হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ - হেপাটাইটিস বি কি ভাল হয়
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বর্তমান সময়ে হেপাটাইটিস বি এবং সি খুবই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। প্রতি বছর অনেক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা হেপাটাইটিস বি এ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
ভূমিকা
হেপাটাইটিস খুবই ভয়ঙ্কর একটি ভাইরাস। এটি আমাদের দেশের জন্য খুবই বিপদজনক হয়ে উঠেছে। হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে প্রতি বছর ২২ হাজার মানুষ মারা যায়। আস্তে আস্তে হেপাটাইটিস করোনা ভাইরাসের মতো প্রকট আকার ধারণ করছে।
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার উপায়, হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ, হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও প্রতিকার, হেপাটাইটিস বি ভাল হয় কিনা এবং হেপাটাইটিস বি হলে বিয়ে করা যায় কিনা। এ সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
হেপাটাইটিস বি হলে কি বিয়ে করা যায়
অনেকেই প্রশ্ন করেন, হেপাটাইটিস বি হলে কি বিয়ে করা যায়? এ বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে হেপাটাইটিস বি আসলে কি। হেপাটাইটিস বি হচ্ছে এক ধরনের মারাত্মক সংক্রামক ভাইরাস। এই ভাইরাসটি যকৃত, লিভারে সংক্রমণ ঘটায়। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হেপাটাইটিস রোগ হয়।
একজন রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা ছাড়া হেপাটাইটিস বি আছে কিনা তা কোন ভাবে জানা সম্ভব নয়। সে কারণে অনেকেই রক্ত পরীক্ষা করতে গেলে জানতে পারে যে তার হেপাটাইটিস বি রোগ আছে কিনা। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে প্রবেশ করতে পারে। একজন ব্যক্তি হেপাটাইটিস বি রোগে আক্রান্ত হলে তাকে আলাদা রুমে রাখা হয়।
আমাদের দেশে অনেকেই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন যে হেপাটাইটিস বি হলে কি বিয়ে করা যায়। বিষয়টি একটু ভালোভাবে বিবেচনা করা দেখা যাক। হেপাটাইটিস বি হচ্ছে একটি সংক্রমক ব্যাধি। আপনার যদি হেপাটাইটিস বি থেকে থাকে তাহলে প্রথম অবস্থায় আপনি বিয়ে করতে পারবেন না।
কারন আপনি যখন বিয়ের পরে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সাথে একসাথে বসবাস করবেন তখন আপনার হেপাটাইটিস বি ভাইরাস তাকেও আক্রমণ করবে। যদিও হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করলে এই ভাইরাসটি ছড়ায় না। কিন্তু সব সময় যদি ভাইরাসের পাশে থাকা হয় তাহলে টিকার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও গড়ে তুলতে পারে।
একসাথে বসবাস করবেন, সব সময় একসঙ্গে থাকবেন এ কারণে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আক্রমণ করা সম্ভাবনা অনেক বেশি। কোন এক সময় প্রতিরক্ষা ভেঙ্গে আপনাকে আক্রমণ করে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সবসময় এই কথায় বলে এসেছেন। এছাড়া আরও একটি বিষয় হচ্ছে আপনাদের অনাগত সন্তানের মধ্যে এটি হতে পারে।
তাই অবশ্যই এই ক্ষেত্রে আপনার উচিত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আগে সুস্থ হয়ে ওঠা। তারপরে বিয়ে করা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যদি আপনাদেরকে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা দিতে বলে তাহলে টীকা দেয়ার পরে দুজন বিয়ে করতে পারবেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।
আশা করছি, হেপাটাইটিস বি হলে বিয়ে করা যায় কিনা বিষয়টি আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার উপায়
হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার উপায় নিয়ে আমরা এবার কিছু জেনে আসি। হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার অর্থ হচ্ছে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আপনার শরীর থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলা। সংক্রমণের চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল এবং সব ক্ষেত্রে ভাইরাসকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয় না।
কিন্তু যদি সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি এবং চিকিৎসা করানো হয় তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং আপনার জীবন যাত্রার মান উন্নত হতে পারে। হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার উপায়গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো।
ভ্যাকসিনঃ হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিন। যারা এখন পর্যন্ত হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হননি তাদের জন্য এই ভ্যাকসিন টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম এবং নবজাতকের জন্মের সময় এই টিকা দিয়ে দেওয়া উচিত।
অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসাঃ হেপাটাইটিস বি এর মত যে সকল ক্রনিক সংক্রমণ রয়েছে এক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধগুলো ভাইরাসের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ইমিউন মডুলেটরঃ অনেক ক্ষেত্রে রোগীর ইমিউন সিস্টেম কে শক্তিশালী করার জন্য ইমিউন মডুলেটর ব্যবহার করা হয়। এগুলো ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবেঃ হেপাটাইটিস বি এ আক্রান্ত সকলের লিভারের কার্যকারিতা এবং ভাইরাসের পরিমাণ নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এর মাধ্যমে চিকিৎসা প্রক্রিয়া কতটুকু কার্যকর হচ্ছে তা বোঝা যায় এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা পরিবর্তন করা হয়।
স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করাঃ হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত সকলের উচিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সকল ধরনের নেশা দ্রব্য এবং লিভারের জন্য ক্ষতিকর ওষুধগুলো এড়িয়ে চলা।
লিভার প্রতিস্থাপনঃ এমন কিছু গুরুতর অবস্থা হয়ে যায় যখন লিভার সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়। তখন লিভার প্রতিস্থাপন করাটাই একমাত্র উপায়।
যদি হেপাটাইটিস বি পজিটিভ হয়ে যায় তাহলে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি লিভার কে দীর্ঘতম সমস্যার দিকে ঠেলে দেয়। হেপাটাইটিস বি পজেটিভ হলে সর্বপ্রথম একজন হেপাটলোজিস্ট বা লিভার বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করতে হবে। তিনি আপনার অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা দিবেন।
আশা করছি, হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার উপায় গুলো আপনি জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলে নিচের অংশে আমরা হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ
আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ জানতে চলেছি। শুরুতে জানিয়ে রাখা ভালো যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি কে জনসাস্থ্যের হুমকি স্বরুপ ঘোষনা করে ২০৩০ সালের মধ্যে তার নির্মল করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হেপাটাইটিস বি এবং সি রোগির সংখ্যা ৯০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা এবং ৬৫% নামিয়ে নিয়ে আসা।
সারা বিশ্বের প্রায় 33 কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি ভাইরাস এ আক্রান্ত। বাংলাদেশে বর্তমানে ৫.১ % মানুষ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগেরই বয়স ২৮ বছরের বেশি। আমাদের দেশে হেপাটাইটিস এর রোগীরা সমাজের বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। গর্ভকালে যদি হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হয় তাহলে তো মারাত্মক আকার ধারণ করে।
রক্ত জমাট বাধার ক্ষমতা কমে যায় যা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় এক কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত। এ ভাইরাসটির মানুষের দেহের নিষ্ক্রিয় রূপে থাকে। আস্তে আস্তে এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। পরবর্তী সময় লিভার সিরোসিস এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
মানুষের মধ্যে এর জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ে হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা সেবা রয়েছে। যে টেস্ট করাতে বেসরকারি হাসপাতালে ১৬ হাজার টাকা নেয় সেই একই টেস্ট সরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার টাকায় করানো যায়। আবার যেই পরীক্ষা এখানে ২৫০ টাকায় করানো হয় বাইরে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সেই পরীক্ষা করাতে ৫০০০ টাকা লাগে।
এর চিকিৎসা করা হয় জাতীয় গ্যাস্ট্রো লিভার ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতালে। সেখানকার ডাক্তাররা বলেন বর্তমানে হেপাটাইটিসের প্রচুর রোগী সেখানে যায়। সেখানে হেপাটাইটিসের চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা যা বিদেশে মধ্যবিত্তের পক্ষে করা সম্ভব না। সরকারি এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কারণে হাজার হাজার রোগী প্রাণে বেঁচে যাচ্ছে।
অর্থাৎ বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি চিকিৎসার জন্য শেখ রাসেল ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতাল অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।এখানে বিনামূল্যে হেপাটাইটিস বি আর চিকিৎসা পাওয়া যায়। আশা করছি, হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনি একটি ভালো ধারণা পেয়েছেন।
হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও প্রতিকার
আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ। বিষয়টি আমরা উপরে আলোচনা করেছি। কিন্তু আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ এবং প্রতিকার নিয়ে কিছু আলোচনা করি। আমরা আগেই জেনেছি এটি এমন একটি রোগ যা রক্ত পরীক্ষা ছাড়া সহজে লক্ষণ প্রকাশ পায় না।
আর যতক্ষণে হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ প্রকাশ পায় ততক্ষণে রোগটি সম্পূর্ণভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত হেপাটাইটিস বি শরীরের রক্ত, বীর্য এবং অন্যান্য তরল পদার্থের মাধ্যমে ছড়ায়। চলুন হেপাটাইটিস বি হলে কি কি লক্ষণ প্রকাশ পায় জেনে নেওয়া যাক।
- খাবারে অরুচি
- বমি বমি ভাব বমি হওয়া
- শরীর ব্যথা
- হালকা জ্বর হওয়া
- প্রস্রাব গারো এবং হলুদ হয়ে যাওয়া
- শরীরে চুলকানি হতে পারে
- গায়ের চামড়ার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়
- সব সময় অস্বস্তি বোধ হয়
- মাংসপেশী এবং হাড়ের স্থলে ব্যথা হয়
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হেপাটাইটিস বি গুরুতর ভাবে সংক্রমণ করে ফেলে। এর ফলে অসুস্থতা দেখা দেয় এবং কারো কারো মৃত্যু হয়। আবার কারো ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ প্রকাশ নাও করতে পারে। যেহেতু এই রোগের লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকাশ পায় না তাই এর চিকিৎসাও তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হয় না।
আল্লাহ তাআলা যেমন রোগ দেন তেমন প্রতিটি রোগের প্রতিষেধক ও তিনি আগে থেকেই তৈরি করে দেন। সেই হিসেবে হেপাটাইটিস বি রোগের ওষুধ এবং প্রতিষেধক রয়েছে। আপনি যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন অবশ্যই আপনাকে আপনার মনোবল ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি আপনাকে রোগ মুক্তির উপায় গুলো জেনে রাখতে হবে।
হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের তেমন কোনো প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক এর থেকে প্রতিরোধ করাটাই বেশি ভালো। অবশ্যই আপনাকে এই রোগ মুক্তির জন্য ভাইরাস প্রতিরোধ করা জানতে হবে। এছাড়া কার মাধ্যমে ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারেন। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিকারের কিছু উপায় নিম্নে তুলে ধরা হলো।
- বিশুদ্ধ খাবার এবং পানি পান করতে হবে।
- সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
- স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
- মদ্যপান করা যাবে না।
- সকল ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে।
- অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের ব্যবস্থা থেকে দূরে থাকতে হবে।
- অনেকেই ব্যবহার করেছে অনেকের ব্যবহার করেছে এমন সুচ বা ডিসপজেবল সিরিজ ব্যবহার করা যাবে না।
- অনিরাপদ যৌনতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে।
- সেলুনে সেভ করার সময় সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
- আকুপাংচার, ট্যাটু করা এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ভালোভাবে মুক্ত করে নিতে হবে।
টিকা গ্রহণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায়। আপনি যদি উপরে উল্লেখিত নিয়ম গুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে কিছুটা হলেও হেপাটাইটিস বি ভাইরাস থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
হেপাটাইটিস বি কি ভাল হয়
অনেকের মনে এই প্রশ্নটা আছে যে হেপাটাইটিস বি কি ভালো হয়? আপনার শরীরে যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে থাকে এবং তা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা যায় তাহলে অবশ্যই হেপাটাইটিস বি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যদি সংক্রমিত হয়ে যাওয়ার পরে সনাক্ত হয় সেক্ষেত্রে পুরোপুরি ভালো না হলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এর মধ্যে সবথেকে মারাত্মক হচ্ছে হেপাটাইটিস এ। হেপাটাইটিস এ ভাইরাস খুব সহজেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু যখন হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের কথা আসে তখন বিষয়টি একটু জটিল হয়ে পড়ে। তবে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থা হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। আশা করছি, হেপাটাইটিস বি কি ভালো হয় এই প্রশ্নের উত্তরটি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
মানুষ জানতে চাই এমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ হেপাটাইটিস বি টেস্ট করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ হেপাটাইটিস বি এন্টিবায়োটিক পরীক্ষা করার জন্য ৪৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এই খরচ স্থান, হাসপাতাল এগুলোর উপরে অনেকটা নির্ভর করে।
প্রশ্নঃ হেপাটাইটিস বি কি নিরাময়যোগ্য?
উত্তরঃ হেপাটাইটিস বি যদি শুরুতেই সনাক্ত করে চিকিৎসা কর শুরু হয়ে যায় তাহলে ৯০% ক্ষেত্রে সমস্যা ছাড়াই এটি সেরে ওঠে।
প্রশ্নঃ হেপাটাইটিস বি এর টিকার দাম কত বাংলাদেশে?
উত্তরঃ হেপাটাইটিস বি এ টিকার দাম 0.5 মিলি ৪০০ টাকা এবং ১.০০ মিলি ৫৫০ টাকা।
প্রশ্নঃ হেপাটাইটিস বি চিকিৎসা ছাড়া কতদিন বাঁচতে পারে?
উত্তরঃ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রমণ হইলে তা ৬ মাস বা তার বেশি সময় স্থায়ী হয়। এটি যেহেতু দীর্ঘস্থায়ী হয় সে কারণে ইমিউন সিস্টেম সংশোধন বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না। এতে সিরোসিস এবং লিভারে ক্যান্সারের সূত্রপাত ঘটাতে পারে। এর ফলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হতে পারে।
প্রশ্নঃ হেপাটাইটিস কোন ধরনের রোগের দীর্ঘস্থায়ী রূপে বিকশিত হয়?
উত্তরঃ হেপাটাইটিস বি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ পার্সেন্ট দীর্ঘস্থায়ী হয় ৭ থেকে ৭০ পার্সেন্ট দীর্ঘস্থায়ী হয়।
উপসংহার
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশসহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। উপরের আলোচনা থেকে আমরা এটি বুঝতে পেরেছি যে হেপাটাইটিস বি যদি শনাক্ত করা যায় তাহলে অসুস্থতার জীবনযাপন করতে হবে না। সঠিক চিকিৎসা, যত্ন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে আক্রান্ত এবং পরিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারবে।
যারা জিজ্ঞাস করেন হেপাটাইটিস বি কি ভালো হয় তাদের জন্য বলে রাখা ভালো, হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ করার জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের চিকিৎসা মেনে চলতে হবে। সংক্রমণ মোকাবেলা করতে, লিভারের ক্ষতি কমাতে অনেকটা সহায়ক হবে। মোকাবেলার জন্য হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ, প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি এরকম আরও তথ্যবহুল পোস্ট পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমরা এখানে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন তথ্যবহুল পোস্ট লিখে পাবলিশ করে থাকি। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url