গ্লিসারিন কোনটা ভালো - গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে গ্লিসারিন কোনটা ভাল এবং গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয় এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। শীতকাল আসলেই গ্লিসারিন আমরা নানাভাবেই ব্যবহার করে থাকি। তবে গ্লিসারিন কোনটা ভালো সে ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানিনা। এগুলো নিয়েই আজকে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের আরো কিছু বিষয়ে জানাতে চলেছি। যেমন গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম, গ্লিসারিন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার নিয়ম, গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়, ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয় এবং গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক। এসব গুলো বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করবেন। বিস্তারিত নিচে দেখুন।
গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম
গ্লিসারিন ত্বক এবং চুলের যত্নে একটি জনপ্রিয় উপাদান। গ্লিসারিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জেনে ব্যবহার করলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গ্লিসারিন এর আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা ত্বককে ময়শ্চারাইজড এবং কমল রাখতে সহায়তা করে। তবে এজন্য গ্লিসারিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করা উচিত। নিম্নে গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম তুলে ধরা হলো।
- আপনার ত্বক পরিষ্কার করার পরে ভেজা ত্বকে অল্প পরিমাণ লাগান। এতে করে ত্বক কোমল এবং মসৃণ থাকবে।
- গোলাপ জলের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়ে তা টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ত্বকের পিএইচ লেভেল বজায় থাকবে।
- দুধ, মধু বা অ্যালোভেরার সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে ফেস মাস্ক তৈরি করতে পারেন। এটি ত্বকের পুষ্টি যোগায় এবং ত্বক মশ্চারাইজ করে।
- শ্যাম্পু করার পরে চুলে অল্প পরিমাণ গ্লিসারিন লাগালে চুল ময়েশ্চারাইজ হয় এবং মসৃণ থাকে।
- অলিভ অয়েলের সাথে গ্লিসারিন হেয়ার মাস্ক তৈরি করে লাগাতে পারেন। এতে করে চুল শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
- শুষ্ক আবহাওয়ায় গ্লিসারিন ত্বক থেকে আদ্রতা সরিয়ে নিতে পারে। তাই এই সময় অন্য কোন ময়েশ্চারাইজার এর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গ্লিসারিন ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে করে ত্বক আরো বেশি তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে।
- নতুন কোন পণ্য ব্যবহার করার আগে ছোট একটা জায়গায় প্যাঁচ টেস্ট করে নেওয়া উচিত। এতে করে যদি কোন এলার্জি হয় তাহলে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- সব সময় বিশুদ্ধ গ্লিসারিন ব্যবহার করবেন।
- অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের গ্লিসারিন দেখে কিনুন।
আপনি যদি এই সকল নিয়ম মেনে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন এবং গ্লিসারিন কোনটা ভালো দেখে ব্যবহার করেন তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশা করা যায়।
গ্লিসারিন দিয়ে ফর্সা
ফর্সা এবং মসৃণ ত্বক আমরা সবাই চাই। কিন্তু রাতারাতি তো কোন জাদু হয় না! কিন্তু সুন্দর ত্বক পাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। সঠিক উপায় ত্বকের যত্ন নিলে তা আমাদের সবারই হবে। এজন্য আমরা বেছে নিতে পারি এমন একটি উপাদান যা আমাদের এই সমস্যা সমাধান করবে। গ্লিসারিনের ব্যবহার আমাদের কাছে অজানা নয়। দাগ, ছপবিহীন উজ্জ্বলতা পাওয়ার জন্য গ্লিসারিন এবং গোলাপজল একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন।
এতে করে ত্বকের নানারকম উপকার হবে। জেনে নিন কিভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। আপনার ত্বকের উপর সুরক্ষা তৈরি করে। ফলে সরাসরি ত্বকের উপরে কোন সমস্যা হয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতার ঘাটতি পড়ে না। সুরক্ষা স্তর ত্বককে যেকোনো ক্ষতি থেকে রক্ষা করে রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে পারে।
এই গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতায় ঘাটতি তৈরি হতে দেয় না। আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন ত্বকের উপরে তার কোন প্রভাব পড়ে না। অন্যদিকে গোলাপ জলের উপকারিতা ধরে রাখার পাশাপাশি প্রদাহ কমানো সহ নানা রকম উপকার করে। গোলাপ জলে রয়েছে ট্যানিন এবং এন্থ্রোসিয়ানিন।
গোলাপের নির্যাসে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে, ত্বকের লাল ভাব দূর করে এবং কোষকে সুরক্ষিত রাখে, ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। এজন্য আপনাকে গোলাপজল এবং গ্লিসারিনের টোনার ব্যবহার করতে হবে। বাড়িতে বানিয়ে নেওয়া সম্ভব এই ধরনের টোনার। জেনে নিন এই টোনার বানানোর নিয়ম।
একটি পাত্রে চার টেবিল চামচ গোলাপ জল এবং ২ চা চামচ গ্লিসারিন নিতে হবে এবং একটি স্প্রে বোতল নিতে হবে। গোলাপজল এবং গ্লিসারিন ভালোভাবে মেশাতে হবে। তারপর স্প্রে বোতলে ঢেলে নিয়ে বোতল ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে মুখে স্প্রে করতে হবে। এতে করে উপকার পাবেন। আপনি ভালো ফলাফলের জন্য দিনে দুইবার এই স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। এই স্প্রে ব্যবহার করার আগে অবশ্যই মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার নিয়ম
শীতকালে আমরা অনেকেই গ্লিসারিন মুখে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকে গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার সঠিক নিয়ম জানি না। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও সঠিক ধারণা পাবেন। গ্লিসারিন এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বককে হাইড্রেট রাখে এবং নরম রাখতে সহায়তা করে। নিচে আমরা গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার নিয়ম তুলে ধরলাম।
- গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার আগে অবশ্যই মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এজন্য আপনি ভালো মানের ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। যাতে করে মুখে কোন ময়লা বা তেল না থাকে।
- এরপর আপনি শুধু গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন অথবা শুধু গ্লিসারিন এর সাথে গোলাপজল এবং পানির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- গ্লিসারিন ত্বকে লাগানোর সময় হালকা হাতে মুখে মাসাজ করতে হবে। এতে আপনার ত্বকের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক মসৃণ এবং নরম হবে।
- ঘুমানোর আগে ত্বকে গ্লিসারিন লাগিয়ে ঘুমালে এটি সারারাত আপনার ত্বককে আদ্র রাখবে।
কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। যদি দীর্ঘ সময় ব্যবহার করেন তাহলে এটি ত্বকের অতিরিক্ত আদ্রতা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত কিন্তু অতিরিক্ত নয়। আশা করছি, গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার নিয়ম আপনি বুঝতে পেরেছেন।
গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়
অনেকেই এটা জানতে চান যে গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়? আপনার ত্বক যেমনই হোক না কেন তৈলাক্ত ত্বক, সংবেদনশীল ত্বক বা শুষ্ক ত্বক যেকোনো ত্বকের গ্লিসারিন ব্যবহারে অনেক সুবিধা রয়েছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ গ্লিসারিন ত্বকের যত্নে পণ্যগুলোর পরিবেশের উপর কোন আপত্তিকর প্রভাব ফেলে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক মুখে দিলে কি হয়।
ত্বক সতেজ রাখেঃ ত্বকের গ্লিসারিন ব্যবহার করলে গ্লিসারিন আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং এটি একটি দারুন স্বাস্থ্যকর আভা দেয়। ত্বকের উপরের স্তরে আদ্রতা টেনে আনে। গ্লিসারিন বলি রেখা কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে করে নরম এবং মসৃণ করে। গ্লিসারিন ত্বকের বার্ধক্য কমাতেও সহায়তা করে।
ব্রণ দূর করেঃ ব্রণের জন্যও আমরা যে সকল ক্লিনজার বা ময়েশ্চারাইজার গুলো ব্যবহার করি সেগুলোতে কিছু ত্বকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যায়। এ সকল পণ্য কিছু মানুষের জন্য প্রদাহ এবং জ্বালা সৃষ্টি করে। ব্রণকে আরো খারাপ ভাবে জাগিয়ে তোলে। তবে গ্লিসারিন কোনো রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই আপনার ত্বক সুন্দর করতে ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বকের জন্য নিরাপদঃ আপনি আপনার ত্বকের যত্নে এমন উপাদান গুলি বেছে নিবেন যেগুলো আপনার ত্বককে কমল রাখে, ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসকে বাইরে রাখে, এমনকি আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আপনার শরীরকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনি যদি নিরাপদ পণ্য ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার জন্য গ্লিসারিন উপযুক্ত একটি উপাদান।
ত্বক মশ্চারাইজ করেঃ গ্লিসারিন এইট্টি স্পঞ্জ এর মত কাজ করে এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে। এটি ত্বক থেকে পানির বাষ্পীভবন কেউ আটকাতে সহায়তা করে। যা শীতের মাঝে মাঝি সময় ত্বককে আদ্র এবং হাইড্রেট রাখে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানা যায় যে গ্লিসারিন কার্যকর ভাবে ত্বককে মোলায়েম করে এবং হাইড্রেট রাখে।
অন্যান্য উপাদান সংরক্ষণ করেঃ গ্লিসারিনের অন্যান্য সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা ছাড়াও এটি সংরক্ষণকারী হিসেবে কাজ করে। ইউনাইটেড স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার অনুসারে গ্লিসারিনে অসামান্য এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাঙ্গাল এবং এন্টি ভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
শীতকালে আর্দ্রতার মাত্রা এত নিচে নেমে যায় যে ঠান্ডা বাতাসে আপনার ত্বকের আদ্রতা দ্রুত হারিয়ে যায়। এর ফলে শীতের বাতাস ত্বককে শুষ্ক, ফাটা এবং ফ্ল্যাকি করে দেয়। তখন আপনার ত্বক ভেঙে যায়। এটি ক্ষত এবং সংক্রমণের জন্য আরো সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। সেই সময় আপনি যদি গ্লিসারিন ব্যবহার করেন তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন। কারণ গ্লিসারিন আপনার ত্বকের আদ্রতা রক্ষা করে এবং হাত-পা, কনুই, হাঁটু এবং শরীরের অন্যান্য অংশগুলোকে রক্ষা করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
আশা করছি, গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয় আপনি বুঝতে পেরেছেন এবং আপনি আপনার মুখ ও ত্বকের যত্নে নিয়মিত গ্লিসারিনের সঠিক এবং যথাযথ ব্যবহার করতে পারবেন। এতে করে আপনার মুখের আদ্রতা রক্ষা হবে এবং পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বল হবে।
গ্লিসারিন কোনটা ভালো
আমরা কমবেশি সবাই গ্লিসারিন ব্যবহার করি। কিন্তু কোন গ্লিসারিন ভালো এ বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে গ্লিসারিন কোনটা ভালো এ বিষয়ে আপনাদের সামনে কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এজন্য অবশ্যই আর্টিকেলের এই অংশটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
গ্লিসারিন একটি খুবই সাধারণ এবং জনপ্রিয় উপাদান। যা আমরা বিভিন্ন রকম স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট এর সাথে ব্যবহার করি। গ্লিসারিন প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে। বাজারে বিভিন্ন রকম গ্লিসারিন পাওয়া যায় কিন্তু কোন গ্লিসারিন টা আমাদের জন্য ভালো হবে তা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি। নিম্নে আমরা ভালো গ্লিসারিনের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরলাম। আশা করছি, এই বৈশিষ্ট্য গুলো জানার পরে গ্লিসারিন কোনটা ভালো তা আপনাদের জানতে সুবিধা হবে।
- আপনি যদি আপনার ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক এবং সুরক্ষিত পণ্য পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনি প্রাকৃতিক গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। এই গ্লিসারিন ত্বকের জন্য খুবই নিরাপদ এবং এর মধ্যে কোন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না। প্রাকৃতিক গ্লিসারিন আমাদের ত্বকে কোমল এবং মসৃণ করে।
- একটি গ্লিসারিন কিভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং এর মধ্যে কোনরকম কৃত্রিম উপাদান বা রাসায়নিক পদার্থ আছে কিনা তার উপরে গ্লিসারিনের মান নির্ভর করে। এজন্য একটি ভালো গ্লিসারিন বেছে নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে সেই গ্লিসারিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
- আপনার বিশ্বস্ত যে কোন ব্যান্ডের গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ভালো ব্র্যান্ডের গ্লিসারিন গুলো বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারপরে তৈরি করা হয়। এজন্য আপনারা ভাল ব্র্যান্ডের গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।
আশা করছি, গ্লিসারিন কোনটা ভালো, গ্লিসারিনের মধ্যে কি গুণাবলী থাকতে হবে এগুলো আপনি বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি এই বৈশিষ্ট্য গুলো বিবেচনা করে গ্লিসারিন কিনে আনেন এবং ব্যবহার করেন তাহলে উপকৃত হবেন।
ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয়
ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয় এ ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানিনা। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয় তা জানব। আমরা অনেকেই শীতকালে ঠোঁটে গ্লিসারিন ব্যবহার করে থাকি। আবার অনেকেই গ্লিসারিন দিলে যদি কোন ক্ষতি হয় সেজন্য ব্যবহার করি না। আপনারা হয়তো এটা ভাবেন যে ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে এটি আমাদের ঠোঁটের উপরে কোনো খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
কিন্তু না, ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে ঠোঁট মসৃণ আর নরম হয়। এর কারণ একটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। আমাদের ঠোঁটের ত্বক অন্যান্য অংশের তুলনায় পাতলা এবং সংবেদনশীল। এজন্য এই শীতকালে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঠোঁট সহজে শুষ্ক হয়ে যায় এবং ফাটতে শুরু করে। গ্লিসারিন আদ্রতা বজায় রাখে যা ঠোঁটকে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায় এবং সুরক্ষা প্রদান করে।
- ঠোঁট স্ক্রাবিং এর জন্য গ্লিসারিন খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। গ্লিসারিন ঠোঁটের মৃত কোষ কে ঠোঁটের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। চিনির দানার সঙ্গে কয়েক ফোটা গ্লিসারিন মিশিয়ে কয়েক মিনিট ঠোঁটে মাসাজ করলে ঠোঁটের ফাটা ভাব এবং কালো দাগ দূর হয়। সেই সাথে ঠোঁটকে মসৃণ এবং কোমল করে তোলে।
- আশা করছি, ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয় বিষয়টি আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। সঠিক নিয়মে যদি ঠোঁটে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক
সবকিছুর যেমন উপকারী দিক রয়েছে তেমনি ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আপনারা হয়তো অনেকেই না জেনে এতদিন ত্বকের গ্লিসারিন ব্যবহার করেছেন কিন্তু গ্লিসারিন ব্যবহার করার ফলে কি কি ক্ষতি সম্মুখীন হতে পারেন। চলুন এক নজরে সেগুলো জেনে নেই।
- ত্বকে দীর্ঘদিন গ্লিসারিন ব্যবহার করার ফলে ত্বকের আদ্রতা কমে যায়। এতে করে ত্বক উস্কো খুস্কো হয়ে ত্বক থেকে চামড়া উঠে আসবে।
- গ্লিসারিন ত্বকের ছিদ্রের মধ্যে প্রবেশ করে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ করে দিতে পারে।
- গ্লিসারিন ত্বকে ব্যবহার করার ফলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে। ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহার করা হলে লাল লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে।
- তোকে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ব্রণ হতে পারে।
- যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের গ্লিসারিন ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ তৈলাক্ত ত্বকের গ্লিসারিন ব্যবহার করলে তেলের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এতে করে ব্রণের সমস্যা দিন দিন বাড়তে থাকে।
- গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ত্বকের রং অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হতে থাকে।
- গ্লিসারিন ব্যবহারের ফলে বাইরে গেলে সানবার্ন সৃষ্টি হতে পারে।
- ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ত্বকের ছিদ্রের ভিতরে ময়লা জমে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস এর সমস্যা হতে পারে।
- গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ত্বকে চর্মরোগের সমস্যা হতে পারে।
আশা করছি, আপনারা বুঝতে পেরেছেন ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। আপনার অনেকেই শীতকালে শরীরে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। কারণ হালকা পানির সাথে মিশে থাকে ব্যবহার করলে ত্বকে ময়শ্চারাইজড করে এবং উজ্জ্বলতা দেয়।
মানুষ জানতে চাই এমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ গ্লিসারিন কি মুখে লাগানো যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ত্বকে সরাসরি অথবা দুধ কিংবা নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও গোলাপ জলের সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। এতে করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং আদ্রতা বজায় থাকে।
প্রশ্নঃ গ্লিসারিন কি মুখের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তরঃ মুখে হালকা করে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বকের জন্য খুব নিরাপদ। কিন্তু আপনি যদি এটি খুব বেশি পরিমাণ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মুখের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
প্রশ্নঃ গ্লিসারিন কি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর ঃ গ্লিসারিন ত্বকের জন্য খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী। গ্লিসারিন সরাসরি কিংবা অল্প পরিমাণ পানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
প্রশ্নঃ গ্লিসারিন সারারাত মুখে লাগানো যাবে কি?
উত্তরঃ সারারাত ত্বকের গ্লিসারিন লাগিয়ে রাখা যাবে। এটি ত্বকের মধ্যে পানি আটকে রাখতে সহায়তা করে এবং নরম রাখে। এটি আপনার ত্বকের ক্রমাগত পুষ্টি সরবরাহ করে।
প্রশ্নঃ ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয়
উত্তরঃ উপাদানের ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট হিসেবে ঠোঁটের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে। পাশাপাশি বলি রেখা এবং ছাপ কমায়। পাশাপাশি ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা গ্লিসারিন কোনটা ভালো, গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়, গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক, গ্লিসারিন মুখে লাগানোর নিয়ম সহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সবগুলো বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।
আপনার যদি আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে তথ্যবহুল পোস্ট পড়ার জন্য নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url