারী হিসেবে আমাদের জরায়ু ভালো রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গর্ভাবস্থায় নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য সঠিক সময়ে যেন জরায়ুর মুখ খোলে সেজন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে।

শেষ কথা - গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয় কি এবং সেই সাথে জরায়ু সম্পর্কিত আরো কয়েকটি সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাহলে এতক্ষণে খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন ।আশা করছি, আমাদের লেখাটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। লেখাটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। 

যাতে অন্যরাও এই সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে বা আমাদেরকে কোন মতামত জানানো থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। এতক্ষন ধৈর্য ধরে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় পোস্ট লিখে প্রকাশ করে থাকি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url