মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু - চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু এবং চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। মাথার সমস্যা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খুশকি। এখানে আমরা মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
আপনি যদি মাথার খুশকি সমস্যায় ভুগেন এবং আপনার চুল পড়ে যায় তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি, আপনি আপনার সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন। তাহলে চলুন আর্টিকেলটি পড়া শুরু করা যাক।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়, ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায়, মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু, মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি এই সকল বিষয়গুলোতে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তাহলে মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু এবং খুশকি দূর করার আরো কিছু উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেগুলা পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনি উপকৃত হবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়
চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়। চুল পড়া এবং খুশকি এই দুটি সমস্যা বর্তমানে যে কোন বয়সের মানুষেরই প্রধান দুশ্চিন্তার কারণ। বিভিন্ন কারণে চুল পড়ছে এবং খুশকির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন অতিরিক্ত মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশ দূষণ, অনিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার, হরমোনাল পরিবর্তন ইত্যাদি। যাদের মাথার ত্বক শুষ্ক তাদের খুশকি বেশি হয়।
আর খুশির সমস্যার কারণে চুল পড়া সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত তারা যদি ভালোমতো চুল পরিষ্কার করে তাহলে এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাবে। কিন্তু চুল পড়া এবং খুশকি নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ সঠিক যত্ন এবং কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এছাড়াও প্রাকৃতিক উপাদান এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে চুল পড়া এবং খুশকির সমস্যা মোকাবেলা করতে পারেন। আপনি যদি চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনাদের সঙ্গে এখন কিছু চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায় তুলে ধরব। যেগুলো আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে। তাহলে চলুন উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মেথি দানাঃ মেথি ডানার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এন্টি-ফাঙ্গাল ও এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল। যা মাথার খুশকি দূর করে। এজন্য রাতে মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে লাগাতে হবে। ৩০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি আপনার চুল পড়া রোধ করবে এবং চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ধরে রাখবে।
লেবুর রস ও নারিকেল তেলঃ সাহট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ লেবুর রস মাথার ত্বক পরিষ্কার করে এবং নারিকেল তেল চুলের গভীর থেকে পুষ্টি যোগায়। এটি মাথার ত্বকের ফাঙ্গাস দূর করে। নারকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মাসাজ করলে খুশকি কমে যায় এবং চুলের গোড়া শক্ত হয়। আপনি যদি নিয়মিত এই তেলটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল পড়া সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
অ্যালোভেরা জেলঃ এলোভেরা জেল মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে এবং খুশকি দূর করে। এলোভেরা চুলকানি দূর করে এবং নতুন গজাতে সহায়তা করে। এজন্য আপনি যদি তাজা এলোভেরা জেল মাথার ত্বকে লাগান তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
টক দইঃ টক দই চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। মাথার ত্বক থেকে খুশকি দূর করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এজন্য এক কাপ টক দই মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রসে সালফার থাকে। যার ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং খুশকি কমে। পেঁয়াজের রস মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
বেকিং সোডাঃ বেকিং সোডা মাথার ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং খুশকি প্রতিরোধ করে। অল্প পরিমাণ পানির সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে।
গ্রিন টিঃ গ্রিন টি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি উপাদান যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এজন্য গ্রিন টি বানিয়ে ঠান্ডা করে মাথায় মাসাজ করতে হবে।
নিম পাতাঃ নিম পাতায় রয়েছে এন্টি-ফাঙ্গাল এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। নিম পাতা সেদ্ধ করে পেস্ট তৈরি করে মাথায় লাগিয়ে রাখলে খুশকি দূর করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে।
মধু এবং দারুচিনিঃ দারুচিনির এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার খুশকি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মধু মাথার ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে। দুই টেবিল চামচ মধু এবং এক চা চামচ দারুচিনি গুড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
রসুনঃ রসুন একটি এন্টি-ফাঙ্গাল উপাদান যা আপনাকে খুশকি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এজন্য একটি রসুন পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
লবঙ্গ তেলঃ লবঙ্গ তেল রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং খুশকি প্রতিরোধ করে। এজন্য কয়েক ফোটা লবঙ্গের তেল নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পড়া সমস্যা কমে যাবে।
এছাড়াও চুল পড়া ও খুশকি দূর করতে সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু আছে যা চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে। নিচে আমরা মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করব আর্টিকেলের নিচের অংশটুকু পড়ে আপনি মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু গুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন।
ছেলেদের চুলের খুশকি দূর করার উপায়
খুশকি সমস্যা ছেলে এবং মেয়ে সবার মধ্যেই দেখা দেয়। কিন্তু মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ভেতর খুশকির প্রবণতা একটু বেশি। বেশিরভাগ ছেলেরই সারা বছর খুশকির সমস্যা থাকে। আবার অনেকের ঋতুভিত্তিক খুশকি সমস্যা দেখা যায়। তবে যে কারণে খুশকি সমস্যা হোক না কেন এমন কিছু ঘরোয়া উপাদান রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে খুশকি সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
নিম পাতা ও জবা ফুলঃ নিমের অ্যান্টি ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। তাই নিমপাতা খুব সহজেই খুশকি সমস্যা সমাধান করতে পারে। মাথার খুশকি দূর করার জন্য সপ্তাহে তিন দিন মাথার ত্বকে নিমের তেল মাসাজ করতে পারেন।
জবা ফুলের নির্যাস মাথার খুশকি দূর করতে এবং চুল কালো করতে সহায়তা করে। সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে নারিকেল তেল, নিম পাতা কুচি এবং জবা ফুল ভালোভাবে গরম করে তেলের মধ্যে এগুলোর নির্যাস বের করে নিতে হবে। এবার তৈরিকৃত তেলটি সপ্তাহে তিন দিন মাথার ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।
ভৃঙ্গরাজঃ ভৃঙ্গরাজ এ নানা রকম উপাদান রয়েছে। যেমন আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। এজন্য ভৃঙ্গরাজকে "ভেষজের রাজা" বলা হয়। আপনি যদি মাথার ত্বকের শুষ্কতা অকালপল্পতা এবং খুশকি দূর করতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ভৃঙ্গরাজ ব্যবহার করতে পারেন।
মেথিঃ ছেলেদের মাথার খুশকি দূর করার আরো একটি কার্যকরী উপাদানের নাম হলো মেথি। নারিকেল তেলের মধ্যে মেথি গুড়া করে মিশিয়ে নিতে হবে। মেথি তেলের মধ্যে যত ভিজবে সে তেল খুশকি ও চুল পড়ার রোধে তত কার্যকরী হবে।
আমলকি ও অ্যালোভেরাঃ খুশকি দূর করার জন্য আরেকটি কার্যকারী উপাদান হলো অ্যালোভেরা। আমলকিও খুশকি দূর করে চুলে সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে পারে। তাই সপ্তাহে একদিন এলোভেরা বা আমলকি রস মাথার ত্বকে মাসাজ করুন। এতে করে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি আগের চেয়ে ঘন এবং স্বাস্থ্যজ্জল হবে।
এছাড়াও মাথার খুশকি দূর করার জন্য বাজারে বিভিন্ন রকম মেডিকেটেড এবং অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করলেও ভালো ফলাফল পাবেন।
মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু সম্পর্কে জানব। আপনি আপনার খুশকির জন্য কিছু মেডিকেটেড শ্যাম্পু বেছে নিতে পারেন। কিন্তু মেডিকেটেড শ্যাম্পু বেছে নেওয়ার সময় আপনাকে কিছু বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে।
যেমন- আপনার মাথায় কি ধরনের শুষ্ক হয়েছে, আপনার মাথার ত্বকের অবস্থা কি, খুশকির কারণ এবং আপনি যে প্রকার মেডিকেশন ব্যবহার করছেন তা ভালোভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। একটি ভালো মানের মেডিকেটেড শ্যাম্পু বেছে নেওয়ার জন্য লিখিত বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
মানসম্পন্ন শ্যাম্পুঃ যখন খুশকির জন্য একটি মেডিকেটেড ব্যবহার করবেন তখন সুস্থ ত্বকের জন্য অবশ্যই খুব ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এসব ওগুলো শুষ্ক ত্বকের জন্য ত্বক প্রতিরক্ষার কাজ করতে পারে এবং খুশকি দূর করে।
জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মেডিকেটেড শ্যাম্পুঃ খুশকির জন্য আপনি সবসময় বিখ্যাত এবং ভালো ব্র্যান্ডের পরিচিত শ্যাম্পু গুলো বেছে নিতে পারেন। কারণ ভালো ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু গুলোর বিশ্বস্ততা ভালো এবং মান ভালো থাকে।
উপকারী উপাদান সমৃদ্ধঃ খুশকি দূর করার জন্য শ্যাম্পুতে উপকারী উপাদান থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সালিসিলিক এসিড, পাইরিথিয়ন, জিংক পাইরেথিওন, সালফাইড এই উপাদান গুলো থাকা জরুরি। যা খুশকির জন্য খুবই উপকারী।
ডারমাটোলজিস্ট এর পরামর্শঃ খুশকির সমস্যা গুলি খুবই জটিল হতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় আপনার স্থানীয় ডারমাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নিতে হবে।
তবে এমন কোন শ্যাম্পু খুঁজে বের করুন যেগুলা আপনাকে ডার্মাটোলজিস্ট ব্যবহার করতে বলবে এবং আপনার ত্বকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ডাক্তাররা সুপারিশ করেন এমন মানসম্পন্ন কয়েকটি মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পুর নাম নিচে তুলে ধরা হলো।
ওসিসি শ্যাম্পুঃ খুশকি দূর করার জন্য ওসিসি শ্যাম্পু খুবই ভালো কাজ করে। এই শ্যাম্পুটি আপনি ওষুধের দোকানগুলোতে পাবেন। এছাড়া এর মিনি প্যাকও পাওয়া যায়।
সিলেক্ট প্লাস শ্যাম্পুঃ সিলেক্ট প্লাস এর অন্যতম উপাদান হচ্ছে কিটোকোনাজল। যা মাথার খুশকি এবং শরীরের অন্যান্য সংক্রমিত ছত্রাক স্থায়ীভাবে দূর করে। সিলেক্ট প্লাস কয়েক মিনিটের মধ্যে মাথার খুশকি দূর করতে পারে। খুশকি দূর করার জন্য এই শ্যাম্পুটি সপ্তাহে তিনবার করে ৪ সপ্তাহ ব্যবহার করতে হবে।
ক্লিয়ার হিজাব শ্যাম্পুঃ এই শ্যাম্পুটির প্রধান উপাদান হচ্ছে জিংক প্যারাথিয়ন যা খুশকি দূর করতে সহায়তা করে। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ক্লিয়ার হিজাব শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুঃ খুশকি যুক্ত চুলের জন্য অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। জিংক, সালফার বা জিংক প্যারিথিয়োন সমৃদ্ধ এই শ্যাম্পু গুলো খুশকি নিয়ন্ত্রণ করে এবং মাথার ত্বক সুস্থ রাখে। যেমন হিমালয়া আন্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু, সেলসান ব্লু মেডিকেটেড শ্যাম্পু, প্যান্টিন প্রো ভি এন্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু, হেড এন্ড সোল্ডার্স এন্টি ডানড্রাফ শ্যাম্পু, ক্লিয়ার অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু, ডারমাকেয়ার এনটি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু।
এছাড়াও এখন বাজারে নানা রকম ব্র্যান্ডের খুশকি প্রতিরোধক কিটোকোনাজল শ্যাম্পু পাওয়া যায়। যেগুলো চুলের খুশকি দূর করে। গোসলের সময় কিটো কোনাজল যুক্ত শ্যাম্পু চুলে লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি কমে যাবে। যারা নিয়মিত খুশকি সমস্যায় ভোগেন এক থেকে দুইবার এই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায়
সাধারণত যাদের মাথার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা থাকে এবং মাথার ত্বক অপরিষ্কার থাকে তাদের খুশকি সমস্যা দেখা দেয়। খুশকির সমস্যা থেকে তৈরি হয় অতিরিক্ত চুল পড়া এবং এলার্জির মত সমস্যা। তাই আমাদের সবার উচিত ঘরোয়া উপায়ে খুশকি দূর করা। চলুন জেনে নেওয়া যাক মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায়।
নারকেল ও লেবুঃ নারকেল তেল এবং লেবুর রসের মিশ্রণ চুলের জন্য খুবই উপকারী। নারকেল তেল এবং লেবুর রস খুশকি দূর করে। এজন্য ২ চামচ লেবুর রস, এক চামচ নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে নিয়ে চুলের মধ্যে ও চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
টক দইঃ খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করতে পারি। এটি আমাদের খুশকি দূর করার পাশাপাশি চুলের গোড়াকে শক্ত করে।
নিমপাতাঃ নিমপাতা বেটে চুলের গোড়ায় লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এটি মাথায় থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং মাথার চুলকানি থেকেও মুক্তি দেয়।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারঃ তেলের সাথে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে মাথার ত্বকে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখতে হবে। পাঁচ মিনিট পর মাথা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি মাথায় থাকা খুশকি এবং ফাঙ্গাস দূর করে।
এছাড়াও মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার জন্য দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। অনিয়মিত ঘুম খুশকির অন্যতম কারণ। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমালে খুশকি চলে যাবে।
- অনেকেই ধুলাবালিতে কাজ করার পরে ভালোভাবে গোসল করে না। সেক্ষেত্রে খুশকি বেড়ে যায়। তাই ধুলাবালিতে কাজ করার পর সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে গোসল করতে হবে।
- গোসলের পরে চুল ভেজা বা আধা শুকনা রাখলে মাথায় খুশকি হতে পারে। তাই গোসলের পর ভালোভাবে মাথা মুছে শুকাতে হবে।
- দৈনিক ২.৫-৩ লিটার পানি খেতে হবে। পানি কম খেলে অনেকের খুশকি দেখা দিতে পারে। তাই খুশকি মুক্ত থাকতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খান।
নকল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মাথায় খুশকি দেখা দিতে পারে। তাই নকল প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আশা করছি, মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে আপনি খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
মানুষ জানতে চাই এমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ কি দিলে খুশকি কমে?
উত্তরঃ আপনি যদি ঘরোয়া উপায়ে খুশকি দূর করতে চান তাহলে বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- দইয়ের প্যাক, নারকেল তেল, লেবুর রস, নিমপাতা, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, আমলকি ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ খুশকির জন্য কি শ্যাম্পু ভালো?
উত্তরঃ খুশকির জন্য আপনি চুলে আন্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। যেগুলো সালফার বা জিংক পাইরেথিউন সমৃদ্ধ। এ শ্যাম্পু গুলো খুশকি দূর করতে সহায়তা করে এবং মাথার ত্বক সুস্থ রাখে।
প্রশ্নঃ চুলে অতিরিক্ত খুশকি কেন হয়?
উত্তরঃ বিভিন্ন কারণে চুলে অতিরিক্ত খুশকি হতে পারে। যেমন- ছত্রাক, মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল, অনিয়মিত চুল আঁচড়ানো, শ্যাম্পু করা, চুল স্ট্রেট করা, মানসিক চাপের কারণে অথবা কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বরূপ।
প্রশ্নঃ লেবুর রস কি খুশকি দূর করে?
উত্তরঃ লেবুর রসের সাইট্রিক এসিড রয়েছে। যা ভিটামিন সি এর খুব ভালো একটি উৎস। তখ ছাড়া লেবুতে এন্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আছে যার জন্য লেবু খুশকি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিয়মিত মাথার ত্বকে লেবুর রস ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমে এবং খুশকি হয় না।
প্রশ্নঃ মাথায় খুশকি হলে কি কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ মাথায় খুশকি হলে চুল পড়া, মাথার ত্বকে চুলকানি, অতিরিক্ত চুলকানির ফলে নখের আঁচড়ে মাথার ত্বকে বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ হতে পারে। অনেক সময় মাথায় ফুসকুড়ি ওঠে। শেষ পরিণত হিসেবে চুল পড়ে যাওয়া বা চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু, চুল পড়া ও খুশকি দূর করার উপায়, ছেলেদের খুশকি দূর করার উপায় এবং মেয়েদের মাথার খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি আর্টিকেলটি পড়ে এতক্ষণে এই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আমাদের লেখাটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে তথ্যবহুল পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url