ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় - ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় এবং ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম জানব। প্রাকৃতিক উপায়ে এবং আর সঠিক যত্নের মাধ্যমে চুল ঘন করা যায়। ছেলেদের চুল ঘন করার এই উপায় গুলো নিয়েই আলোচনা থাকছে আজকের আরটিকেলে।
চুল ঘন করার উপায়
আমাদের সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চুল।চুলের ঘনত্ব যদি কমে যায় বা চুল পাতলা হয়ে যায় তাহলে আমাদের সৌন্দর্য অনেকটাই কমে যায়। চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এখনকার সময়ে খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। এই আর্টিকেল আমরা এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।

ভূমিকা

ছেলেরা এমনিতেই ত্বক এবং রূপের ব্যাপারে কম সচেতন। অনেকেই এগুলা নিয়ে খুবই অবহেলা করেন। কিন্তু ছেলেদের খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত ঘুম এবং দুশ্চিন্তা এগুলোর কারণে ত্বক এবং চুল নিয়ে বেশি সমস্যায় থাকেন। আজকের আর্টিকেলে আমরা ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার শ্যাম্পু, ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়, ছেলেদের নতুন চুল গজানোর উপায়, চুল পড়া ডাক্তারি চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

আশা করছি, সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আপনি ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় সম্পর্কে খুব ভালো একটি ধারণা পাবেন। বিস্তারিত নিচে দেখুন।

ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

চুল পড়ে যাওয়া এমন একটি সমস্যা যা আস্তে আস্তে মানুষের সমস্যা হয়ে ওঠে। নানা কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। মাথার স্কাল্পে যখন পুষ্টির অভাব হয় তখন অতিরিক্ত পরিমাণে চুল ঝরে পড়ে। স্কাল্পে যদি সঠিক তেল মালিশ করা হয় তাহলে আবার নতুন করে চুল গজায়। তেলে যেহেতু সুগন্ধ থাকে তাই মাথায় তেল মালিশ করার পর প্রশান্তি অনুভূত হয় এবং মানসিক চাপ কমে। 

চলুন এবারে আমরা ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম গুলো জেনে নিই। এগুলো ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় হিসেবেও বিবেচিত হয়।

রোজমেরি এসেনসিয়াল অয়েলঃ রোজমেরি এসেনসিয়াল অয়েল রক্তনালী প্রসারিত করে এবং মাথায় কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। চুল গজাতে সহায়তা করে। এই তেলটি মাথার ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং পুষ্টি যোগান দেয়। এই তেলটি চুল ঘন হতে সহায়তা করে। রোজমেরী এসেনসিয়াল অয়েলটি নারকেলের তেলের সঙ্গে পাঁচ ছয় ফোঁটা মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগাতে হবে। এই এই তেলটি মাথায় দশ পনেরো মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলে দিতে হবে।

লেমন গ্রাস এসেনশিয়াল ওয়েলঃ এই তেলটি মাথার খুশকি কমাতে সাহায্য করে। খুশকি চুল পড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। লেমন গ্রাস এসেনশিয়াল ওয়েলের সুগন্ধ অত্যন্ত প্রশান্তি দায়ক এবং এটি স্কাল্পের শুষ্কতা দূর করে। আমরা চুলে নিয়মিত যে শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করি তার সাথে 3-4 ফোটা লেমন গ্রাস এসেনসিয়াল ওয়েল মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

বার্গমেট এসেধশিয়াল অয়েলঃ এই তেলটি এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যকর। মাথার স্কাল্পের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এটি স্কাল্প ঠান্ডা রাখে। ফোড়া বা অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দূর করে। নারকেল তেলের সাথে তিন চার ফোটা বার্গমেট তেল মিশিয়ে স্কালপে লাগাতে হবে। তারপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

সাইডার উড অয়েলঃ ভবিষ্যতে যেন মাথা থেকে চুল না পরে সেজন্য সাইডার উর তেলটি ব্যবহার করা হয়। এই তেলটি স্কাল্পে তেল উৎপাদনকারী গ্রন্থি গুলোর ভারসাম্য বজায় রাখে। চুলের জন্য দরকারি ব্যাকটেরিয়া গুলোকে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেয়। এই তেলে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা চুলের খুশকি, শুষ্ক এবং ফ্লাকি স্কালপের সমস্যা দূর করে। নারকেল তেলের সাথে তিন ফোটা সাইডার এসেনসিয়াল অয়েল মিশিয়ে স্কালপে খুব ভালোভাবে লাগাতে হবে।

নারিকেল তেলঃ নারিকেল তেল সব ধরনের চুলের জন্যই উপযোগী। এই তেল চুল সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে। নারিকেল তেল খুশকি দূর করতে, চুলে পুষ্টি জোগাতে, এবং চুল ঝলমলে করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। আপনি যদি চুলে আগা পর্যন্ত কন্ডিশনার করতে চান নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারেন।

অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এতে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই এটি স্পর্শকাতর চুলের জন্য খুবই ভালো। অলিভ অয়েল স্কাল্পের মশ্চারাইজার হিসেবে খুবই ভালো কাজ করে। এতে বিদ্যমান অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

অ্যাভোকাডো তেলঃ ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের মধ্যে অ্যাভোকাডো তেল একটি। এই তেলে ভিটামিন এ, বি, ই, ডি, আইরন, amino এসিড এবং ফলিক এসিড সহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে। যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

বাদাম তেলঃ যাদের মাথায় অতিরিক্ত চুল পড়ে যায় তাদের জন্য বাদাম তেল খুবই উপকারী। আপনি যদি এই তেলটি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে তিন মাসের মধ্যে আপনার চুল ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত গজাবে। চুলের গোড়া পরিষ্কার রাখে। এই তেলটি চুলে সপ্তাহে চারবার লাগাতে হবে। যাতে ধুলাবালি এবং দূষণকারী উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এতক্ষণ আমরা ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম গুলো জানলাম। আশা করছি ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেল গুলো সম্পর্কে আপনি ধারণা পেয়েছেন। এর মধ্যে থেকে আপনি আপনার সমস্যা বুঝে যেকোনো একটি তেল ব্যবহার করতে পারেন।

ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার শ্যাম্পু

বর্তমান বাজারে চুল পড়া কমানোর জন্য বিভিন্ন রকম শ্যাম্পু বের হয়েছে। কিন্তু চুল পড়া বন্ধ করতে সঠিক শ্যাম্পু খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। চুলের এই সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য এমন কিছু শ্যাম্পু রয়েছে যা আপনার চুলের জন্য সঠিক হতে পারে। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা চুল পড়া সমস্যা সমাধান করে এমন কয়েকটি শ্যাম্পুর নাম এবং কার্যকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করব।

মিনোক্সিডিল শ্যাম্পুঃ এটি চুল পড়া রোধের জন্য বিশেষ একটি শ্যাম্পু। যা নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

বায়োটিন সমৃদ্ধ শ্যাম্পুঃ বায়োটিন (ভিটামিন বি৭) চুলের বৃদ্ধি এবং মজবুত করতে সহায়তা করে। এই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে।

সালফেট ফ্রি শ্যাম্পুঃ সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু চুলের স্বাভাবিক আদ্রতা ধরে রাখে এবং চুলের ক্ষতি অনেকাংশে কমায়।

কোকোনাট জল শ্যাম্পুঃ এটি একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু। যা ইনফেকশন এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ করে।

এগুলো ছাড়াও আরো কিছু শ্যাম্পু রয়েছে যেগুলা চুল পড়া রোধ করতে সহায়তা করে। যেমন-
  • হিমালয়া হারবালস আন্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু
  • সানসিল্ক হেয়ার ফল সলিউশন শ্যাম্পু
  • ডাভ হেয়ার ফল রেসকিউ শ্যাম্পু
  • প্যানটেড প্রো - ভি হেয়ার ফল কন্ট্রোল শ্যাম্পু
  • লরিয়াল প্যারিস ফল রেসিস্ট 3x এন্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু
  • ক্লিয়ার অ্যান্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু
  • হেড এন্ড শোল্ডারস এনটি হেয়ার ফল শ্যাম্পু
  • ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পু
  • ট্রেসেমে হেয়ার ফল ডিফেন্স শ্যাম্পু
উপরে উল্লেখিত শ্যাম্পু গুলো আপনার চুলের সমস্যা সমাধান দিতে পারে। তাই আপনি যে কোন ফর্মুলা বা বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত উপাদান গুলো বেছে নিতে পারেন।

ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়

বর্তমান যুগের ছেলেরা চুলের যত্ন অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। হেয়ার কালার করে। কেউ কেউ জেন্স পার্লারেও যায়। এর কারণ তাদের চুল পড়ে পাতলা হয়ে যাচ্ছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজন চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। একে যদি আমরা স্বাভাবিক বলে ধরে নেই তাহলে নিজের ভালো থাকাকে অবহেলা করা হবে। কথায় আছে আগে দর্শন ধারী পরে গুন বিচারি। তাই নিজের সৌন্দর্য বজায় রাখতে চুল পড়া কমিয়ে চুলের ঘনত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। নিম্নে কয়েকটি ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় তুলে ধরা হলো।

পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রসে জীবাণু নাশক উপাদান রয়েছে। পেঁয়াজের রস চুলের গ্রোথ এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। পেঁয়াজের বিদ্যমান সালফার চুল পড়া, চুল ভেঙ্গে যাওয়া এবং অকালে চুল পেকে যাওয়া আটকায়। পেঁয়াজের রস চুলের লেভেল ধরে রাখতে সহায়তা করে। চুলের গোড়ায় গোড়ায় পুষ্টি যোগায়। এ কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে চুলের ঘনত্ব বেড়ে যায়। 

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাথায় হালকা করে পেঁয়াজের রস লাগিয়ে নিতে হবে। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য আপনি সপ্তাহে তিন দিন পেঁয়াজের রস ব্যবহার করুন। একমাস পরে আপনি আপনার চুলের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

এলোভেরাঃ এলোভেরা চুল পড়া কমানোর একরকম দুর্দান্ত রসদ রয়েছে। আপনি যদি সপ্তাহে 3-4 দিন গোসলের আগে চুলে এলোভেরা ব্যবহার করেন তাহলে চুল দূষণমুক্ত হয়। এর ফলে চুল পড়া অনেকটাই কমে যায়। সেই সঙ্গে গ্রে হেয়ার সমস্যার সমাধান হবে। আপনি চাইলে এলোভেরা সরাসরি ব্যবহার করতে পারবেন। আবার এলোভেরার পাতার জেল বের করে সামান্য পানি মিশিয়ে একদিনের জন্য ফ্রিজে রেখে দেন। এর পরের দিন গোসলের ৩০ মিনিট আগে চুলে লাগালে ভালো ফলাফল পাবেন।

গ্রিন টিঃ আমরা নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য অনেকেই নিয়মিত গ্রিন টি খাই। কিন্তু আমরা চুলকে ফিট রাখার জন্য গ্রিন টির ব্যবহার করতে পারি। চুলের জন্য গ্রিন টি ব্যবহার বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে চুল পড়া রোধ করতে উপকারী। 

এজন্য মাঝারি মাপের কাঁপে গরম পানি নিয়ে তাতে দুইটি গ্রিন টি এর ব্যাগ ভিজিয়ে দিতে হবে। ঠান্ডা হলে মাথার ত্বকে লাগাতে হবে। আট দশ দিন ব্যবহার করলেই চুল পড়া অনেকটাই কমে যাবে। ফলে চুলের ঘনত্ব আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে।

পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবেঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে শুধু চুল পড়া সমস্যা নয় আপনার ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যার সমাধান হবে। তাই আমাদের সকলের উচিত পরিমাণ মতো পানি পান করা। শরীরে যদি পানির ঘাটতি দেখা যায় তাহলে হেয়ার গ্রোথ এবং হেয়ার ফলের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রতিদিন অন্তত তিন লিটার পানি পান করা উচিত। শরীরে তরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য ফ্রুট জুস খাওয়া যেতে পারে।

ধুমপান ত্যাগ করতে হবেঃ অনেকেই ধূমপানকে স্মার্টনেস মনে করেন। এ বিষয়টি ভাবায় একটি আনস্মার্ট ব্যাপার। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এটাই যে, আমাদের দেশে তরুণদের অধিকাংশই ধূমপানের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এর ফলে দেহের ভেতর যেমন প্রভাব পড়ছে তেমনি দীর্ঘদিন ধূমপানের মাথায় চুল পড়া বেড়ে যাচ্ছে। 

ধূমপানের ফলে মাথায় সঠিক মাথায় রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে চুল পুষ্টি পায় না। প্রাণহীন হয়ে শুকিয়ে যায়। তাই আপনি যদি আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়াতে চান তাহলে ধূমপান ছাড়ুন। ধূমপান ছাড়ার তিন মাস পর থেকে চুলের যত্ন নেওয়া শুরু করুন। মাথায় কয়েকদিন পর পর তেল দিন। চিরুনি ব্যবহার করুন। এতে মাথার রক্ত সঞ্চালন বাড়বে সেই সাথে চুলের বৃদ্ধি সঠিক থাকবে।

উপরে উল্লেখিত ছেলেদের চুল ঘন করার উপায় গুলো যদি আপনি মেনে চলতে পারেন তাহলে আশা করা যায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি ভাল ফলাফল পাবেন।

ছেলেদের নতুন চুল গজানোর উপায়

আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে নানা কারণে চুল পড়তে থাকে। বংশগত বা পরিবেশের প্রভাব ইত্যাদি। এ কারণে আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। আবার মনে হয় যদি কৈশোরের মতো চুল আবার কোনভাবে ফিরে পাওয়া যেত। এজন্য আমাদের মাথার ত্বকে উদ্দীপনা তৈরি করতে হবে। তাহলে নতুন করে চুল গজানো সম্ভব। প্রতিটি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা রয়েছে। এটাকে যদি বাড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে নতুন করে চুল আবার গজায়। এজন্য আমরা কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারি।

মাসাজ করাঃ চুলের নিয়মিত মাসাজ করতে হবে। এতে করে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক উদ্দীপিত হবে। এক টেবিল চামচ ভিটামিন ই নিয়ে মাথায় ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। ভিটামিন এ চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় নিউট্রেশনের যোগান দিয়ে থাকে। ভিটামিন ই এর সাথে চায়ের নির্যাস যোগ করে লাগাতে পারেন। 

এই দুটো উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে হাতের তালু এবং আঙ্গুলের সাহায্যে সম্পূর্ণ মাথায় চুলের গোড়াতে লাগিয়ে নিতে হবে। এভাবে পাঁচ ছয় মিনিট মাসাজ করতে হবে। তারপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিতে হবে। কিছুক্ষণ পর সাধারণভাবে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। মাথায় চুল গজানোর জন্য প্রতিদিন তিনবার মেসেজ করতে হবে। কিন্তু বারবার শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না। এতে চুলের ক্ষতি হবে।

ভাইব্রেটিক মাসাজঃ প্রতিটি চুলের গোড়ায় গোড়ায় হেয়ার ফলিকল থাকে। ভাইব্রেশন এর মাধ্যমে যদি ফলিকলের উদ্দীপনা বাড়ানো যায় তাহলে নতুন চুল গজানো সম্ভব। এমন ভাইব্রেটিং মাসাজার বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। যে জায়গার চুল বেশি পড়ে যাচ্ছে সেদিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এভাবে দিনে ৫-১০ মিনিট আপনার মাথার ত্বকে ভাইব্রেট করুন। ভালো ফলাফল পেতে এটাও আপনাকে দিনে তিন চারবার করা প্রয়োজন।

সঠিক শ্যাম্পুঃ মাথায় এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে যা আপনার মাথার ত্বকের মৃত কোষগুলো ঝরিয়ে ফেলতে পারবে। এই মৃত কোষগুলো স্কাল্পের ফলিকল ব্লক করে রাখে। যে কারণে নতুন চুল গজানোর পথে বাধা দেয়। কেননা তখন ত্বকের রক্ত সঞ্চালন অনেকটাই কমে যায়। খুব অল্প পরিমাণ শ্যাম্পু নিয়ে মাথায় মাসাজের মত লাগিয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এটা দিনে একবার করতে হবে।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আমাদের চুল কেরাটিন নামক একটি উপাদান দিয়ে গঠিত। এটি এমমিনো এসিড দিয়ে তৈরি এক ধরনের প্রোটিন। তাই নতুন চুল গজানোর জন্য শরীরকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন দিতে হবে। মাছ, মাংস, পনির, দুধ, ডিম, প্রতিদিন এগুলোর যেকোনো একটি খেতে হবে। 

নতুন চুল গজানোর জন্য মাছ, মাংস, পনির, সয়াবিন, মটরশুটি, কলা, বাদাম, ইত্যাদিও খেতে পারেন। পরিমিত পরিমাণে আয়রন এবং জিংক নতুন এবং দ্রুত চুল গজাতে সহায়তা করে। মটরশুটি, বাদাম, কলিজা, মাংস, দুধ এগুলোতে জিংক এবং আয়রন বিদ্যমান। পেয়ারা, লেবু, কমলা, আনারস, কামরাঙ্গা, কাঁচা মরিচ, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। 

এগুলো আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং গজানোর জন্য সহায়তা করবে। কালোজিরা নতুন চুল গজানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাই মাথায় কালোজিরা তেল ব্যবহার করা এবং খাবারে কালোজিরা ব্যবহার করা খুবই ভালো।

এছাড়াও কিছু সাধারণ যত্নের মাধ্যমে আপনি নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে। যেমন-
  • নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখতে হবে এবং আঁচড়াতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত চুল আঁচড়ানো যাবে না। এতে করে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে।
  • পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে 10 মিনিট রাখতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে নতুন চুল গজাবে।
  • মেহেদী পাতা কিছুদিন ঘন ঘন লাগালে চুল পড়া কমে যাবে। মেহেদি পাতা বেটে লাগানোর পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
  • শুকনা আমলকি পানিতে ভিজিয়ে লাগাতে পারেন।
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করা যায় ছেলেদের মাথায় খুব সহজেই নতুন চুল গজাবে এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।

মানুষ জানতে চায় এমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

প্রশ্নঃ চুলে কি ব্যবহার করলে চুল ঘন হয়?
উত্তরঃ চুলে নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সাথে মেথি ভিজিয়ে মাথায় মেসেজ করলে নতুন চুল গজায়। আবার এলোভেরা, আমলকি, মেহেদি পাতা এগুলো ব্যবহার করলেও চুল ঘন হয়।

প্রশ্নঃ চুলে কি দিলে চুল সোজা হয়?
উত্তরঃ ক্যাস্টর অয়েল এবং নারিকেল তেল একসাথে গরম করে নিয়মিত মাথার ত্বকে এবং সম্পূর্ণ চুলে মাসাজ করলে চুল ধীরে ধীরে সোজা হতে থাকে।

প্রশ্নঃ পুরুষের পাতলা চুল কি আবার ঘন হতে পারে?
উত্তরঃ বেশিরভাগ সময় অন্তর্নিহিত কারণ গুলোর উপর নির্ভর করে পাতলা চুল আবার পুনরুজ্জীবিত হতে পারে এবং আগের ঘনত্ব ফিরে পেতে পারে। এজন্য এটি কি কারণে হতে পারে তা বোঝা আগে দরকার। তারপরে সঠিক চিকিৎসা নিলে পাতলা চুল আবার ঘন হয়ে উঠবে।

প্রশ্নঃ চুল স্ট্রেইট করলে কি কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ চুলের হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল পড়া সমস্যা বেড়ে যায়। চুলের তৈলাক্ত ভাব অনেকটা কমে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুলে জট পড়ার সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্নঃ চুল সোজা করা কি ক্ষতিকর?
উত্তরঃ চুল সোজা করা চিকিৎসায় আপনার মাথার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। কারণ এই ক্ষেত্রে কিছু রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় যেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে ত্বক পুড়ে যায়। এমনকি ভুল ভাবে ব্যবহার করলে এটি আপনার চুলের ক্ষতি করতে পারে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ছেলেদের চুল ঘন করার উপায়, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, ছেলেদের নতুন চুল গজানোর উপায়, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার শ্যাম্পু এবং মানুষ জানতে চায় এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। 

এরকম আরো নতুন নতুন পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ ধৈর্য ধরে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url