মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় নিয়ে আলোচনা করব। মানসিক চাপ কমানোর জন্য প্রথমে মানসিক চাপের লক্ষণ এবং মানসিক চাপের কারণগুলো আপনাকে জানতে হবে।
বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। যেমন পারিবারিক সমস্যা, কর্মক্ষেত্রে সমস্যা, অর্থনৈতিক সমস্যা, অসুস্থতা, সম্পর্কে অবনতি, ইত্যাদির কারণে এই মানসিক চাপ হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক রোগের কারণেও হতে পারে। সেজন্য নিজেকে ভালো রাখতে মানসিক চাপ কমানো খুবই জরুরী। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা মানুষিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় নিয়ে আলোচনা করব। বিস্তারিত নিচে দেখুন।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা মানুষিক চাপের লক্ষণ, মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব, মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায়, মানসিক চাপ কমানোর আরো কিছু উপায় এবং মানসিক চাপ কমানোর খাবার এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে মানসিক চাপ কমানোর কার্যকরী কিছু উপায়ে সম্পর্কে জানবেন। যেগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
মানসিক চাপের লক্ষণ
মানুষিক চাপ কমানোর কার্যকরী উপায়গুলো সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে মানসিক চাপে লক্ষণ গুলো ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে। বিভিন্ন কারণে আমরা অনেক সময় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মানসিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও মানুষিক চাপের লক্ষণ বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। যেগুলোর ফলে আমরা বুঝতে পারি যে আমরা মানসিক চাপের মধ্যে আছি। আসুন জেনে নেই মানসিক চাপের লক্ষণ গুলো কি কি।
শারীরিক লক্ষণঃ আপনি যখন মানসিক চাপ অনুভব করবেন তখন এই লক্ষণগুলো আপনার শরীরে আপনি দেখতে পাবেন।
- মাথাব্যথা
- ঘুমের সমস্যা
- মাথা ঘোরা
- বদহজম
- বমি বমি ভাব
- ওজনে তারতম্য
- অস্বস্তিবোধ
- অসুস্থতা
মানসিক লক্ষণঃ মানসিক চাপ বেড়ে গেলে আপনি নিম্নলিখিত মানসিক লক্ষণগুলো উপলব্ধি করতে পারবেন।
- ভয়
- উদ্বেগ
- রাগ
- বিরক্তিভাব
- নিঃসঙ্গতা
- হতাশা
- অসহায় বোধ করা
- সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা
- অনিশ্চয়তায় ভোগা
আচরণগত পরিবর্তনঃ মানসিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তির আচরণে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন-
- ধূমপান করা
- অ্যালকোহল বা ড্রাগ ব্যবহার
- অতিরিক্ত খায় অথবা অনেক কম পরিমাণ খায়
- রাতে ঘুম না হওয়া
- সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অর্থাৎ সমাজ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখা
এই লক্ষণগুলো ছাড়াও মানুষিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বভাব অনুযায়ী আরো অনেক রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব
মানসিক চাপের কারণে একটি মানুষের উপরে দুই ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। একটি শারীরিক প্রভাব এবং অন্যটির মানসিক প্রভাব। চলুন জেনে নেওয়া যাক মানসিক চাপে নেতিবাচক প্রভাব গুলো সম্পর্কে।
শারীরিক প্রভাব
- হৃদরোগ উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোক হতে পারে।
- হজম সংক্রান্ত সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, পেট ফোলা, পেটে ব্যাথা হতে পারে।
- মানসিক চাপের ফলে ঘুম কমে যায়।
- মানুষিক চাপ একজন ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এজন্য বিভিন্ন রকম সংক্রামক এবং অসুস্থতা দেখা দেয়।
- মানসিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওজনের তারতম্য দেখা দেয়।
- হরমোন ভারসাম্যহীনতায় ভোগে।
মানসিক প্রভাব
- উদ্বেগ, ভয়, আতঙ্ক এগুলোর দেখা দেয়।
- মানসিক চাপে আক্রান্ত ব্যক্তি ডিপ্রেশনে ভোগে।
- মানসিক চাপ জ্ঞান এবং স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে।
- মানুষিক চাপের কারণে রাগ, অধৈর্য্যতা এবং অন্যান্য মেজাজ পরিবর্তন হতে পারে।
মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায়
মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আমরা জানবো। কিন্তু তার আগে মানসিক চাপের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে যেগুলো জেনে নেওয়া আমাদের জন্য খুবই জরুরী। কারণ লক্ষণ না জানলে আমরা মানসিক চাপ কমানোর উপায় জেনে তা যথাযথ সময়ে প্রয়োগ করতে পারবো না। চলুন জেনে নেই সাধারণ লক্ষণগুলো।
- অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, একটু কাজ করলেই মনে হয় অনেক পরিশ্রম করেছেন, সারাক্ষণ আপনি একটা ঘোরের মধ্যে থাকবেন।
- সব সময় আপনার মধ্যে একটি বিরক্তি ভাব কাজ করবে। সারা দিনে যে কাজই করুন, বা যার সঙ্গে কথা বলুন না কেন সবটাই অসহ্য মনে হবে।
- মাঝে মাঝেই ক্ষুধা পাবে। ভর পেট খাওয়ার পরেও আপনার মনে হতে পারে আপনি কিছুই খাননি।
- মানুষিক চাপের কারণে মাথাব্যথাও হতে পারে।
- কারণে অকারণে বুক ধরফর করা মানসিক চাপের লক্ষণ।
এই লক্ষণগুলো যদি কারো মধ্যে দেখা দেয় তাহলে ধরে নিতে হবে সে মানুষিক চাপে ভুগছে। তার জন্য আমরা মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে এখন জানব। যেগুলো মানসিক চাপ কমাতে আপনার কাজে আসতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ যেই হরমোনের কারণে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়, ব্যায়াম সেই হরমোনের নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করে। এন্ডো ফরফিন হরমোন যা সুখী হরমোন নামে পরিচিত। এর মাত্রা বাড়ায়। তাই আপনি যত ব্যস্তই থাকুন না কেন একটু সময় বের করে অবশ্যই ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন। আপনি যদি জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে না পারেন তাহলে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন। এটিও আপনার মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করবে।
সুষম খাবার খানঃ আপনি যদি মানসিক চাপ অনুভব করেন তাহলে আপনার খাবারে অনিহা দেখা দিতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে না খেয়ে থাকলে আপনার সমস্যাগুলো কমে যাবে না। বরং খাবার আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে এবং এটি মানসিক চাপ দূর করার পদ্ধতি। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। পাশাপাশি গ্রিন টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেলে সবথেকে বেশি ভালো।
ডায়েরী লিখুনঃ আপনার হয়তোবা কখনো ডায়েরি লেখার অভ্যাস নেই। কিন্তু তারপরেও আপনি যখন মানুষিক চাপ অনুভব করবেন তখন নোট প্যাড বা ডায়েরিতে কিছু লিখুন। যে বিষয়টা নিয়ে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন, আপনার মানসিক চাপের কারণ হচ্ছে সেটা ডায়েরিতে লিখে ফেলুন। পাশাপাশি আপনি কি চান অথবা কি করলে আপনার ভালো লাগবে সে বিষয়টিও লিখে ফেলুন।
নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে চলুনঃ খারাপ চিন্তা গুলো থেকে আমরা সব সময় দূরে থাকতে পারিনা বা এড়িয়ে যেতে পারি না। তারপরও চেষ্টা করতে হবে ইতিবাচক চিন্তা করার জন্য। যা চাইছেন আপনি ইতিবাচক ভাবেই তা পাবেন। এটা আপনাকে মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করবে।
নিজের সাথে কথা বলুনঃ সবশেষে আপনি নিজের সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন। খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন কোন বিষয়গুলো আপনার মানসিক চাপের কারণ। কি করলে আপনার চাপ কম তো, বর্তমানে কি অবস্থায় আছেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি কি করতে পারেন, এগুলো নিজেই ভেবে বের করুন।
এই পাঁচটি মানসিক চাপ কমানোর কার্যকরী উপায়গুলো ছাড়াও আরো কিছু উপায় আপনি অবলম্বন করতে পারেন। যেমন- অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে, কাছের বন্ধুর সঙ্গে কথা বললে, পছন্দের কাজগুলো করলে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমালে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যেতে পারে।
আশা করছি, মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আপনি ভাল ধারণা পেয়েছেন। আপনি যদি মানসিক চাপে থাকেন তাহলে এই উপায়গুলো অবলম্বন করে দেখতে পারেন।
মানসিক চাপ কমানোর উপায়
উপরে আমরা মানসিক চাপের কারণ এবং মানসিক চাপের লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেখান থেকে আমরা মানসিক চাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। এখন এরকম লক্ষণ যদি কারো মধ্যে প্রকাশ পায় সে ক্ষেত্রে আমরা ধরে নিতে পারি যে তিনি মানসিক চাপে রয়েছেন। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানব। যাতে করে আমরা এই পদক্ষেপগুলো নিয়ে মানসিক চাপ কমাতে পারি। আসুন জেনে নেয়া যাক মানসিক চাপ কমানোর কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে।
আপনার পছন্দের কাজ গুলো করুনঃ আমাদের সবার কিছু পছন্দের কাজ থাকে যেগুলো করলে আমাদের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করে। তা হতে পারে সেটা গান শোনা, বই পড়া, খেলাধুলা করা, ঘুরতে যাওয়া, মুভি দেখা। আপনি যখন এই কাজগুলোর মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার একটা ভালো লাগা কাজ করবে। তাই আপনি যখনই মানসিক চাপ অনুভব করবেন তখন নিজেকে একটু ব্রেক দিন এবং পছন্দের কাজগুলো করুন।
চুইংগাম চিবোতে পারেনঃ আপনি যখন কাজের মধ্যে অন্যমনস্ক হয়ে যাবেন মাথায় বিভিন্ন রকম দুশ্চিন্তা ভর করবে তখন চুইংগাম চিবানোর অভ্যাস করুন। চুইংগাম চিবানোর সময় আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। ফলে কাজে মনোযোগ দেওয়া যায়।
যোগ ব্যায়াম করুনঃ যোগ ব্যায়াম হচ্ছে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষার জন্য খুবই প্রাচীন এবং সর্বস্বীকৃত একটি উপায়। কয়েক ধরনের যোগ ব্যায়াম আছে এগুলো আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে।
ভ্রমণ করুনঃ ভ্রমণ করা মানসিক চাপ কমানোর একটি ভীষণ কার্যকরী উপায়। আমরা যখন প্রকৃতির কাছাকাছি থাকি তখন আমাদের মন সতেজ থাকে এবং নতুন নতুন মানুষ, বিষয় এগুলোর সাথে পরিচিত হলে আমরা দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকি। তাই আপনি যদি মানসিক চাপ কমাতে চান তাহলে সারাদিনের কর্মব্যস্ততা সাংসারিক কাজের ঝামেলার মাঝেও ঘুরতে বের হন।
প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলুনঃ মানসিক চাপ কমানোর উপায় হিসেবে আপনি প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটাতে পারেন। কারণ, বন্ধুত্ব এবং পারিবারিক বন্ধন মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বিশ্বস্ত বন্ধুর কাছে যদি সমস্যার কথা খুলে বলা যায় তাহলে ধীরে ধীরে মাথা থেকে চাপ কমে। নিজেকে হালকা লাগে। তাই আপনার প্রিয় মানুষদের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরুন এবং তাদের সাথে থাকুন।
ডিভাইস থেকে দূরে থাকুনঃ মানসিক চাপের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধুনিক যুগে ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদ এবং ভয়াবহ অ্যালগরিদম এর কারণে প্রচুর সময় নষ্ট করি। ক্রিস্টিন বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার আপডেট জানার জন্য আমরা বারবার ফোন চেক করি। এর ফলে মানসিক চাপ বাড়ে। তাই প্রয়োজনের বাইরে ডিজিটাল ডিভাইস এভোয়েড করুন এবং নিজেকে নিজে সময় দিন।
পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটানঃ বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে প্রাণীদের সাথে সময় কাটালে করটিসল নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। যদি আপনার নিজস্ব পোষা পানি হয় তাহলে খুব ভালো, যদি না থাকে তবে আশেপাশে প্রাণীদের সাথে সময় কাটান। তাদের খাওয়ানোর মাধ্যমে মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে।
কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিনঃ অতিরিক্ত কাজের চাপে যখন মানসিক চাপ অনুভব করবেন তখন কিছু সময়ের জন্য সকল কিছু থেকে বিরতি নেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি হাঁটাহাঁটি করতে পারেন, আপনি যদি খুব বেশি চাপ অনুভব করেন তাহলে প্রকৃতির কাছে যান। দ্রুত হাটা কিংবা বাইরে যাওয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করলে দ্রুত মানসিক চাপ কমে।
ধর্মীয় কাজ করুনঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা নির্দ্বিধায় নিজেদের মনের সকল কথা বলতে পারি। ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরা প্রার্থনার মাধ্যমে নিজেদের সমস্যার কথা সৃষ্টিকর্তাকে জানানোর মাধ্যমে নিজের ভিতরে প্রশান্তি নিয়ে আসতে পারি। নিয়মিত নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা এবং তকদিরের উপর বিশ্বাস রাখা মুমিন কে অবশ্যই আল্লাহ সকল মানসিক শান্তি প্রদান করবেন।
বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চাপ কমানোর উপায়
Stress of Teen বা বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চাপ। এই চাপ পারিবারিক বা সামাজিকভাবেও তৈরি হতে পারে। এ সময় মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলের অবগত থাকা উচিত। কেননা বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের কারণে দোটানা পরিস্থিতিতে ভুগে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমানোর জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করা যায়। চলুন জেনে নেই উপায় গুলো কি।
- পরিবারের সবাইকে তার সাথে সহজ হতে হবে। পরিবারের সাথে খোলামেলা আলোচনা করে যেন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করা হয়।
- এই সময় প্রচুর আবেগ কাজ করে। তাই অভিভাবকদের যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।
- কোন অসৎ সঙ্গে যেন জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- পড়াশোনার চাপ অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে কিনা সেদিকে বাবা-মাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- শারীরিক পরিবর্তন এবং আগ্রহের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আশা করছি, উপরোক্ত আলোচনা থেকে মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা আপনারা পেয়েছেন। মানসিক চাপ এমন একটি রোগ যা ছোট বড় সকলেরই হতে পারে। তাই কোন ব্যক্তির মানসিক চাপকেই অবজ্ঞা করা ঠিক নয়।
মানসিক চাপ কমানোর খাবার
আমরা কখনো কখনো মানসিক চাপ এড়িয়ে যেতে পারি না। কিন্তু কিছু কিছু পুষ্টি, স্ট্রেস, হরমোন, কর্টিসল কমিয়ে দিতে পারে। প্রোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম এবং সেলোনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে মানসিক চাপ কমে। মানসিক চাপ কমানোর খাবার গুলোর নাম নিম্নে তুলে ধরা হলো।
- তৈলাক্ত মাছ
- ওটমিল
- ঢেঁড়স
- ডার্ক চকলেট
- আলু
- পালং শাক
- গ্রিন টি
- কমলা
- গাজর
মানুষ জানতে চাই এমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ অতিরিক্ত টেনশন হলে কি করব?
উত্তরঃ আপনি যদি অতিরিক্ত টেনশনে থাকেন তাহলে নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখার জন্য চোখ বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্য একান্তে কোন কিছু না ভেবে বসে থাকুন এবং দীর্ঘভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এতে করে আপনি টেনশন থেকে অনেকটাই দূরে থাকবেন।
প্রশ্নঃ কি খেলে মানসিক চাপ কমে?
উত্তরঃ ডার্ক চকলেট, টক দই, বাদাম এগুলো খেলে আপনি সাময়িকভাবে মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন।
প্রশ্নঃ মানসিক চাপ থেকে কিভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায়?
উত্তরঃ মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ঘুম। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমান তাহলে মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। সে জন্য আপনাকে কমপক্ষে নয় থেকে বারো ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
প্রশ্নঃ মানসিক চাপের কারণে কোন রোগ হয়?
উত্তরঃ মানসিক চাপের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্থূলতা এবং সিনড্রোম টু, ডায়াবেটিস, অ্যাথ্রাইটিসের মতো আরও বিভিন্ন রকম রোগ হতে পারে।
প্রশ্নঃ ডিপ্রেশনের প্রধান লক্ষণ কি কি?
উত্তরঃ ডিপ্রেশনের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি, অস্থিরতা, অসুবিধা এবং ঘুমের নিয়ম পরিবর্তন, কথার পরিবর্তন ও যন্ত্রণা বা ব্যথা যার কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় সহ মানসিক চাপ কমানোর আরো কিছু উপায়, মানসিক চাপের লক্ষণ, মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব, মানসিক চাপ কমানোর খাবার এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এতক্ষণে সবগুলো বিষয় সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন।
আপনি যদি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের মধ্যে উল্লেখিত মানসিক চাপ কমানোর উপায় গুলো প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। আশা করছি ভাল ফলাফল পাবেন। এতক্ষন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে তথ্যবহুল পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
শেজা ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url